শিশুকে ভবিষ্যতে সুখী আর সফল দেখতে চান? তার হাতে একটা ঝাড়ু ধরিয়ে দিন!
প্রত্যেক মা–বাবার জীবনের একটাই চাওয়া, তাঁর সন্তান যেন ভালো থাকে। সুখী আর সফল হয়। এ জন্য অভিভাবক হিসেবে কী করবেন ভাবছেন? সহজ সমাধান হলো, আপনার শিশুর হাতে একটা ঝাড়ু ধরিয়ে দিন!
হ্যাঁ, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা বড় হয়ে সফল আর সুখী ব্যক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন, তাঁদের ৮৫ শতাংশেরও বেশি ছোটবেলা থেকে ঘরের কাজ করতেন।
দুবাইয়ের দানাত আল ইমারাত হাসপাতালের শিশুবিশেষজ্ঞ ও সাইকোলজিস্ট ডা. হাবিব আবদুল্লাহ জানান, ছোটবেলা থেকে শিশুদের ঘরের কাজে যুক্ত করার গভীর, দীর্ঘমেয়াদি, ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। হাবিব আবদুল্লাহ বলেন, ‘শিশুরা ছোটবেলা থেকেই ঘরের টুকিটাকি কাজ করলে পরে হতাশা বা ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে আবার নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে শেখে। নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া, নিজেকে জানা বা আত্মানুসন্ধানের প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যায়। শিশু তখন নতুন কিছু শেখা, দক্ষতা অর্জন বা একটা কাজ সফলভাবে শেষ করার আনন্দ থেকে কখনোই নিজেকে আর বঞ্চিত করতে চায় না। জীবনে সফল আর সুখী হওয়ার জন্য এই তিনটি মৌলিক বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
দুবাইয়ের হেরিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের প্রধান মার্সেডিজ শিন জানান, যেসব শিশু ছোটবেলায় বিশেষ করে ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখা ও রান্নাবান্নার মতো কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল, স্কুলে তারা সৃজনশীল কাজে পারদর্শিতা দেখিয়েছে। দেখা গেছে, ওই শিশুরা সমস্যা সমাধানেও অন্যদের তুলনায় বেশি দক্ষ।
এই অধ্যাপক আরও জানান, যে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই ঘরের কাজ করে, তারা বড় হয়ে ব্যর্থতা বা হতাশার মতো মানসিক অবস্থা সহজেই মোকাবিলা করতে পারে। যেসব কাজে সফলতা দেরিতে আসে, ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়, সেখানেও তারা অন্যদের তুলনায় অধিক সফল। যেকোনো পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া, সময়ের কাজ সময়ে করা, কথা দিয়ে কথা রাখা, ডেডলাইনের ভেতর কাজ শেষ করা, পেশাজীবন ও ব্যক্তিজীবনে ভারসাম্য রাখা সহজ হয়। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দক্ষতা আর লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট তারা। এভাবেই জীবনে সফল আর সুখী হওয়ার ক্ষেত্রেও অন্যদের তুলনায় এগিয়ে।
আপনি যদি একটা শিশুর অভিভাবক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে জানতে হবে, কোন বয়সের শিশুকে কোন কাজ দেবেন। সেই কাজের নিয়মও শিশুকে শিখিয়ে দেবেন। কাজটা ভালোভাবে শেষ করলে প্রশংসা করুন, উৎসাহ দিন। ছোট ছোট পুরস্কারও দিতে পারেন।
সূত্র: গলফ নিউজ