বিনা নোটিশে চাকরি চলে গেছে, এখন কী করব

অনিশ্চয়তাই জীবনের একমাত্র ধ্রুবক। নানা কারণে হুট করে চলে যেতে পারে চাকরি। অফিসের নীতিগত পরিবর্তন, মহামারি, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনসহ নানা কারণে যে কেউ হুট করে চাকরি হারাতে পারেন। ফলে বিনা নোটিশে বন্ধ হয়ে যেতে পারে একমাত্র আয়ের পথ। এমন অবস্থায় কী করতে পারেন? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

দুঃসময়ে নিজের অনুভূতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুনছবি: প্রথম আলো

১. শান্ত থাকুন

যেকোনো পরিস্থিতি সুন্দরভাবে মোকাবিলা করার প্রথম শর্ত হলো শান্ত থাকা। আপনি যদি রেগে গিয়ে, হতাশ হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আপনারই ক্ষতি। এতে আপনি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাবেন। পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে তখন ঘরে–বাইরে সবখানেই শান্তি নষ্ট হবে। তাই নিজের অনুভূতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন। কঠিন সময়ের চ্যালেঞ্জ সুন্দরভাবে মোকাবিলা করার জন্য শান্ত থাকুন। বিশ্বাস করুন, এই সময়টা পার হয়ে যাবে। সুদিন আসবেই।

২. পরিবারের কাছে খুলে বলুন

যেকোনো পরিস্থিতিতে পরিবারই পাশে থাকে, মনোবল বাড়ায়। পরিবারের কাছে সব খুলে বলুন। তাতে আপনি হালকা বোধ করবেন। পরিবারের সমর্থনে, আপনজনকে সঙ্গে নিয়ে আগান, যাত্রা সহজ হবে।

৩. যোগাযোগ ঝালিয়ে নিন, সাহায্য চান

আমাদের সবারই কমবেশি পরিচিত এমন মানুষ আছেন, যাঁরা ভালো পরামর্শ দিয়ে বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে অথবা নানাভাবে সাহায্য করার সামর্থ্য রাখেন। এ ধরনের মানুষের তালিকা করুন। কার কাছে কী সাহায্য চাইবেন, ঠিক করে নিন। হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো ভুল পথে বা ফাঁদে পা দেবেন না। মনে রাখবেন, মানুষ মানুষের জন্য। কঠিন সময়ে মানুষ পাশে থাকবে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে, এটিই মনুষ্যত্ব। তাই অন্যের কাছে সাহায্য চাইতে দ্বিধা করবেন না।

আরও পড়ুন

৪. ব্যয় কমান

আয় না থাকলে ব্যয় যথাসম্ভব কমাতে হবে। কোনটি আবশ্যকীয় খাত, কোনটি ‘হলে ভালো, না হলেও চলে’ আর কোনগুলো বিলাসিতা, সেটি নির্ধারণ করুন। এরপর একে একে খরচের খাত ‘কাট’ করুন।

৫. কোথায় কী পরিমাণ অর্থ আছে, হিসাব করুন

এ সময় নিজের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স চেক করুন। আর এমন কী সম্পদ আছে, যেসব আপনি (বিক্রি করে) টাকায় রূপান্তরিত করতে পারেন? অপ্রয়োজনীয় জমি বা শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারেন। সঞ্চয় ভাঙতে কার্পণ্য করবেন না। মনে রাখবেন, এ রকম অবস্থার জন্যই অর্থ সঞ্চয় করা হয়েছিল। নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিন। এককথায় আপনার ইকোনমিক স্ট্যাটাস রিভিউ করুন।

৬. নতুন চাকরির খোঁজে থাকুন

সিভি আপডেট করুন। লিঙ্কডইনে সিভি আপলোড করে রাখুন। চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে চোখ রাখুন। আপনি যে ধরনের কাজ করতে ইচ্ছুক, সে রকম প্রতিষ্ঠানে সিভি জমা দিয়ে রাখুন। পরিচিতজনদের বলে রাখুন। নিজের নেটওয়ার্ক কাজে লাগান।

আরও পড়ুন

৭. অস্থায়ী কাজ খুঁজুন

একটা স্থায়ী চাকরি হওয়ার আগপর্যন্ত অস্থায়ী যেকোনো কাজে যুক্ত হতে পারেন। অনেক সময় অস্থায়ীভাবে কাজ করতে গিয়েও স্থায়ী চাকরি হয়ে যেতে পারে।

৮. ব্যবসা করুন

চাকরিই যে করতে হবে, এমন কোনো কথা আছে? বসে না থেকে ব্যবসাও শুরু করতে পারেন। চাকরি খুইয়েই অনেকে বনে গেছেন সফল উদ্যোক্তা!

৯. নিজের দক্ষতা অর্জনে গুরুত্ব দিন

এ সময়টা বসে না থেকে নতুন কিছু শিখুন। সেটা হতে পারে ড্রাইভিং, বেকিং বা নতুন কোনো কোর্স। এমন কিছু শিখুন, যা থেকে পরবর্তী সময়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

আরও পড়ুন

১০. নিজের ওপর আস্থা রাখুন

আপনার চাকরি করার যোগ্যতা আছে বলেই চাকরিতে ঢুকেছিলেন। ইতিবাচক থাকুন। নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখুন। যোগ্যতা, ইচ্ছাশক্তির সঙ্গে চাকরির খোঁজে থাকলে ঠিকই আপনি চাকরি পাবেন। সেটা হতে পারে হারানো চাকরি থেকে আরও ভালো কিছু।

সূত্র: ইনডিড

আরও পড়ুন