৪০, ৭০ নাকি ৯০—আদর্শ সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা কোনটি

কর্মীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য আদর্শ কর্মঘণ্টা থাকা দরকারছবি: পেক্সেলস

আদর্শ কর্মঘণ্টা নিয়ে বিতর্ক বহু বছরের। তাই দেশে দেশে কর্মঘণ্টাতেও আছে তারতম্য। সাধারণত অধিকাংশ দেশে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা ৪০। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য এই সময়কেই আদর্শ হিসেবে ধরা হয়। তবে কিছু দেশে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা বেড়ে ৭০, এমনকি ৯০ ঘণ্টাও ছাড়িয়েছে।

বর্তমান দুনিয়ায় শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক সম্প্রতি এক্সে জানান, ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে চালু হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব গবর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির কর্মীরা দিনে ১৭ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৭ দিন কাজ করেন। এতে তাঁদের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা দাঁড়ায় ১১৯–এ! অস্বাভাবিক এই কর্মঘণ্টা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আদৌ কি এই দীর্ঘ কর্মঘণ্টা উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে, নাকি কর্মীকে ঠেলে দিচ্ছে ঝুঁকির মুখে?

এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে চোখ বুলিয়ে নিই, সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টায় শীর্ষে কোন দেশগুলো। ২০২৪ সালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদন অনুযায়ী কর্মঘণ্টায় শীর্ষ পাঁচ দেশ—

বিশ্বের বেশ কিছু ধনী দেশে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা কম
ছবি: আইএলও

ভুটান: মাত্র সাত লাখ জনসংখ্যার দেশ ভুটানের মানুষের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। তাঁরা সপ্তাহে প্রায় ৫৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট কাজ করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত: তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ দেশের কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫০ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট কাজ করেন।

লেসোথো: কর্মঘণ্টার তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে আফ্রিকার দেশ লেসোথো। দেশটির মানুষ প্রতি সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টা ২৪ মিনিট কাজ করেন।

কঙ্গো: মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট কাজ করেন।

কাতার: তালিকার পঞ্চম স্থানে আছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। দেশটির কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৪৮ ঘণ্টা কাজ করেন।

আইএলওর রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের একজন কর্মী প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৪৬ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট কাজ করেন। অন্যদিকে বিশ্বের বেশ কিছু ধনী দেশে সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা কম। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীরা সপ্তাহে গড়ে কাজ করেন ৩৮ ঘণ্টা, জাপানে ৩৬ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট এবং যুক্তরাজ্যে ৩৫ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট।

প্রত্যেকেরই উচিত, কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা
ছবি: পেক্সেলস

ওয়ার্ক-লাইফ ফিট

অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা কর্মীদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত করে, সৃষ্টি করে মানসিক চাপ। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগ, স্থূলতা, অনিদ্রাসহ বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। প্রত্যেকেরই উচিত, কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা।

আজকাল ‘ওয়ার্ক-লাইফ ফিট’-এর ধারণাটি বেশ আলোচনায় আছে। এ ধারণা বলে, জীবন পরিবর্তনশীল এবং জীবনের অগ্রাধিকার সময়ের সঙ্গে বদলে যায়। এটি এমন এক উপায় খুঁজে নিতে বলে, যাতে পেশাগত দায়িত্ব ও ব্যক্তিজীবনের প্রয়োজনীয়তা সমন্বয় করা যায়। এটা মেনে চললে কর্মজীবনে যেমন সফলতা আসে, তেমনি ব্যক্তিজীবন নিয়েও থাকা যায় সন্তুষ্ট।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন