নতুন মা এই ৫ বিষয় খেয়াল রাখুন
সন্তানের জন্য একজন মা কী না করেন! নতুন মাতৃত্বে বিভোর মা অনেক সময় নিজের প্রতিও অবহেলা করে ফেলেন। আবার সন্তান পালনের বহুমুখী দিক খেয়াল রাখতে গিয়ে ছোটখাটো কিছু বিষয় ভুলেও যান। নতুন মায়েদের এমনই কিছু বিষয় মনে করিয়ে দেওয়া যাক। মা তো বটেই, পরিবারের অন্যদেরও এসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
মায়ের সুস্থতা
শিশুকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে হলে মাকে কিন্তু নিজের সুস্থতার দিকে বাড়তি খেয়াল রাখতেই হবে। সন্তান জন্মের পর প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধই তার পুষ্টির একমাত্র উৎস। এমনকি দুই বছর বয়স হওয়া অবধি মায়ের দুধের প্রয়োজনীয়তা পুরোপুরি ফোরায় না। এ সময় মায়ের চাই পুষ্টিকর খাবার। পর্যাপ্ত পানিও খেতে হবে। শিশুকে দুধ খাওয়ানোর সময় নিজের দেহভঙ্গি ঠিক রেখে শিশুকে সঠিকভাবে ধরে রাখাটা জরুরি। ভুল দেহভঙ্গির কারণে মায়ের ঘাড়ব্যথার মতো সমস্যা হওয়া বিচিত্র নয়। নিজেকেও খানিকটা সময় দিন রোজ।
শিশুর ঘুম
ঘুমের সময় শিশু যাতে নিরাপদে ও আরামে থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখুন। শিশুর বিছানায় এমন কোনো কিছু রাখবেন না, যাতে তার নাক-মুখ ঢেকে যেতে পারে। বিছানার চারপাশ সাবধানে ঘিরে রাখুন, যাতে শিশু পড়ে না যায়। শিশুর জন্য আলাদা বিছানার ব্যবস্থা করা ভালো। শিশু যদি বড়দের সঙ্গে ঘুমায়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক থাকুন, ঘুমের ঘোরেও যাতে বড়দের শরীরের কোনো অংশের নিচে শিশুর নাক-মুখ চাপা পড়ে না যায়।
ঘর হোক শিশুর জন্য নিরাপদ
ধীরে ধীরে শিশু হামাগুড়ি দেবে; এক পা, দুই পা করে হাঁটতেও শিখবে। এ সময় নানান রকম দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। বাড়ির বৈদ্যুতিকসামগ্রীগুলো শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন। শিশুর নাগালের ভেতর কোনো বৈদ্যুতিক সকেট থাকলে সেটি ঢেকে রাখুন। প্রয়োজনে সেটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও দিতে পারেন। আসবাবে তীক্ষ্ণ ধার থাকলে শিশু তাতে আঘাত পেতে পারে। এ বিষয়েও সতর্ক থাকুন। নরম কিছু দিয়ে মুড়ে দিতে পারেন আসবাবের তীক্ষ্ণ অংশ। বঁটি, চাকু বা ধারালো কোনো জিনিস কখনো ফেলে রাখতে নেই। ‘এক্ষুনিই তো আসছি, বঁটিটা এভাবেই থাক’—এমনটা ভেবেও ফেলে রাখবেন না। চোখের নিমেষেই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।
পানির বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা
বাড়ির কাছে জলাশয় থাকলে অবশ্যই বাড়তি খেয়াল রাখুন। বাড়ির বাথরুমের দরজাও বন্ধ রাখুন। বালতি, ড্রাম বা অন্য কোনো পাত্রে পানি জমা রাখতে হলে আঁটসাঁট ঢাকনা দিয়ে তা বন্ধ করে রাখুন। ঘরের মেঝে পিচ্ছিল হতে দেবেন না।
বুকের দুধ সংরক্ষণ
কর্মজীবী মায়েরা বাড়িতে সন্তানের জন্য বুকের দুধ রেখে থাকেন। গরুর দুধ বা ফর্মুলা দুধ খাওয়ানোর চেয়ে এটিই সবদিক থেকে ভালো ব্যবস্থা। কীভাবে বুকের দুধ সংরক্ষণ করতে হবে, কতক্ষণ পর্যন্ত তা ভালো থাকবে, ফ্রিজে রাখা হলে কীভাবে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনতে হবে, সেসব বিষয় ভালোভাবে জেনে নেওয়া আবশ্যক। মনে রাখবেন, মায়ের বুকের দুধ কখনো চুলা বা ওভেনে গরম করতে নেই। আপনার অনুপস্থিতিতে যিনি শিশুর দেখভাল করবেন, তাঁকেও প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন বুঝিয়ে দিন।
সূত্র: ফেমিনা