টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’–এ স্থান পেল আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ

১৩ মার্চ প্রকাশিত হলো টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’–এর ১০০ স্থাপনার তালিকা। সেখানে প্রথমবারের মতো স্থান পেল কোনো বাংলাদেশি স্থাপনা, আর সেটি স্থপতি সায়কা ইকবালের নকশা করা, সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ার দরগার পাড় এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা জেবুন নেসা মসজিদ।

টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’–এ স্থান পাওয়া আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
ছবি: আসিফ সালমান

স্থপতি সায়কা ইকবাল মেঘনা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং স্টুডিও মরফোজেনেসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। তাঁর মেয়ে শ্যামার বয়স এখন ৭ বছর। ফলে সংসার, সন্তান, শিক্ষকতা, স্থাপত্য পেশা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত তিনি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে টাইম ম্যাগাজিন ই–মেইলে যোগাযোগ করে সায়কার সঙ্গে। তবে এত ব্যস্ততায় অচেনা ঠিকানার ই–মেইলটা সায়কার চোখ এড়িয়ে যায়।

কিছুদিন অপেক্ষার পর ই–মেইলে সাড়া না পেয়ে সায়কার সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে যোগাযোগ করে টাইম ম্যাগাজিন। এবারের বার্তাটা সায়কার চোখে পড়ে। তবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে সারাহ খান নামের এক নারী যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন। সারাহ মেসেজে জানিয়েছেন, তিনি টাইম ম্যাগাজিনের হয়ে ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’ নিয়ে লিখছেন এবং তিনি সায়কার নকশা করা ‘জেবুন নেসা মসজিদ’ নিয়ে লিখতে চান।

চিন্তায় পড়ে যান সায়কা। ই–মেইলটা স্প্যাম কি না বা কোনো ফাঁদে পড়বেন কি না, ভালোভাবে বোঝার জন্য সায়কা খোঁজ নিতে শুরু করেন। ঘেঁটেঘুঁটে দেখেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক সারাহ খান মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস, ভ্রমণবিষয়ক সাময়িকী সিএন ট্রাভেলার ও টাইম ম্যাগাজিনে ভ্রমণ নিয়ে লেখেন। আর ২০১৮ সাল থেকে টাইম ম্যাগাজিন প্রতিবছর বিশ্বের ১০০টি স্থাপনাকে ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস’ হিসেবে ঘোষণা করছে। তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো স্থাপনা ঠাঁই পায়নি এই সম্মানজনক তালিকায়।

প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি স্থাপনা স্থান পেল টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস’–এ
ছবি: আসিফ সালমান

এসব জেনেও শঙ্কা পুরোপুরি দূর হয় না সায়কার। তারপরও দ্বিধা নিয়ে সারাহ খানকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেন। তথ্যগুলো যাচাই–বাছাই করে টাইম ম্যাগাজিন। সায়কা ইকবালের সাক্ষাৎকারও নেয়। আর জানায়, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি গোপন রাখতে হবে। কেননা শেষ মুহূর্তেও তালিকা বদলে যেতে পারে। অবশেষে ১৩ মার্চ প্রকাশিত হলো টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’–এর ১০০ স্থাপনার তালিকা। সেখানে প্রথমবারের মতো স্থান পেল কোনো বাংলাদেশি স্থাপনা, আর সেটি সায়কা ইকবালের নকশা করা, সাভারের আশুলিয়ার জামগড়ার দরগার পাড় এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা জেবুন নেসা মসজিদ।

টাইম ম্যাগাজিনের ‘দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫’ সংখ্যাটি বাজারে এসেছে ১৩ মার্চ
ছবি: ক্রিস রেইনিয়ার, টাইম ম্যাগাজিন
জেবুন নেসা মসজিদের স্থপতি সায়কা ইকবাল
ছবি: সায়িকা বিনতে আলম

সায়কা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মসজিদটি গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য বানানো। তাই এই স্থাপনা টাইম ম্যাগাজিনের “দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট প্লেসেস অব ২০২৫” তালিকায় স্থান করে নেওয়ার গৌরব আমাদের সবার।’

আরও পড়ুন

মসজিদটি আলাদা কেন

ব্যস্ত রাজধানীর ভিড় আর যানজট ঠেলে আশুলিয়ার জামগড়ার দরগার পাড় এলাকায় গড়ে তোলা জেবুন নেসা মসজিদটি দেখলে মনে হয়, অন্য কোথাও চলে আসিনি তো? আশপাশের কোনো স্থাপনার সঙ্গেই যে এর মিল নেই!

আশপাশের কোনো স্থাপনার সঙ্গেই জেবুন নেসা মসজিদের মিল নেই
ছবি: আসিফ সালমান

স্থাপত্যের উদ্ভাবন ও আধ্যাত্মিক প্রশান্তির মেলবন্ধনের কথা মাথায় রেখে মসজিদটির নকশা করেছেন সায়কা। ফলে এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। বাংলাদেশের গ্রামীণ উঠান, বাঁশঝাড়, পারস্যের বাড়ির বাগান, লুই আই কানের সংসদ ভবনের প্রেয়ার হল, ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়া মসজিদ—এসবই ছিল সায়কার অনুপ্রেরণা।

প্রাকৃতিকভাবে আলো-বাতাস চলাচলের জন্য মসজিদের কংক্রিটের দেয়ালে ছোট ছোট আয়তাকার শূন্যস্থান বা ফুটো রেখেছেন সায়কা
ছবি: আসিফ সালমান

এসি তো দূরের কথা, একটা ফ্যানও নেই এই মসজিদে। সায়কা এমনভাবে নকশা করেছেন যে প্রাকৃতিকভাবেই মসজিদের ভেতরটা থাকে ঠান্ডা। চতুর্ভুজাকৃতির মসজিদটিতে নেই কোনো চিরাচরিত স্তম্ভ। মাঝখানের গোল গম্বুজটিই মসজিদের মূল ভিত।

প্রাকৃতিকভাবে আলো-বাতাস চলাচলের জন্য মসজিদের কংক্রিটের দেয়ালে ছোট ছোট আয়তাকার শূন্যস্থান বা ফুটো রেখেছেন সায়কা। মূল স্থাপনার চারপাশের চারটা কোণকে বলা যায় ‘লাইট কোর্ট’। অনেকটা বাংলাদেশের সংসদ ভবনের প্রেয়ার হলের মতো। সেদিক দিয়েও আছে আলো-বাতাসের অবাধ যাতায়াত।

মসজিদের পশ্চিমে লেক
ছবি: আসিফ সালমান

মসজিদের পশ্চিমে লেক। এই জলাশয়ের কারণেই বাতাস প্রাকৃতিকভাবে শীতল হয়ে মসজিদের দেয়ালের আয়তাকার শূন্যস্থান বা ফুটো দিয়ে প্রবেশ করে মসজিদের ভেতরে। সীমানাজুড়ে কাচের পাঁচিল। ফলে প্রাকৃতিক আলো বাধা পায় না। আর এই কাচের পাঁচিলের নকশাও এমন, যাতে ভেতরে বাতাস প্রবেশ করতে পারে অনায়াসে।

মসজিদ তৈরির সব উপকরণ ছিল দেশীয়, কারিগরেরাও এ দেশের
ছবি: আসিফ সালমান

মসজিদটির এক পাশে ছাতিমগাছ, অন্য পাশে বাঁশঝাড়। আছে আরও নানান প্রজাতির গাছ। গাছের শীতল ছায়া নিমেষে মুছে দেয় ক্লান্তি। পানি, গাছ, পাখির ডাক, বুনো ফুল, লতাপাতা, আলো–বাতাসের সম্মিলনে মসজিদটির আবহ এমন, যাতে শিল্প এলাকার যান্ত্রিক ও কলুষিত পরিবেশে নেমে এসেছে প্রশান্তি। মসজিদ তৈরির সব উপকরণ ছিল দেশীয়, কারিগরেরাও এ দেশের।

কেবল নামাজের জন্যই নয়, দর্শনার্থীরা নামাজের সময়ের বাইরেও শান্তির খোঁজে যেকোনো সময় আসতে পারেন এখানে
ছবি: আসিফ সালমান

মসজিদটি মূলত আইডিএস গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানার প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কর্মীর নামাজের জন্য বানানো। তবে অন্যরাও সেখানে নামাজ পড়তে পারেন। কেবল নামাজের জন্যই নয়, দর্শনার্থীরা নামাজের সময়ের বাইরেও শান্তির খোঁজে যেকোনো সময় আসতে পারেন এখানে। কিছুদিন আগে কজন মার্কিন স্থপতির একটি দল এই মসজিদ দেখার জন্যই এসেছিলেন বাংলাদেশে।

আরও পড়ুন

যাঁর নামে মসজিদটি

আইডিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর প্রয়াত মা জেবুন নেসার নামে বানিয়েছেন এই মসজিদ। মসজিদটির নকশা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সায়কা ফিরে গেলেন তাঁর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দিনগুলোতে, ‘স্নাতকে আমাদের একটা প্রজেক্টের কাজে একবার মসজিদ দেখতে গেলাম। আমাদের গ্রুপে আমিই একমাত্র নারী। আমার বন্ধুরা সব ভেতরে ঢুকে এদিক–সেদিক দেখতে লাগল। এদিকে আমি বাইরে থেকে উঁকি দিচ্ছি। আমার প্রবেশের জন্য অনুমতি আনতে গেল বাকিরা। অনুমতি দেওয়া যাবে কি যাবে না, তা নিয়ে কথাবার্তা চলতে লাগল। তখনই ভেবেছিলাম, কখনো যদি মসজিদের নকশা করি, সেখানে নারী–পুরুষ সবার প্রবেশাধিকার, প্রার্থনার অধিকার থাকবে।’

জেবুন নেসা মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য আছে আলাদা স্থান
ছবি: আসিফ সালমান

সায়কার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। জেবুন নেসা মসজিদে নারী-পুরুষ উভয়েরই প্রবেশাধিকার আছে। নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য আছে আলাদা স্থান। সায়কা বলছিলেন, ‘মসজিদটিতে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই যাতে প্রার্থনা ও সামাজিকতার স্থান হয়ে ওঠে, সে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি।’

টাইম ম্যাগাজিন মসজিদটি সম্পর্কে যা লিখেছে

বাংলাদেশের স্থপতিরা দীর্ঘদিন ধরে আধুনিক শৈলীর মসজিদ নকশা করে আসছেন, তবে ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত এই গোলাপি রঙের স্থাপনাটি শিল্পাঞ্চলে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

মসজিদের সামনে লেক
ছবি: আসিফ সালমান

এলাকাটির একাধিক তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের একজন তাঁর প্রয়াত মায়ের নামে জেবুন নেসা মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন, যা তাঁর কারখানার সাড়ে ছয় হাজার পোশাকশ্রমিকের জন্য এক শান্তির আশ্রয় হিসেবে কাজ করবে।

ওপর থেকে জেবুন নেসা মসজিদ
ছবি: আসিফ সালমান

ঢাকাভিত্তিক স্টুডিও মরফোজেনেসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সায়কা ইকবাল মেঘনা বলেন, ‘মসজিদটি একজন নারীর নামে উৎসর্গ করার ভাবনা থেকেই আমার মনে হলো, এটি এমন এক স্থান হওয়া উচিত, যা পোশাকশ্রমিকদের জন্য কোমল মনোরম আশ্রয় হিসেবে কাজ করবে।’

বাংলাদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুবিধাও আছে মসজিদটিতে
ছবি: আসিফ সালমান

মসজিদটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যাতে নারীরা সহজেই প্রবেশ করতে পারেন, একত্র হতে পারেন এবং নামাজ আদায় করতে পারেন—যা বাংলাদেশের অনেক মসজিদে সাধারণত বিরল। এর গোলাপি বহিরাবরণ দেশটির ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা ও মাটির স্থাপত্যের ছোঁয়া বহন করে এবং এর বাঁকানো দেয়ালের ছোট ছোট ফুটো মসজিদের ঐতিহ্যবাহী জাফরিকাটা নকশার কথা মনে করিয়ে দেয়, পাশাপাশি বাংলাদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুবিধাও আছে এতে।

জেবুন নেসা মসজিদের ওযুখানা
ছবি: সাত্তিম হাসান

নারীদের জন্য নির্ধারিত নামাজের স্থানে যাওয়ার সুবিধার্থে আছে এক আকর্ষণীয় ভাস্কর্যসদৃশ সিঁড়ি। এই সিঁড়ি একটা ছাতিমগাছকে ঘিরে ওপরে উঠে গেছে। ছাতিমগাছের পত্রপল্লব ছাতার মতো ছড়িয়ে আছে ওপরে। মসজিদটির স্বচ্ছ কাচের মিহরাব বানানো হয়েছে শিল্পী ওয়াকিলুর রহমানের সহযোগিতায়।

নারীদের জন্য নির্ধারিত নামাজের স্থানে যাওয়ার সুবিধার্থে আছে এক আকর্ষণীয় ভাস্কর্যসদৃশ সিঁড়ি
ছবি: আসিফ সালমান

মসজিদটির আঙিনা থেকে শুরু করে সবুজ ঘাসের মাঠ ও জলাশয়ের ধারে নামাজের স্থান প্রশান্তিময়। এখানে নামাজের সময়ের বাইরেও পোশাকশ্রমিক ও অন্য দর্শনার্থীরা ব্যস্ততার মধ্যে একটুখানি শান্তি খুঁজে নিতে পারেন। সায়কা বলেন, ‘জায়গাটি যেন সব পোশাকশ্রমিকের হয়ে ওঠে। মানুষ এটিকে নিজের মনে করলে একজন স্থপতি হিসেবে এটিই বড় প্রাপ্তি।’

মসজিদটির আঙিনা থেকে শুরু করে সবুজ ঘাসের মাঠ ও জলাশয়ের ধারে নামাজের স্থান প্রশান্তিময়
ছবি: শুভ্র শোভন চৌধুরী
আরও পড়ুন

সায়কার আরও অর্জন

২০০৮ সালে বুয়েট থেকে স্নাতক করেন সায়কা ইকবাল
ছবি: শুভ্র শোভন চৌধুরী

২০০৮ সালে বুয়েট থেকে স্নাতক করেন সায়কা। ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর করেন স্পেনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড আর্কিটেকচার অব কাতালোনিয়া থেকে। টাইম ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক এই স্বীকৃতির আগে ভারতের জেকে সিমেন্ট লিমিটেডের ৩৪তম পুরস্কার বিতরণীতে পেয়েছেন ‘আর্কিটেক্ট অব দ্য ইয়ার’ সম্মাননা। অনলাইন আর্কিটেকচার প্ল্যাটফর্ম ডিজিন থেকে ‘টপ ফাইভ সিভিক প্রজেক্টস’ ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আর্ক ডেইলির ‘টপ ফাইভ রিলিজিয়াস প্রজেক্ট’–এও নির্বাচিত হয়েছে জেবুন নেসা মসজিদ।

সন্ধ্যার আলো–আঁধারিতে মনোরম জেবুন নেসা মসজিদ
ছবি: আসিফ সালমান
আরও পড়ুন