প্রতিদিনই দাদি-নানিকে শ্রদ্ধা জানানোর দিন, তবে আজ একটু বিশেষ
দাদি আর নানি—সোনালি ছোটবেলার আবেগ মেশানো দুটো নাম। মায়ের মারমুখী শাসন কিংবা বাবার আগুনচোখের সামনে থেকে ছোঁ মেরে ছিনিয়ে নেওয়া মানুষটার নাম দাদি বা নানি। সারা দিনের দুষ্টুমি শেষে সন্ধ্যাবেলায় বাড়ি ফিরতে যখন ভয়, আঙিনার আড়াল থেকে চুপটি করে ঘরে নিয়ে যান দাদি। মায়ের বকুনিতে একটুখানি মন খারাপ বা চোখে জল আসতেই হাতে ধরে নিয়ে যান সাত রাজার ধন জমানো সিন্দুক, ট্রাঙ্ক বা আলমারির কাছে। অপার রহস্যে মোড়া সেই ভাঁড়ারের ভেতর থেকে কত কিছু যে বের হয়! জিভে জল আনা আচার, অদ্ভুত সব খেলনা। আবার আঁচলের গিঁট খুলে হাতের মুঠোয় দু–দশ টাকা গুঁজে দেন, সঙ্গে থাকে সতর্কবাণী, ‘যা দোকান থেকে কিছু কিনে খা গে। কাউকে কিছু বলিসনে যেন!’ নানাবাড়ি থেকে ফেরার সময় অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে হেঁটে আসেন নানি। গাড়ি চলতে শুরু করতেই দেখা যায় আঁচলে চোখ মুছছেন।
দাদাবাড়ি বা নানাবাড়ির আরেকটি মোহন মুহূর্ত রাতে ঘুমানোর সময়টা। ভাইবোনদের মধ্যে চলে খুনসুটি, প্রতিযোগিতা—কে জড়িয়ে ধরবে দাদি বা নানিকে। তারপর সবাই মিলে গাদাগাদি করে তেরো নদী সাত সমুদ্দুর, রাক্ষস-খোক্কস, রাজা–রানির গল্প শোনা। এভাবে আমাদের শৈশব-কৈশোরজুড়েই থাকেন দাদি–নানিরা।
তারপর আমরা একসময় বড় হয়ে যাই। নিজেদের হারিয়ে ফেলি, সেই সঙ্গে হারিয়ে ফেলি দাদি-নানির শরীরের গন্ধ, চুলের ঘ্রাণ, কোলের ওম।
আজ ২১ জানুয়ারি, দাদি-নানি দিবস—গ্র্যান্ডমা’স ডে। পোল্যান্ডের একটি ম্যাগাজিনের উদ্যোগে ১৯৬৪ সালে দিবসটির উদ্যাপন শুরু হয়। এরপর এটি অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, এস্তোনিয়া, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এসব দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গেই দিনটি পালিত হয়।
দাদি বা নানির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চাইলে আপনিও দিবসটি পালন করতে পারেন। যাঁদের দাদি-নানি দূরে থাকেন, তাঁরা আজ একটু সময় করে দাদি-নানির সঙ্গে দেখা করে আসতে পারেন। নিদেন একটা ফোন কিংবা কোনো উপহার! দাদি বা নানি সঙ্গে থাকলে পরিবারে বিশেষ আয়োজন করা যায়।
ন্যাশনাল টুডে ডটকম অবলম্বনে