ব্যাগ গোছানোর সময় যে ৮টি নিয়ম মানলে ঝামেলা কমবে
ঈদ আসছে, বাড়িতে যাওয়ার সময়ও হলো। ঈদে আমরা বাড়িতে যাই মূলত পরিবার নিয়ে। এ সময় ব্যাগপত্রের সংখ্যা থাকে বেশি এবং ব্যাগে রাখতে হয় দামি ও অতিপ্রয়োজনীয় জিনিস। তবে অনেকেই জিনিসপত্র ব্যাগে সুশৃঙ্খলভাবে আঁটাতে পারেন না। এ কারণে ব্যাগের সংখ্যাও যায় বেড়ে; এ যেন ‘বোঝার ওপর শাকের আঁটি’। ঈদযাত্রা বেশ ঝামেলাপূর্ণ বলে ব্যাগের সংখ্যা বাড়া মানে ঝামেলাও বেড়ে যাওয়া। তাই ব্যাগ গোছানোর আগে মেনে চলুন কিছু নিয়ম—
১. তালিকা করুন
ব্যাগ গোছানোর আগে পরিবারের সদস্যদের কী কী নিতে হবে, তার একটা তালিকা করুন কাগজে। শুনলে মনে হতে পারে, এর জন্য আবার তালিকা করতে বসব? কিন্তু বিশ্বাস করুন, পাঁচ মিনিট ভেবে তালিকা করলে অনেক ঝামেলা থেকেই রেহাই পাবেন। পরিবারের সবার কাছে জানতে চান, কার কী নিতে হবে।
২. ব্যাগ ভাগ করে দিন
যাত্রার সময় একটা বড় লাগেজ রাখতেই হয়। এই লাগেজে থাকতে পারে ছোট–বড় সবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। তবে ছোটদেরও কিছু কিছু জিনিস আলাদা ব্যাগে ভরে দিতে পারেন। আর এই ব্যাগ বহন করার দায়িত্ব থাকবে ছোটদের কাঁধেই। পিঠে একটা ছোট ব্যাগে তাদের ব্রাশ, স্যান্ডেল, খেলনা, লোশন, হালকা কাপড়চোপড়, শুকনা খাবার রাখতে পারবেন অনায়াসে।
৩. কাপড় রোল করে রাখুন
কাপড় নেওয়ার সময় রোল করে রাখুন। ভাঁজ করে রাখলে লাগেজে বেশি জায়গা নিয়ে ফেলবে। তবে এ সময় নিজের ও পরিবারের অন্যদের জন্য সদ্য কেনা ভাঁজ না–ভাঙা কাপড়চোপড়ও থাকে। সেসব ভাঁজ করে পাতলা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখতে পারেন। কাপড়ের মাঝখানে হেয়ার ড্রায়ার, ধাতব কনটেইনারের বডি স্প্রের মতো জিনিস রাখা যায়। ভালোভাবে পলিথিনে মুড়ে স্যান্ডেলও নিতে পারেন লাগেজের ভিন্ন চেম্বারে।
৪. দামি জিনিস যেভাবে নেবেন
ল্যাপটপ, ক্যামেরা, ড্রোন, ঘড়ি, অলংকার নেওয়ার জন্য আলাদা হ্যান্ডব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক নিন। অর্থাৎ এই ব্যাগ আপনি লকারে রাখবেন না এবং সব সময় যেন চোখের সামনেই থাকে। আর এসব জিনিস ঝাঁকুনিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে কোলের ওপর কিংবা বাস বা প্লেনে মাথার ওপরের লকারে রাখাই ভালো। এই ব্যাগে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের চার্জার, কেব্ল ও প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিকস অনুষঙ্গও রাখুন।
৫. তরল প্রসাধনীর জন্য
তরল প্রসাধনী, যেমন লোশন, তেল, শ্যাম্পু, পারফিউম, এমনকি টুথপেস্ট বা সাবানের মতো জিনিসপত্র আলাদা ব্যাগে নিন। মূল লাগেজে রাখলে অনেক সময় ঝাঁকুনিতে তেল, শ্যাম্পু বা পারফিউমের বোতলের মুখ খুলে গিয়ে সব বরবাদ করে ফেলতে পারে। একইভাবে শুকনা ও তরল খাবার সঙ্গে রাখলে পায়ের কাছে বা আশপাশে রাখা যায়, এমন ব্যাগেই নিন।
৬. ভঙ্গুর জিনিস রাখুন সাবধানে
ভঙ্গুর জিনিস নিতে হলে মূল লাগেজে রাখাই ভালো। এ ক্ষেত্রে লাগেজের তলানিতে একপ্রস্থ কাপড়চোপড় রেখে তার ওপর ভঙ্গুর জিনিসটি রাখুন। এর দুই পাশেও কাপড়চোপড় রাখতে হবে। এতে জিনিসটির নড়চড় হবে না।
৭. অতিরিক্ত জিনিস বাদ দিন
এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো আপনাকে নির্দয়ও হতে হবে। কাপড়ের বেলায় হিসাব করুন, কত দিনের জন্য বাড়ির বাইরে থাকবেন, দিন অনুযায়ী পোশাকের সংখ্যা ঠিক করুন। ৭ দিনের জন্য বাড়ি ছাড়লে ১৪টি পোশাক নেওয়ার দরকার হয় না বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই। পোশাকের বাইরে যা না নিলেও চলে, তা নির্দ্বিধায় রেখে যান। এমন কিছু জিনিস আছে, যা সব বাড়িতেই থাকে, তা না নিলেও চলে।
৮. জিনিসপত্র ব্যাগে ভরার আগে
শুরুতেই যে তালিকা করেছিলেন, সেটি সামনে রাখুন। তালিকা দেখে জিনিসপত্র ব্যাগে ভরুন। তালিকাটি ফেলে দেবেন না। কারণ, ফিরে আসার সময় এই তালিকা আবার কাজে লাগবে।