উড়োজাহাজে যে কাজগুলো করবেন না
কাজের প্রয়োজনে কিংবা অবসরযাপনে উড়োজাহাজে চেপে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন অনেকেই। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে তবেই এই বাহনে যাতায়াতের সুযোগ মেলে। সে তো পুরোদস্তুর কাগুজে নিয়ম–কানুন। সব কথা তো আর কাগজে লেখা থাকে না। নিজের স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে কিছু ব্যবস্থা নিজ থেকেই করে রাখা ভালো। আর বহু যাত্রীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে যে যাত্রা, তার কিছু অলিখিত বিধিবিধানও থাকে।
যেসব কাজে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়
সিটবেল্ট না বেঁধে কখনোই ঘুমাবেন না। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ ঝাঁকুনির কারণে আপনি পড়ে যেতে পারেন।
বিমানে কখনোই খালি পায়ে উঠবেন না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মেঝেতেও জীবাণু থাকে, যা আপনি খালি চোখে দেখতে পাবেন না।
নিজ আসনের ওপরে লাগেজ রাখার স্থান ছাড়া অন্য জায়গায় লাগেজ রাখবেন না।
যাতায়াতের পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
লাইন ভেঙে আগে নামতে যাবেন না, তাতে হুড়োহুড়ি হয়। সময়ও বেশি লেগে যায়।
আদবকেতা
যে কার্টে করে খাবার ও পানীয় নিয়ে বিমানকর্মীরা আপনার কাছে আসে তা স্পর্শ করবেন না। নিজ হাতে সেখান থেকে খাবার, ন্যাপকিন প্রভৃতি উঠিয়ে নেবেন না। মনে রাখবেন, এই কার্ট থেকেই অন্য যাত্রীদের খাবার ও বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়া হবে। যাত্রীদের কেউ নিজ থেকে এগুলো স্পর্শ করলে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। স্বাস্থ্যসচেতন যেকোনো যাত্রীই এতে বিরক্ত হবেন।
আসনে, হাতলে বা খাবার রাখার স্থানে পা উঠিয়ে বসবেন না, নিজের আসনসংলগ্ন নির্দিষ্ট জায়গাতেই পা রাখুন।
যেখানে–সেখানে বর্জ্য ফেলবেন না, বরং বিমানের কর্মী ‘ট্র্যাশ ব্যাগ’ নিয়ে এলে সেটির ভেতর ফেলুন।
শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার বিমানের কর্মীর হাতে ধরিয়ে দেবেন না, ডায়াপারের জন্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন।
বাথরুম ব্যবহার করতে গিয়ে ভিজিয়ে ফেলবেন না, ব্যবহারের পর কমোডের ‘সিট রিং’ মুছে দিন।
আসনের শ্রেণিবদলের জন্য বিমানের কর্মীদের অনুরোধ করবেন না।
বিমানে ঠান্ডা অনুভব করলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বারবার অনুরোধ করবেন না। মনে রাখবেন, চলন্ত বাহনে যাঁরা অসুস্থ অনুভব করেন, তাঁদের স্বস্তির জন্য বিমানের তাপমাত্রা কমিয়ে রাখা হয়।
খাবারদাবার ও পানীয়ের বিষয়ে যেসব ভুল করা যাবে না
দীর্ঘ যাত্রায় অতিরিক্ত চা-কফি খাবেন না। তাতে আপনি স্বস্তিতে ঘুমাতে পারবেন না। তা ছাড়া বারবার প্রস্রাব করতে যেতেও হতে পারে।
আপনি যদি কোনো কারণে গড়পড়তা খাদ্যাভ্যাসের চেয়ে ভিন্ন কোনো ধারা অনুসরণ করেন, তাহলে দীর্ঘ যাত্রায় খাবারের উৎসটি কী হবে, তা নিশ্চিত করুন। হতে পারে আগেভাগেই বিমান কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখতে পারেন, কিংবা নিজের খাবার নিজেও সঙ্গে নিয়ে নিতে পারেন। সঙ্গে আনা খাবার গরম করার প্রয়োজন হলে বিমানের কর্মী আপনাকে সহায়তা করবেন।
পানীয় পরিবেশন করার পর তা বদলে দিতে অনুরোধ করবেন না। তার চেয়ে আগেভাগেই জেনে নিন কোন ধরনের পানীয় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। অনেক বিমানেই আসনের পেছন দিকটায় ‘মেন্যু’ বা তালিকা রাখা থাকে। পরিবেশনের আগেই জানিয়ে রাখুন, কোন পানীয়টি আপনি নিতে চান।
নিজের প্রয়োজনেই আরও যেসব কাজ এড়িয়ে চলবেন
যাত্রার দিন বিমানবন্দরে পৌঁছাতে দেরি করবেন না, হ্যান্ড লাগেজে একটি কলম রাখতে ভুল করবেন না।
যাত্রার জন্য এমন পোশাক বা জুতা বাছাই করবেন না, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত চলতে হলে আপনি অস্বস্তিতে পড়েন। এই যেমন চপ্পল পরে দ্রুত হাঁটতে হলে আপনি পিছলে যেতে পারেন।
এমন পোশাকও পরা উচিত নয়, যাতে বিমানে আপনি ঠান্ডা অনুভব করেন। ফুলহাতা জামা, ফুলপ্যান্ট বা পাজামা পরুন। গরম কাপড়ও সঙ্গে রাখুন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ হ্যান্ড লাগেজে নিতে ভুলবেন না। তবে তরল ওষুধের বোতল হ্যান্ড লাগেজে ঢোকাবেন না।
হেডফোন ছাড়া অডিও বা ভিডিও চালাবেন না।
গন্তব্যে পৌঁছে আসন ছাড়ার আগে আপনি কিছু ফেলে যাচ্ছেন কি না, তা না দেখে যাবেন না।
সূত্র: রিডার’স ডাইজেস্ট