কেমন হবে জেফারের ঈদের সাজ–পোশাক
সিনেমার জন্য বদলে ফেলা রূপেই জেফার কাটাবেন ঈদের দিন। পরিবর্তনটা অভিনয়ের জন্য হলেও নিজের নতুন রূপকে সাদরে ধারণ করেছেন জেফার।
গত বছরের শেষ দিকের কথা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ছবি দেখে চমকে উঠেছিলেন নেটিজেনরা।
পরনে সুতি শাড়ি, গলায়-কানে হালকা গয়না, কপালে ছোট্ট টিপ আর একরাশ লম্বা কালো ঝলমলে চুল। কে বলবে, এই সেই জেফার! জেফার রহমানের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠত ফোলানো, কোঁকড়ানো আর এলোমেলো চুলের সাজ। এটাই তো ছিল তাঁর চেনা স্টাইল। পরে জানা যায়, অভিনয়ে আসছেন এই গায়িকা। সে জন্যই এত পরিবর্তন। নতুনকে ‘না’ বলেন না জেফার। তাই দীর্ঘসময় গান নিয়ে কাজ করলেও অভিনয়ের সুযোগটা হাতছাড়া করেননি। ওটিটি মঞ্চ চরকির সিনেমা মনোগামী-তে তাঁকে এই স্নিগ্ধ, অনাড়ম্বর সাজে দেখা যাবে।
পরিবর্তনটা অভিনয়ের জন্য হলেও নিজের নতুন রূপকে সাদরে ধারণ করেছেন জেফার। ভালোবেসে ফেলেছেন শাড়ি। এই ঈদেও শাড়ি পরার কথাই ভাবছেন। তবে ঈদের জন্য আলাদাভাবে শাড়ি কেনার এখনো কোনো পরিকল্পনা নেই। জানালেন, গান-অভিনয়—সব মিলিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি বলেন, ‘শাড়ি পরতে ইচ্ছা হলে আমার গন্তব্য হচ্ছে মায়ের আলমারি। ঈদেও তা-ই করব।’ মায়ের আলমারিতে শাড়ির খোঁজ না মিললে অবশ্য আরেকটি বিকল্প আছে—ছোটবেলার বান্ধবীর মায়ের আলমারি। জেফার আরও বলেন, ‘আমার আসলে দুই মা। আমার মা এবং আমার বান্ধবীর মা। ঈদের পুরো দিনটা কাটে এই দুই মায়ের কাছে। আমার পরা শাড়িগুলো দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের। ঈদেও হয়তো তাঁদের শাড়ি পরব। তা ছাড়া উপহার পেলে সেগুলো পরা হবে।’
ছোটবেলার ঈদ আর এখনকার সময়ের ঈদের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মন খারাপ করলেন জেফার। বলেন, ‘ছোটবেলায় ঈদ মানেই ছিল গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদি আর এক ডজন ভাই–বোনের হইচই। কেউ কাউকে ঈদের জামা দেখাতাম না। তবু লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যেরটা দেখার চেষ্টা করতাম। সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। কয়েক বছর ধরেই ঈদে আর গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয় না। তাই ঈদও আর আগের মতো নেই। নতুন পোশাক কেনারও তেমন তাড়া নেই। মনে হয় যা আছে, তা দিয়েই চালিয়ে দিই।’ তবে হঠাৎ কোনো পোশাকের নকশা মাথায় এলে নিজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন জেফার। এই গুণ অবশ্য পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকে। এবার ঈদেও হয়তো তা-ই করবেন।
এই ঈদে খুব বেশি হলে দুটি সাজে সাজবেন জেফার। দিনে শাড়ি পরলেও রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে কামিজ, কুর্তি কিংবা টপস ধাঁচের আরামদায়ক কোনো পোশাকই বেছে নেবেন বলে ভাবছেন।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই চুল নিয়ে বেশ আলোচনায় ছিলেন ‘ঝুমকা’খ্যাত এই গায়িকা। আজকাল সুন্দর চুলের জন্য বেশ প্রশংসাও শুনছেন। নতুন চুলে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন তিনি। তাই চুলের সাজে খুব একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চান না। বলছিলেন, ‘চুলটা ছেড়ে রাখতেই বেশি ভালো লাগে আজকাল। হেয়ার স্প্রে কিংবা জেল, এসব কোনো কিছুই খুব বেশি ব্যবহার করা হয় না। ঈদের সাজেও চুলে তেমন কিছুই করব না। শ্যাম্পু, ব্লো-ড্রাই করে যেমন আছে, তেমনভাবেই রাখতে চেষ্টা করব।’
নিজেই সাজতে পছন্দ করেন জেফার। বিশেষ করে বেজ-মেকআপটা কাউকে ধরতে দেন না। আজকাল অবশ্য মেকআপ নিয়ে খুব বেশি অন্য রকম কিছু করছেন না। যাকে বলে ‘মিনিমাল মেকআপ লুক’, ঈদেও সেভাবেই সাজবেন। চোখের সাজে শ্যাডো এড়াতে চেষ্টা করেন তিনি। হালকা কাজল আর আইলাইনারই যেন যথেষ্ট। তবে লিপস্টিকের প্রতি বেশ দুর্বল এই গায়িকা। তিনি বলেন, ‘নানা রং ও শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করি। লিপলাইনার ও লিপগ্লস ব্যবহার করি। এ ছাড়া গাঢ় রঙের বোল্ড লিপ খুব ভালো লাগে। মূলত পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিক দেওয়ার চেষ্টা করি।’
এবারের ঈদটা নিশ্চয়ই জেফার রহমানের কাছে একটু বিশেষ। কেননা ঈদেই আসছে তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র, তা-ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায়। নতুন চুলের সঙ্গে যেভাবে মানিয়ে নিয়েছেন, ‘অভিনয়শিল্পী’ পরিচয়েও সেভাবে মানিয়ে নিতে পারেন কি না, দেখা যাক!