রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার ভালোবাসতেন ব্যান্ডের গান
মারা গেছেন জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি ছিল তাঁর প্রবল টান। নিয়মিত বই পড়তেন, পছন্দ করতেন শাড়ি পরতে। সুগন্ধির প্রতি ছিল বিশেষ দুর্বলতা। ব্যক্তিগত এমন অনেক কথাই তিনি বলেছিলেন প্রথম আলোর ক্রোড়পত্র ‘অধুনা’য় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে। এই শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০১৫ সালের ৬ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আবার প্রকাশ করা হলো।
বাসাটি তাঁর ধানমন্ডি লেক-ঘেঁষা। কোলাহলের শহরে কিছুটা যেন প্রাকৃতিক নীরবতার আভাস পাওয়া গেল ঝুলবারান্দায় বসে। এখানে বসেই প্রায় শেষবিকেলের সময়টুকু কাটে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ারের। কখনো অস্তগামী সূর্যের দিকে চেয়ে, কখনো-বা বইয়ে মগ্ন হয়ে। ৩ মে (২০১৫ সাল) বাড়ির প্রিয় জায়গায় বসে কথাগুলো বলেন তিনি।
কপালে মেরুন টিপ, চোখে কাজল, গলায় পুঁতির মালা। এই তো চিরচেনা পাপিয়া সারোয়ার। নিজেকে নিয়ে বলেন, ‘এটি আমার প্রতিদিনকার স্বাভাবিক জীবন। সাধনার মধ্যে, চর্চার সঙ্গে থাকলে সবাইকে নিয়ম মেনেই চলতে হয়। আর আমি তো ছোটবেলা থেকেই গোছানো জীবনে অভ্যস্ত।’ রবীন্দ্রসংগীত গাইছেন দীর্ঘদিন, একসময় পড়েছেন শান্তিনিকেতনে। নিশ্চয় জীবনযাপনে রবীন্দ্রনাথের একটা প্রভাব রয়েছে। পাপিয়া সারোয়ার বললেন, ‘আমার পারিবারিক পরিবেশই ছিল রবীন্দ্র ঘরানার। ছোটবেলায় সময় কেটেছে গল্পগুচ্ছ পড়ে। গানের চর্চা তো ছিলই। এখনো শেলফজুড়ে তাঁর বই। এখনো মুগ্ধ হয়ে পড়ি তাঁর গল্পগুলো। তাই জীবনযাপনে তাঁর প্রভাব বা তাঁকে আলাদা করে জানার বিষয়টি কখনো মাথায় আসেনি।’
কথায় কথায় জানা হয়ে গেল তিনি শাড়ি পরতে খুব পছন্দ করেন। তাঁতের শাড়ি, জামদানি, টাঙ্গাইলসহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন নকশার শাড়ি তাঁর সংগ্রহে রয়েছে। তবে বাসায় বা কেনাকাটার সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সালোয়ার-কামিজ পরতে। সোনার ঝলমলে গয়নার চেয়ে গুরুত্ব দেন দেশীয় গয়নাকে। সব সময় শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরেন অন্য অনুষঙ্গগুলো।
সুগন্ধির প্রতি রয়েছে তাঁর বিশেষ দুর্বলতা। কাছের মানুষের সঙ্গে তাঁর এ সুগন্ধিপ্রীতি নিয়ে রয়েছে নানা মজার গল্প। ‘অনেক আগে গাওয়া কোনো গান যেমন সময়কে ফিরিয়ে দেয়, তেমনি পরিচিত সুগন্ধিও ফিরিয়ে নিয়ে যায় অতীতের কোনো সুন্দর মুহূর্তে।’ নিনা রিচি, র্যা ল্ফ লরেন, ল্যানকম, শ্যানেল ইত্যাদি ব্র্যান্ডের সুগন্ধি সব সময় তাঁর সঙ্গেই থাকে।
খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে খুব কমই বাছবিচার করেন। তবে তৈলাক্ত খাবার একদম এড়িয়ে চলেন। নিয়ম মেনে রেয়াজ করেন। আর সময় পেলেই গান শোনেন। কেবল রবীন্দ্রসংগীতই নয়, ব্যান্ডের গানও তাঁর প্রিয়। ছোট মেয়ে জিশা সারোয়ার ও মেয়েজামাই ইমরান আজিজের ব্যান্ডের গানের তো একনিষ্ঠ শ্রোতা। শোনেন নবীন শিল্পীদের গানও।