টিউশনির টাকায় যেভাবে গরুর ব্যবসা শুরু করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল

প্রতি বছর খামারের গরুর সংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান সিরাজুল

বিজ্ঞানের ছাত্র, টিউশনি করান। এখন আবার থিসিসের ব্যস্ততাও যোগ হয়েছে। এর মধ্যেও গরুর ব্যবসা করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম। গরু নিয়ে সিরাজুলের কারবার অবশ্য আজকের নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন প্রথম বর্ষে পড়েন, টিউশনি করে ৩৩ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকায় একটা গরু কিনে ফেলেন। পরে বিক্রি করেন ৫৩ হাজার টাকায়। পরের বছর সেই টাকার সঙ্গে আরও ৭ হাজার টাকা যোগ করে দুটি গরু কেনেন। সেই গরুও বিক্রি হয় দ্বিগুণ দামে। সাহস পেয়ে পরের বছর মোট চারটি গরু কেনেন সিরাজুল। প্রতিবছর নিজের ব্যবসাকে এভাবে একটু একটু করে বড় করেছেন এই শিক্ষার্থী। সিরাজুল বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল, প্রতিবছর গরুর সংখ্যা দ্বিগুণ করা। অর্থাৎ, একটা খামার থেকেই যেন আরেকটা বড় খামার করা যায়।’

সিরাজুলের ব্যবসার পদ্ধতি একটু আলাদা। সময় নিয়ে গরু পালন করেন তিনি। ছোট গরু কেনেন, সেটি এক থেকে দেড় বছর রেখে বিক্রি করেন। তবে কোরবানি উপলক্ষে এক-দুইটা বিশেষ গরুও থাকে। সিরাজুল জানান, ছয় থেকে সাত মাস লালন–পালন করলে প্রতি গরুতে অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ থাকে।

ফলিত রসায়নের মতো বিষয়ে পড়ে গরু ব্যবসা, পড়াশোনার ক্ষতি হয় না? উত্তরে সিরাজুল বলেন, ‘বাসায় বড় ভাই, পরিবারের অন্যান্য সদস্য আছেন। তাঁরা দেখাশোনা করেন। আমি টিউশনি করাই। টিউশনির টাকা মাসে মাসে পাঠিয়ে দিই। এ ছাড়া অনলাইনে খামারের গরুগুলোকে দেখি, দিনে তিন থেকে চারবার ফোন করে খোঁজখবর রাখি। পরিচিত পশুচিকিৎসক আছেন, প্রয়োজন হলে তাঁকে ডেকে পাঠাই। এ জন্য পড়াশোনায় তেমন ক্ষতি হয় না।’

গরু ব্যবসার লভ্যাংশ ও টিউশনির টাকায় এলাকায় দুই বিঘা জমি বন্ধক নিয়েছেন সিরাজুল। খামারের পাশাপাশি সেই জমিতে কৃষিকাজ করছেন। ভবিষ্যতে দুটিরই বিস্তৃতি বাড়াতে চান তিনি।