আপনার জীবনসঙ্গী কি বেহিসাবি

টাকা উপার্জন করে উল্টাপাল্টা খরচ করা হলে পর্যাপ্ত রোজগার করেও লাভ হয় না।
ছবি : প্রথম আলো

সফল সম্পর্কের জন্য ভালোবাসা প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা বলে দিন শেষে টাকাও প্রয়োজন। সংসারে দুজনই যদি চাকরি করেন, চাহিদার অনেকটাই সামাল দেওয়া যায়। তবে এখানেও আবার কিন্তু আছে। টাকা উপার্জন করে উল্টাপাল্টা খরচ করা হলে পর্যাপ্ত রোজগার করেও লাভ হয় না। স্বামী বা স্ত্রীর একজনের মধ্যে যদি অকারণে বেশি খরচের প্রবণতা থাকে, তাহলে সংসারের খরচে টান পড়বেই। জেনে নিন এমনই কয়েকটি দিক, যা থেকে বুঝতে পারবেন জীবনসঙ্গী হিসাবি, না বেহিসাবি।

দুজনের হাতখরচের বরাদ্দ টাকার বাইরেও যদি খরচ হয়, ব্যাংক অ্যাকাউন্টও তখন সাহায্য করে না।
ছবি: প্রথম আলো

অতিরিক্ত খরচ

কোনো কারণ ছাড়াই ঘন ঘন কেনাকাটার অভ্যাস। দুজনের হাতখরচের জন্য বরাদ্দ টাকার বাইরে গিয়ে যদি খরচ হতে থাকে, ব্যাংক অ্যাকাউন্টও তখন আর সাহায্য করবে না। অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার সময় যদি মনে হতে থাকে পরেরটা পরে বুঝব, তখনই নিজেকে আটকাতে চেষ্টা করুন। না হলে পরের দিনই খরচের চিন্তায় শুরু হয়ে যাবে অশান্তি।

বাজেট করতে পছন্দ করে না

মাসের শুরুতেই বাজেট করা জরুরি। তাহলে লাগামের মধ্যে থাকে খরচ। তবে আপনার জীবনসঙ্গী যদি বাজেট করে চলতে ইতস্তত করে, বুঝবেন সে বেহিসাবি। বাজেট মেনে চলতে মনের জোর লাগে। সঙ্গে থাকতে হবে ধারাবাহিকতা। দায়িত্বহীনভাবে খরচ করার প্রবণতা পরে আর্থিক সংকট তৈরি করে।

নিজে বেশি খরচ করে অনেকেই অপরাধী হিসেবে অপরজনকে বিবেচনা করেন।
ছবি : প্রথম আলো

ধারে ডুবে থাকলে

খরচ যখন লাগামহীন হয়, তখন আরেকজনের কাছে হাত পাততে হয়। ধার নেওয়ার বাজে অভ্যাস হয়ে যায়। ফলাফল প্রতি মাসে যে টাকা জমানোর কথা, সেটা পাওনাদারদের পকেটে চলে যায়। আপনার সংসার তখন গুরুতর আর্থিক সংকটে পড়ে। একদিকে ধার শোধ করছেন আপনি, আরেক দিকে আরেকজন কেনাকাটা করেই যাচ্ছে, তখনই বুঝবেন, পরিস্থিতি আর হাতের নাগালের মধ্যে নেই। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে কাপল কাউন্সেলিং নিতে পারেন।

আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব

এটাও একধরনের আর্থিক দায়িত্বহীনতা। বিয়ের পর দুজনের মধ্যেই আর্থিক স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। আপনার সঙ্গে কথা না বলে যদি অন্য কারও সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করে, ক্রেডিট কার্ডের বিল লুকিয়ে রাখে, না জানিয়ে কেনাকাটা করে, তাহলেই বুঝবেন অবস্থা শোচনীয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক সুস্থ থাকলে অনেক কিছুই সামলে নেওয়া সম্ভব।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক সুস্থ না থাকলে সবকিছু সামলে নেওয়া অসম্ভব।
ছবি : প্রথম আলো

সঞ্চয়ের অভাব

মানুষ যতটা সহজ ভাবে, সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা ততটা সহজ নয়। হাতে টাকা থাকলেই খরচ করার তাগিদ অনুভব করলে সমস্যা। যাহোক, একজন স্বামী–স্ত্রী এবং পিতা–মাতা হিসেবে দায়িত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা উচিত। আর্থিক দায়িত্বহীনতার একটি চিহ্ন হলো যে তার কোনো সঞ্চয় নেই। কোনো কোনো সংসারে সঞ্চয় করার মতো অবস্থা হয়তো আসলেই থাকে না। তবে সুযোগ পেলেই যতটা সম্ভব সঞ্চয় করুন। যত কঠিনই হোক না কেন, সঞ্চয় করাকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলতে পারলে আখেরে লাভ আপনারই হবে।

আপনার খরচে মাথা গলাবে

নিজের হাতখরচের বরাদ্দ শেষ করে যদি আপনার বরাদ্দে মাথা গলাতে চায়, বুঝবেন সে বেহিসাবি। শুধু তা–ই নয়, আপনি কীভাবে আপনার অর্থ ব্যয় করবেন, সেটাও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে। আর্থিকভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন স্বামী বা স্ত্রী আর্থিক সাবধানতা অবলম্বন করতে চায় না। এমনকি কখনো কখনো আপনি কীভাবে আপনার অর্থ ব্যয় করছেন, সেটা নিয়েও দুটি কথা শুনিয়ে দেয়। হয়তো নিজে বেশি খরচ করছেন, কিন্তু অপরাধী হিসেবে বিবেচনা করছেন আপনাকে।

সূত্র: অলুবানমি ম্যাবল