সিরাজগঞ্জের শাড়ি ভারতেও যায়

সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্পের রয়েছে গৌরবময় এক অতীত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অঞ্চলের তাঁতে তৈরি লুঙ্গি, গামছার বাইরে শাড়ি, কামিজের চাহিদাও বেড়েছে। ভারতের ব্যবসায়ীরাও নিয়মিত এখান থেকে শাড়ি নিচ্ছেন। সিরাজগঞ্জের তাঁতের অতীত–বর্তমান জানাচ্ছেন শেখ সাইফুর রহমান

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য বয়ন অঞ্চল সিরাজগঞ্জ। অন্যান্য বয়ন এলাকার চেয়ে এই অঞ্চলের বয়নশিল্পীরা প্রকৃতির খেয়ালের ওপর বেশি নির্ভরশীল। বন্যা আর নদীভাঙন তাদের জীবনকে বিপন্ন করে। গোটা অঞ্চলই নিচু এবং বন্যাপ্রবণ। নদীর গতি পরিবর্তনে বিলীন হয়ে গেছে অনেক এলাকা। প্রতিবছরই অতি বৃষ্টিজনিত বন্যায় জলমগ্ন থাকে এই অঞ্চল। গত ৪০ বছরে চার থেকে পাঁচটি বড় বন্যা স্থানীয় বয়নশিল্পীদের বিপর্যস্ত করেছে। ছোটখাটো বন্যা তো লেগেই থাকে। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা প্রত্যয়দৃঢ়। ফলে বৃহত্তর সিরাজগঞ্জের তাঁতবস্ত্র কিংবা বলা যায় তাঁতজাত পণ্য অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে উন্নত অবস্থানে আছে। বয়নশিল্পী ও উদ্যোক্তাদের এই হার না মানা মনোভাবই এখানকার বয়নশিল্পকে ঈর্ষণীয় উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

একসময় পাবনার অন্তর্গত ছিল সিরাজগঞ্জ। মূল পাবনা সদরে কখনোই বয়নশিল্পের প্রসার ঘটেনি। বরং এখানকার দু–একটা এলাকা আর সিরাজগঞ্জ ও শাহজাদপুরেই আসলে তাঁতশিল্পের প্রকৃত বিকাশ হয়েছে। তখন যেসব জায়গায় তাঁত বোনা হতো, এখনো হয়।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জের তাঁতে তৈরি শাড়ির চাহিদা বেড়েছে
মডেল: ললনা, শাড়ি: কে ক্র্যাফট, সাজ: পারসোনা, ছবি: কবির হোসেন

বৃহত্তর পাবনায় কবে থেকে তাঁত বোনা হচ্ছে, নিশ্চিত করে তা বলা যাচ্ছে না। অসমর্থিত একটি সূত্র বলছে, মোগল আমলেই এখানে তাঁতশিল্পের প্রসার লাভ করে। বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার–এ বলা হয়েছে, ‘১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে জেলা কালেক্টরেটের বিবরণ থেকে জানা যায় যে জেলার বিপুলসংখ্যক মানুষ তাঁতশিল্পে নিয়োজিত ছিল। এই বয়নশিল্পী সম্প্রদায়ের মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধর্মেরই ছিল। তাদের মধ্যে আবার কিছু বর্ধিষ্ণু বয়নশিল্পীও ছিল। এরা তাঁতের কাজে মালিক হিসেবে শ্রমিক নিয়োগ করত। অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাপড় বুনে দেবে, এই চুক্তিতে শ্রমিকদের আগাম টাকা দেওয়া হতো। সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের ধুতি সিরাজগঞ্জের দোগাছি গ্রামে তৈরি হতো। দাম প্রতি জোড়া ৫ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে ওঠানামা করত। জেলা থেকে ধুতি, চাদর উভয়ই বাইরে চালান যেত। পাবনা জেলার ইতিহাস থেকে মেলে অন্তত ১০০ বছর আগের পরিসংখ্যান। জানা যায়, সেই সময়ে সিরাজগঞ্জের তামাই গ্রামেই ছিল ৫০০ তাঁত। তখন সবচেয়ে বেশি তাঁত ছিল দেলুয়া গ্রামে। ১ হাজার ৭০০টি। বয়নশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ দেলুয়া আজ যমুনার গর্ভে বিলীন। সেখানকার চওড়া পাড়ের শাড়ি কিনতে একসময় মুম্বাই আর করাচি থেকেও ব্যবসায়ীরা আসত বলে জানা যায়।’

আরও পড়ুন

বয়ন অঞ্চল

বর্তমানে সিরাজগঞ্জের তিন উপজেলায় বয়নশিল্প বিস্তার লাভ করেছে। এগুলো হলো বেলকুচি, চৌহালী আর শাহজাদপুর। বেলকুচির শেরনগর, তামাই, মুকুন্দকাটিই এখানকার মূল বয়ন অঞ্চল। কারখানাগুলোও এই তিন জায়গাতেই মূলত। তবে অন্যান্য গ্রামেও তাঁত আছে। চৌহালীর চারটি গ্রাম এনায়েতপুর, বেতিলা, খুকনি ও রূপনাইয়ে মূলত তাঁতের বিস্তার। এ ছাড়া শাহজাদপুরের তালতলা, খঞ্জনদিয়ার, রামবাড়ি, পুকুরপাড়, মনিরামপুর, প্রাণনাথপুর, শক্তিপুর, শান্তিপুর, ঘাটপাড়া, আন্ধারকোঠাপাড়া, রূপপুর, উড়িয়ার চর, নগরডালা, ডায়া, হামলাকোলা, জুগ্নিদহ প্রভৃতি গ্রামেও আছে বয়নিশল্পের প্রসার।

বুটি শাড়ি বোনার সময় হাতে নকশা তোলা হয় অথবা জ্যাকার্ডে নকশা করা হয়
মডেল: ললনা, শাড়ি: কে ক্র্যাফট, সাজ: পারসোনা, ছবি: কবির হোসেন

বর্তমানে বেলকুচিতেই রয়েছে অন্তত এক লাখ তাঁত। সিরাজগঞ্জের অন্য দুটি তাঁত এলাকা এবং পাবনা মিলিয়ে রয়েছে আরও লাখখানেক। বয়নশিল্পী, শ্রমিক, রঞ্জনশিল্পী, কাটুনি মিলিয়েএই শিল্পের সঙ্গে বর্তমানে সম্পৃক্ত কমপক্ষে চার লাখ মানুষ।

এসব এলাকায় হস্তচালিত তাঁতে মূলত শাড়ি বোনা হয়। আর বোনা হয় লুঙ্গি, গামছা, দোপাট্টা, সালোয়ার-কামিজের কাপড়। পিটলুমে বোনা হয় লুঙ্গি। কাজটি করে থাকেন কেবল মেয়েরা। এক টানায় ১৩টি লুঙ্গি বোনা যায়।

শাহজাদপুর, বেলকুচি আর এনায়েতপুরে প্রতি সপ্তাহেই হাট বসে। শাহজাদপুরে রবি ও বুধবার; বেলকুচিতে মঙ্গল ও বুধবার এবং এনায়েতপুরে শুক্রবার। লুঙ্গি আর থ্রি-পিসের জন্য বিখ্যাত বেলকুচির হাট। তবে শাহজাদপুরের হাটটিই এখন সবচেয়ে বড়। এসব হাটে প্রচুর শাড়ি ওঠে। পাইকার ছাড়াও সাধারণ গ্রাহক, বিশেষত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সেখান থেকে শাড়ি কিনে থাকেন।

আরও পড়ুন

শাড়ির বিভিন্ন নাম

শাড়ি বা থ্রি–পিস যা–ই হোক, উৎপাদিত পণ্যের নাম এলাকার বয়নশিল্পীরাই দিয়ে থাকেন। এমন কিছু নাম হলো নাওরি, টেডি, গ্যাপ পাড়, কাটিং বুটা, মনুপুরা, জলবুটা ইত্যাদি। সময়ের সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন নাম। অন্তত পাঁচ দশক ধরে এখানে বোনা হচ্ছে ফিতাপাড়। এর চাহিদা আজও যথেষ্ট আছে। 

পাবনার শাড়িবৈচিত্র্য

বয়নবৈশিষ্ট্য আর কৌশলের ওপর ভিত্তি করে পাবনার শাড়িকে তিনটি মৌলিক ভাগে ভাগ করা যায়।

১. প্লেন শাড়ি: এই শাড়ি বোনার সময় টানা আর ভরনায় নকশা হয়ে থাকে।

২. বুটি শাড়ি: এসব শাড়ি বোনার সময় হাতে নকশা তোলা হয় অথবা জ্যাকার্ডে নকশা করা হয়।

৩. নকশা পাড়: জ্যাকার্ড ও ডবিতে পাড়ের ডিজাইন করা হয়। একই পদ্ধতিতে আঁচলেও নকশা করা হয়ে থাকে। নকশার পরিমাণ কম হলে ডবিতে ডিজাইন করা হয়।

এই অঞ্চলে এই তিন ধরনের মধ্যেই বর্তমানে শাড়ি বোনা হয়। যদিও এলাকায় এসবের আলাদা পরিচয় আছে। যেমন ১. থান শাড়ি, ২. থান শাড়িতে বুটি, ৩. থান শাড়িতে ঘুঘু ডবি (চাটাই পাড়), ৪. থান শাড়িতে জ্যাকার্ড পাড়, ৫. থান শাড়িতে হুক জ্যাকার্ড (আঁচলে নকশা), ৬. স্বর্ণকাতান (কাটিং সামার নকশা)

ঋতু, উৎসব ও বিভিন্ন দিবস মাথায় রেখেই আসলে শাড়িতে রঙের বিন্যাস করা হয়
মডেল: ললনা, শাড়ি: কে ক্র্যাফট, সাজ: পারসোনা, ছবি: কবির হোসেন

কাপড় বোনার বিভিন্ন ধাপ

বাজার থেকে সুতার কোন কেনা হয়। তা থেকে হ্যাঙ্গস বা লাছি করা হয়। এরপর সেই সুতাকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বয়ন উপযোগী করে তোলা হয়।

মার্সেলাইজিং: এই প্রক্রিয়ায় সুতা পরিষ্কার করে উজ্জ্বলতা বাড়ানো হয়, প্রতিরোধ করা হয় শ্রিঙ্ক। বয়নের ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে রঙের তারতম্য আনা হয়। হালকা রঙের জন্য সুতায় সাদা রং করা হয় আর গাঢ় রঙের জন্য কোরা রেখে দেওয়া হয়। আর বিভিন্ন রং করার জন্য সুতা ডাইং কারখানায় পাঠিয়ে রং (ইয়ার্ন ডাই) করা হয়।

পারি: মার্সেলাইজিংয়ের পরের ধাপ হলো পারি করা, অর্থাৎ মাড় দেওয়া বা স্টার্চিং। এ জন্য ব্যবহার করা হয় সেদ্ধ চাল, সাগু ও তুঁতে। ১০ পাউন্ড সুতার জন্য লাগে দেড় কেজি চাল, ২৫০ গ্রাম সাগু ও ১০ গ্রাম তুঁতে। ঝুলিয়ে লাছি শুকানোর পর এই সুতাকে বলে শুঁটকি সুতা।

সুতা ধোয়া: আয়রন কম বলে নদীর পানিতে সুতা চুবিয়েই তুলে ফেলা হয়। এরপর আবারও মাড় দিয়ে আবার শুকানো হয়। এই সময়ে সুতা যাতে জট পাকিয়ে না যায়, সে জন্য বারবার পেটানো হয়। শুকিয়ে যাওয়ার পর চকরায় ববিন করা এবং ডিজাইন অনুযায়ী ববিন খাঁচায় সাজানো হয়।

জোয়া আর খেও: আইসানা বা জোয়া হলো টানার হিসাব অনুযায়ী রিংয়ে সুতা ভরা। এরপর নরদে টানা প্যাঁচানো হয়। এই কাজের জন্য দুজন লোক লাগে। টানা তাঁতে বসানো হয়ে গেলে শুরু করা হয় খেও দেওয়া বা বোনা। এই পুরো প্রক্রিয়াটাই যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ।

আরও পড়ুন

বোনার সময়

সাধারণ নকশাবিহীন একটি শাড়ি বুনতে লাগে মাত্র ছয় ঘণ্টা। অন্যদিকে জটিল নকশার একটি শাড়ি বুনতে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যায়।

উপকরণ

উপকরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষামূলক ব্যবহার ও সহজলভ্যতা সিরাজগঞ্জের শাড়িকে দিয়েছে বৈচিত্র্য। অতীতে সুতার উপকরণ বলতে ছিল কেবল সুতি। সময়ের ধারায় ক্রমান্বয়ে যুক্ত হয়েছে র সিল্ক, সফট সিল্ক, সুতি, সুতি খদ্দর, খাদি সিল্ক বা এন্ডি, জুট, তসর, পালেক্স, পলিয়েস্টার, কৃত্রিম সিল্ক, নাইলন, গ্যাস সিল্ক (মার্সেরাইজড কটন), জরি, আর্ট সিল্ক, নোয়েল ইত্যাদি।

সুতা শুকানো হচ্ছে রোদে
ছবি: প্রথম আলো

বর্ণবিন্যাস

শাড়ি তৈরির আগে রঙের কম্বিনেশন কেমন হবে, স্থির করেন প্রধান বয়নশিল্পী, মহাজন, উদ্যোক্তা নিজে নয়তো ডিজাইনার। অবশ্য আমাদের দেশে ডিজাইনারের সম্পৃক্ততা বেশ কম। 

ঋতু, উৎসব ও বিভিন্ন দিবস মাথায় রেখেই আসলে শাড়িতে রঙের বিন্যাস করা হয়। এই কাজে অন্যান্য দেশের ডিজাইনও অনুসরণ করা হয়ে থাকে। ক্রেতার সন্তুষ্টিও একটি পরোক্ষ প্রভাব তৈরি করে থাকে। অতীতে কিছু নির্দিষ্ট রঙের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেন শাড়ির পরিকল্পনাবিদ তাঁতিরা। বিগত ৩০ বছরে ফ্যাশন উদ্যোক্তা ও ডিজাইনারদের প্রভাবে অপ্রচলিত রঙের কম্বিনেশন, একই রং থেকে শেডের তারতম্যের মাধ্যমে অন্যান্য রং ও একই শাড়ির জমিনে বিভিন্ন বিন্যাস, গুচ্ছ রঙের সমন্বয়, একই শাড়িতে সোনালি, রুপালি বা অন্য রঙের জরির ব্যবহারে রঙের নতুন নতুন বিন্যাস তৈরিতে মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন এখানকার বয়নশিল্পীরা।

রঙের পরিবর্তনে বর্তমানে মিডিয়ার প্রভাবও অনস্বীকার্য। আন্তর্জাতিক ফ্যাশনধারাও যে পরোক্ষে ভূমিকা রাখছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কালার কম্বিনেশনে সৃজনশীলতার বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফ্যাশন হাউসগুলোর ভূমিকার কথা স্বীকার করতেই হবে। কারণ, তাদের নির্দেশনাতেই বয়নশিল্পীরা মূলত শাড়ি বা থ্রি–পিস বুনে থাকেন। পাশাপাশি নিজেদের ভাবনার প্রতিফলনও তাঁরা ঘটান। উদ্যোক্তাদের মনে ধরলে সেসব ডিজাইনও অনেক সময় তাঁরা নিয়ে নেন।

ধরন অনুযায়ী নকশার প্রচলিত নাম থাকলেও বয়নশিল্পীরা এলাকা ও তাঁদের নিজস্ব ভাবনার মিশেলে একই নকশাকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করে থাকেন। মহাজন অথবা প্রধান বয়নশিল্পী বা নকশামাস্টার প্রতিটি ধরনের একটা নাম দিয়ে থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে আবার নকশাভেদে নামের প্রচলন করা থাকে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নকশা বা মোটিফের ছবি না দেখে কেবল শুনেই তা শনাক্ত করতে পারেন বয়নশিল্পীরা। মোটিফের যেমন আলাদা নাম আছে, তেমনি জমিন আর পাড়ের নকশারও আছে বিভিন্ন নাম।

সাধারণ নকশাবিহীন একটি শাড়ি বুনতে লাগে মাত্র ছয় ঘণ্টা
ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলকে ছাড়িয়েছে সিরাজগঞ্জ

২০১০ সাল থেকে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে সিরাজগঞ্জের শাড়ি। সিরাজগঞ্জের শাড়ি টাঙ্গাইলের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে রপ্তানি হয়ে থাকে। এই রপ্তানিতে টাঙ্গাইলকে ছাড়িয়ে গেছে সিরাজগঞ্জ। ভারতে যায় ৪০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দামের শাড়ি। বর্তমানে প্রতি হাটে ২৫-৩০ জন ভারতীয় ব্যবসায়ী নিয়মিতই আসেন। এসব শাড়ি এখান থেকে যায় টাঙ্গাইলে। সেখান থেকে প্যাকেজিংয়ের পর রপ্তানি হয়।

প্রতি সপ্তাহে কেবল শাহজাদপুর হাট থেকে অন্তত ২০০ কোটি টাকার শাড়ি রপ্তানি হয়ে থাকে। আর বেলকুচি হাটের সাপ্তাহিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকা। এই টার্নওভারের অন্তত ৩০ শতাংশ আসে রপ্তানি থেকে। ক্রমেই বাড়ছে এই চাহিদা।

সমস্যা

দক্ষ জনশক্তি ছাড়া আমাদের আর কিছুই নেই। তাঁতের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো কিছুই আমাদের দেশে পাওয়া যায় না। সুতা, রংসহ সবকিছুতেই আমরা আমদানিনির্ভর। ডিজাইনের কোনো সাপোর্ট নেই। টেক্সটাইল ডিজাইনার নেই। পড়ানোও হয় না। এ ছাড়া তাঁত বোর্ডের আশানুরূপ সহায়তা না পেয়ে বয়নশিল্পীরা হতাশ। না আছে আর্থিক প্রণোদনা বা সহায়তা, না কোনো স্বীকৃতি কিংবা সম্মাননা। ফলে দিনকে দিন ম্রিয়মাণ হয়ে পড়ছে এই খাত। পাশাপাশি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে পাওয়ারলুম। হস্তচালিত বয়ন অঞ্চলে পাওয়ারলুমের অনুপ্রবেশ এই শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। কেবল সিরাজগঞ্জ নয়, সমগ্র বাংলাদেশে হস্তচালিত বয়নশিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী নীতিমালা।  

আরও পড়ুন