সম্পর্কে একবার প্রতারিত হলে আবার কীভাবে শুরু করবেন

একে অপরকে বোঝা আর যত্নের মাধ্যমেই সঙ্গীর বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। প্রতীকী এই ছবির মডেল: অভি ও প্রমাছবি: কবির হোসেন

সম্পর্কের মূল ভিত্তিই হলো বিশ্বস্ততা। সেটা একবার ভেঙে গেলে আবার জোড়া লাগানো কঠিন। এটি কোনো সুইচ নয় যে চাইলেই রাতারাতি বদলে ফেলা যাবে। সুস্থ আলোচনা, একে অপরকে বোঝা আর যত্নের মাধ্যমেই সঙ্গীর বিশ্বাস অর্জন করতে হয়। প্রতারিত হওয়ার পর নিজের দৃঢ়তা দিয়ে উদ্বেগ কাটিয়ে আবার নতুনভাবে সম্পর্কে ফেরা যায়।

সম্পর্কে বিশ্বস্ততার অভাব আর মাঝনদীতে ফুটো হয়ে যাওয়া নৌকার প্রায় একই দশা হয়। তাই নতুন সম্পর্ক শুরু করার আগেই কিছু বিষয়ে নজর রাখা উচিত:

আগের সম্পর্কের ট্রমা: একটি খারাপ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আরেকটি নতুন সম্পর্কের প্রাথমিক ধাপেই কেউ কেউ নিজের ব্যক্তিগত কথা, চিন্তা প্রকাশ করতে পারে না। কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। নতুন সঙ্গীর আশ্বস্ততা দরকার হয়।

মাত্রাতিরিক্ত সন্দেহ: হয়তো আপনি সঙ্গীকে মেসেজ বা কল করলেন। কোনো কারণে পেলেন না। এক মিনিটেই মেসেজ বা কলের জবাব না পেয়ে আপনার মনে সন্দেহ দানা বেঁধে গেল। এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে চিন্তা আর উদ্বেগে অস্থির হয়ে উঠবেন না। শান্ত হোন, অপেক্ষা করুন। তিনি হয়তো কোনো ব্যস্ততার কারণেই ফোন ধরতে পারেননি। মাত্রাতিরিক্ত অনুসন্ধানী হয়ে নতুন গড়ে তোলা সম্পর্ক খারাপ করবেন না।

মতামতে অমিল থাকলেও চিন্তাভাবনায় সৎ থাকলে দাম্পত্য ভালো থাকে
ছবি: কবির হোসেন

নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা: সম্পর্কে বিশ্বাস যেমন এক দিনে তৈরি হয় না, তেমনি সেটা এক মিনিটেই ভেঙে যায় না। প্রতিদিন ছোট বিষয়গুলো নজরে না আনলেই ‘সম্পর্কে বিশ্বাস করা’ নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়। ধরুন, আজকে হয়তো আপনার দিনটি খারাপ কেটেছে। মনমেজাজ খারাপ করে আছে। আপনার সঙ্গী হয়তো কারণ না জেনে ভেবে নিল, আপনাদের কোনো ঝগড়ার কারণে মন খারাপ করে মুড দেখাচ্ছেন। তাই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন। হয়তো অফিসে আপনার স্ট্রেস লেভেল ছিল ৯, কিন্তু বাড়িতে প্রবেশের পর সেটা কমিয়ে ৫–এ নিয়ে আসুন৷ আর তার জন্য লম্বা করে শ্বাস নিন, সঙ্গীর হাসিমুখটাকে স্মরণ করুন।

বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে আপনি কেমন: বিশ্বস্ত সঙ্গীর সংজ্ঞা আপনার কাছে কেমন, একবার ভাবুন। যিনি তাঁর ওয়াদা ঠিকভাবে পালন করেন, মতামতে অমিল থাকলেও চিন্তাভাবনায় সৎ থাকেন, সারা দিনের ঘটনা আপনার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন, যেসব বিষয় আপনাকে কষ্ট দেয় তা থেকে বিরত থাকেন—এমন নানা কিছু হয়তো আপনার মনে আসবে। ঠিক সেই মানুষটিই হতে চেষ্টা করুন। আপনার মনের মতো সঙ্গী পেতে নিজের পরিপূর্ণ অংশগ্রহণ জরুরি।

পরিবর্তনের দিকে সুনজর দিন: দিন যায়, সম্পর্কের মোড় বদলায়। তাই অন্ধকারে তির মেরে নিজের ক্ষতি করবেন না। সঙ্গী যদি সব সময় আপনার সঙ্গে বিরক্তিকর মনোভাব দেখায়, খোলাখুলি কথা না বলে, ফোন চেক করে সেসব সুস্থ সম্পর্কের লক্ষণ নয়। কিন্তু অহেতুক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে, অন্যের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে সম্পর্কের ক্ষতি করবেন না।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট