নিজের অজান্তে করা পুরুষের এই ৩ ভুলে শেষ হয়ে যায় দাম্পত্য সম্পর্ক

আধুনিক দাম্পত্য সম্পর্ক সফলভাবে টিকিয়ে রাখা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। মানুষ যেমন দ্রুত প্রেমে পড়ছে, তেমনই দ্রুত সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যাওয়াতেও ‘পারদর্শী’ হয়ে উঠছে। সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পেছনে আছে পুরুষের কিছু সাধারণ ভুল। তার প্রমাণ মিলছে সাম্প্রতিক সময়ের কিছু তথ্য–উপাত্তেও। প্রথম আলোয় ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন বেশি এসেছিল স্ত্রীদের পক্ষ থেকে। প্রতি ১০টি আবেদনের প্রায় ৭টি করেছিলেন নারীরা। এবং এত তালাকের পেছনে ‘দাম্পত্যজীবন পালনে অক্ষমতা’ একটি বড় কারণ (২২.১ শতাংশ)। গবেষকেরা বলছেন, অনেক সময় পুরুষ নিজের অজান্তে কিছু ভুল করতে থাকে আর ঠুকতে থাকে দাম্পত্য সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেক। জেনে নেওয়া যাক তেমনই ৩ ভুলের কথা।

অনেক সময় পুরুষ নিজের অজান্তে কিছু ভুল করতে থাকে আর ঠুকতে থাকে দাম্পত্য সম্পর্কের কফিনে শেষ পেরেকমডেল: তিথি ও শামস। ছবি: প্রথম আলো

১. সঙ্গীকে ‘ফর গ্র্যান্টেড’ হিসেবে নেওয়া

অনেক নারীই অভিযোগ করেন যে তাঁর জীবনসঙ্গী প্রেমিক হিসেবে দুর্দান্ত ছিল। অথচ বিয়ের পর বদলে গেছে। এখন সম্পর্কে তিনি আর আগের মতো উৎসাহী নন। সঙ্গীর খেয়াল রাখা, তাঁর প্রশংসা করা, তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোর আগ্রহ কমে গেছে। অনেক পুরুষের মধ্যে সঙ্গীকে বিয়ের পর ‘ফর গ্র্যান্টেড’ হিসেবে নেওয়ার বা হালকাভাবে মূল্যায়ন করার একটা প্রবণতা তৈরি হয়। অনেক বিয়ের সম্পর্কে আবার সময়ের সঙ্গে ‘স্পার্ক’ কমে আসে বা টানটা শিথিল হয়ে যায়। তখন দাম্পত্যজীবনে একধরনের অভ্যস্ততা আর উদাসীনতা তৈরি হতে পারে। অথচ বিয়ের সম্পর্কটা এমন যে সেখানে প্রতিদিন ‘পারফর্ম’ করতে হয়। নতুন করে সম্পর্ককে জাগিয়ে তুলতে হয়। এ জন্য দুজনকে নিয়ম করে মানসম্পন্ন সময় কাটানো, নতুন নতুন রঙিন স্মৃতি তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন

২. সঙ্গীর কথা মন দিয়ে না শোনা

সম্প্রতি রাজ শামানির পডকাস্টে দক্ষিণ ভারতীয় তারকা তামান্না ভাটিয়া জানান, তাঁর মতে বর্তমানে সম্পর্ক ‘ওয়ার্কআউট’ না করার একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এক পক্ষ অপর পক্ষকে না শোনা। অনেক সময় সম্পর্কে এক পক্ষ কোনো পরামর্শ বা সমাধান চায় না। কেবল চায়, অপর পক্ষ তাঁর কথা মন দিয়ে শুনুক। ব্যস, এটুকুই। আরেকজনের কথা শোনা সহানুভূতি জানানোর সবচেয়ে ভালো উপায়। কথায় বলে, ‘যখন আপনার কথা আরেকজন শুনছে, সেই মুহূর্ত থেকে আপনার সেরে ওঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়।’

অনেক সময় দাম্পত্য সম্পর্কে নারীরা অভিযোগ করেন, জীবনসঙ্গী তাঁর কথা মন দিয়ে শোনেন না। অন্যদিকে দাম্পত্য সম্পর্কে পুরুষেরা অভিযোগ করেন, নারীরা তাঁদের সমাধান নেন না।

আদতে অনেক সময় সমাধান দেওয়ার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো স্রেফ সঙ্গীর কথা মন দিয়ে শোনা। তাঁর সংকট, আবেগ, অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝা। মূল্যায়ন করা। এতটুকুই আদতে যথেষ্ট।

আরও পড়ুন

৩. ঘরের কাজে হাত না লাগানো

এই সময়ে দাঁড়িয়েও অনেক পুরুষ মনে করেন, ঘরের কাজ করা, সন্তান পালন করা—এসব কেবল নারীর দায়িত্ব। কেবল সংসারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা না করার জন্য দাম্পত্য সম্পর্কে অনেক ধরনের জটিলতা হয়। দাম্পত্যে ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। একান্তই যদি আপনি নারী সঙ্গীকে ঘরের কাজ সাহায্য করতে না পারেন, তাহলে অন্তত কাজের সময় তাঁর পাশে থাকুন। সঙ্গ দিন। গল্প করুন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া