এই কারণে যে সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে, আপনি হয়তো কখনো ভাবেনইনি
জনপ্রিয় মার্কিন কমেডিয়ান ও টেলিভিশন উপস্থাপক স্টিভ হার্ভের শো থেকে একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই শোতে উপস্থিত ছিলেন নামকরা মার্কিন অ্যাটর্নি জেমস সেক্সটন। বিচ্ছেদবিষয়ক হাইপ্রোফাইল আইনজীবী হিসেবে তাঁর নামডাক আছে।
অনুষ্ঠানে দর্শকদের ভেতর থেকে একজন নারী বলেন, ‘আমি বিয়ে করেছি ছয় বছর। আমার জীবনসঙ্গী একজন অসাধারণ মানুষ। আর আমিও অকৃতজ্ঞ নই। তবে আমার স্বামীকে সবকিছুই বলে দিতে হয়। মনে করুন আমি চাচ্ছি, সে আমাকে জড়িয়ে ধরুক, তাকে গিয়ে বলতে হয়। বেড়াতে যাব, তাকে বলতে হয়, “চলো, ঘুরে আসি।” সে নিজে থেকে কিছুই করে না। আমি চাই যে সে নিজে থেকেই বুঝে নিক। আচ্ছা, এটা কি খুব বেশি কিছু চাওয়া?’
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি জেমস সেক্সটন মজা করে উত্তর দেন, ‘মনে রাখবেন, আপনি একজন পুরুষকে বিয়ে করেছেন। আর আপনি যত কথা বলেন, তার মাত্র ২৫ শতাংশ আপনার স্বামী শোনেন। আর এর মাত্র ৫ শতাংশ তিনি বুঝে উঠতে পারেন। আর আপনি যেটা বলেন না, তার কিছুই তিনি শুনতে পারেন না। ফলে আপনি যা বলেন, আপনার স্বামী সেটাই করেন, এটা একটা দারুণ ব্যাপার। আপনি সৌভাগ্যবতী।’
তাহলে সত্যিটা আজ জেনে নিন। একটি কারণে নীরবে অনেক সম্পর্ক ভেঙে যায়। আর সেই কারণটি আপনি হয়তো ধারণাও করতে পারেননি। আর সেই কারণটি হলো, ‘ধারণা করা’ বা ‘ধরে নেওয়া’। ভারতীয় মেন্টাল হেলথ থেরাপিস্ট শৌর্য গালাওয়াতের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল অনুসারে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
এই থেরাপিস্ট বলেন, ‘সম্পর্কে উদ্ভূত হতাশার অন্যতম প্রধান কারণ হলো না–বলা প্রত্যাশা। আপনি ধরেই নিয়েছেন যে আপনার সঙ্গী আপনার না–বলা বিষয়টি নিজে নিজে বুঝে নেবেন। আর সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। সেখান থেকে আপনার প্রত্যাশা তৈরি হয়। আর সেটি পূরণ না হওয়ায় আপনি হতাশ হয়ে পড়েন। ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। সম্পর্কে নিজেদের অগোচরেই তৈরি হতে থাকে দূরত্ব।’ সেই দূরত্ব যাতে তৈরি না হয়, সে জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় এই থেরাপিস্ট নিজের প্রত্যাশা, চাহিদা বা মনের ভাব সঙ্গীর কাছে খোলামেলাভাবে বলতে পরামর্শ দিয়েছেন।
১. আপনার কী প্রয়োজন সঙ্গী জানে, ঠিক বুঝে নেবে—এই ধারণা বাদ দিন। বরং সঙ্গীর কাছে নিজের প্রয়োজন নির্দিষ্ট করে খুলে বলুন। যেমন বলুন, ‘আজ অফিসে অনেক চাপ গেছে। আমি একটু বিশ্রাম নেব।’
২. চুপ থাকার মানে সব ঠিক আছে ধরে নেবেন না। জিজ্ঞেস করুন, ‘আজ তোমাকে একটু বিমর্ষ দেখাচ্ছে, কী হয়েছে বলতো?’ আপনার এই একটা ছোট্ট প্রশ্ন আপনাদের ভেতর গভীর যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করে দেবে।
৩. প্রত্যেকের ভালোবাসার ভাষা ভিন্ন। আপনি আপনার সঙ্গীকে যেভাবে ভালোবাসেন, আপনার সঙ্গীও আপনাকে সেভাবে ভালোবাসবেন, এই ধারণা বাদ দিন। বরং বলুন, ‘তুমিও তো মাঝেমধ্যে ফোন করে আমার খোঁজ নিতে পারো।’ অপর পক্ষ হয়তো বলতে পারে, ‘ও, আমি তো ভেবেছি, তুমি ব্যস্ত থাকো, ফোন করলে বিরক্ত হবে, তাই ফোন করিনি।’ এভাবে আপনার একটা ছোট্ট উদ্যোগে ভুল–বোঝাবুঝির অবকাশ কেটে গেল।
মনে রাখবেন, সুস্পষ্ট যোগাযোগের অনেক ক্ষমতা। সম্পর্কে ভুল–বোঝাবুঝি আর দূরত্বকে বিদায় জানাতে সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলুন মন খুলে।