বন্ধুর জীবনসঙ্গীকে যদি আপনার পছন্দ না হয়

সময়ের সঙ্গে বদলায় সম্পর্কের রং, মনের চাহিদা। একটা বয়স পর্যন্ত পরিবারই থাকে সবচেয়ে আপন। এরপর আসে বন্ধুরা। জীবনে বিশেষ কেউ আসার আগপর্যন্ত বন্ধুই যেন সবচেয়ে কাছের মানুষ। জীবনসঙ্গীর আবির্ভাবে বন্ধুত্ব যে সব ক্ষেত্রে হারিয়ে যায়, তা কিন্তু নয়। সঙ্গীসমেত বন্ধুদের আড্ডাও তো চলে। তবে কাছের বন্ধুর জীবনসঙ্গীকে যদি আপনার ভালো না লাগে, তাহলে কিন্তু বেশ মুশকিলেই পড়বেন। এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন।

বন্ধু যতক্ষণ ওই ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে আছেন, অবশ্যই তাঁর সঙ্গে সৌজন্য বজায় রাখুন
ছবি: পেক্সেলস

কারণটা ভেবে দেখুন

অনেক কারণেই বন্ধুর জীবনসঙ্গীকে আপনি অপছন্দ করে বসতে পারেন। খুব সাধারণ একটি কারণ হতে পারে বঞ্চনার অনুভব। অর্থাৎ যদি আপনার মনে হয়, বন্ধুর জীবনে একজন জীবনসঙ্গী আসার কারণে আপনার বন্ধু আর আগের মতো করে আপনাকে সময় দিচ্ছেন না। তাঁর জীবনসঙ্গীটি একজন নিপাট ভালো মানুষ হলেও এই একটি কারণেই আপনার তাঁকে অপছন্দ হতে পারে।

আবার ধরুন, বন্ধুর জীবনসঙ্গী আপনার সঙ্গে এমন কোনো আচরণ করলেন, যা আপনার ভালো লাগল না। বিষয়টা তেমন গুরুতর না হলেও আপনার মন থেকে সম্মানবোধ হারিয়ে যেতে পারে। গুরুতর হলে তো কথাই নেই। কিংবা এমনও হতে পারে, আপনার বন্ধু প্রেমে অন্ধ হয়ে তাঁর সঙ্গীর এমন কোনো দোষ দেখতেই পাচ্ছেন না, যা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনেও পরবর্তী সময় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু আপনি ঠিকই তা অনুভব করতে পারছেন।

কালেভদ্রে ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না
ছবি: পেক্সেলস

কী করবেন

ঠান্ডা মাথায় কারণটা খুঁজে বের করার পর কারণ অনুযায়ী বেছে নিন আপনার করণীয়। সাদামাটা কারণ হলে নিজেকে বোঝান। তবে গুরুতর কোনো কারণ খুঁজে পেলে ওই ব্যক্তিকে বুঝতে আরও একটু সময় নিন। ক্ষতিকর চরিত্র বলে মনে হলে তা নিয়ে বন্ধুর সঙ্গে আলাদাভাবে আলাপ করুন। এমনটা হতেই পারে যে আপনার বন্ধু আপনার কথায় গুরুত্ব দিলেন না। উল্টো আপনার ওপর রাগ করলেন।

বন্ধু নিজের সঙ্গীর বিষয়ে আপনার বলা নেতিবাচক বিষয়টি গ্রহণ করতে না-ই চাইতে পারে। তাঁর আচরণটিকেও সম্মান করুন। জোরাজুরি করে তাঁকে এটা মানাতে বাধ্য করবেন না যে তাঁর জীবনসঙ্গী খারাপ মানুষ। বুঝিয়ে বলুন আপনার মনের কথা। আপনার কথায় যেন এটাই প্রকাশ পায় যে আপনি যা বলছেন, তা কেবল আপনার বন্ধুর ভালোর জন্যই। বন্ধু যতক্ষণ ওই ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে আছেন, অবশ্যই তাঁর সঙ্গে সৌজন্য বজায় রাখুন। তিনি যা-ই করুন না কেন, সম্মানসূচক আচরণ করুন। তবে গুরুতর কোনো কারণে তাঁকে একেবারেই সহ্য করতে না পারলে এমন কোনো সময় বন্ধুর সঙ্গে আড্ডা দিতে পারেন, যখন বন্ধুর সঙ্গে তাঁর জীবনসঙ্গী থাকে না। কালেভদ্রে ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হলেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।

বন্ধুর জীবনসঙ্গী নিয়ে কিছু বললে, বন্ধুই আপনার ওপর রেগে যেতে পারে
ছবি: পেক্সেলস

কী করবেন না

বন্ধুর জীবনসঙ্গী উপস্থিত থাকুন বা না থাকুন, সরাসরি তাঁর সমালোচনা করবেন না। দোষারোপ করে কিছু বলবেন না। অসম্মানসূচক শব্দ উচ্চারণ করবেন না। বরং তাঁর যে বৈশিষ্ট্য আপনি পছন্দ করতে পারছেন না, তা নিয়ে সহজভাবে কথা বলুন বন্ধুর সঙ্গে। আর তা ওই ব্যক্তির উপস্থিতিতে না বলাই ভালো।

বন্ধুর জীবনসঙ্গীর কারণে আপনি অসম্মানিত বোধ করেছেন, এমনভাবে বন্ধুর কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করবেন না।

অপছন্দ হলেও ওই ব্যক্তিকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন, এমনটা যেন প্রকাশ না পায়। যেমন ধরুন, বন্ধু বারবার তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণ করছেন আর আপনি প্রতিবারই কোনো না কোনো অজুহাতে তা এড়িয়ে যাচ্ছেন। এমনটা করা যাবে না।

বন্ধুকে এমন কোনো শর্ত দিয়ে বসবেন না, যাতে তিনি উভয়সংকটে পড়েন। জীবনসঙ্গী অথবা বন্ধুত্ব—এই দুয়ের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে, এমন পরিস্থিতিতে কাউকে না ফেলাই ভালো।

সূত্র: ভেরিওয়েলমাইন্ড, ভক্স