সঙ্গী কি পাসওয়ার্ড চাচ্ছে?
বৈবাহিক কিংবা সম্পর্কে আছেন, এমন মার্কিন নাগরিকদের ৬৭ শতাংশই সঙ্গীর সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত (যেমন সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের পাসওয়ার্ড) শেয়ার করেন। ওয়াশিংটিনভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি জরিপ থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৭ শতাংশ সঙ্গীর সঙ্গে নিজের ই–মেইল অ্যাকাউন্ট এবং ১১ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইল শেয়ার করে থাকেন।
সঙ্গীর সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করে নিজের ই–মেইল, ফেসবুকসহ অন্যান্য অ্যাকাউন্টে তাঁকে প্রবেশাধিকার দেয়াকে বিশ্বস্ততা অর্জনের একটা উপায় হিসেবে দেখে এই প্রজন্ম। অনেকে আবার সঙ্গীর নামের ও বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের সঙ্গে মিল রেখে নিজের পাসওয়ার্ড তৈরি করেন। কিন্তু সঙ্গীর সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করাটা কি আদৌ নিরাপদ?
সঙ্গীকে কি পাসওয়ার্ড দেবেন?
পাসওয়ার্ড শেয়ারিং সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ততার একটি নিদর্শন হিসেবে ধরা হলেও মনোবিজ্ঞানী এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ব্যাপারটিকে ‘চরম ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কেননা, একটা রোমান্টিক সম্পর্ক যেকোনো সময়ে শেষ হয়ে যেতে পারে। অথচ আপনার ই–মেইল, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগযোগমাধ্যম হুট করেই বন্ধ করে ফেলতে পারবেন না। সেগুলো বলা চলে আপনার আজীবনের সঙ্গী।
কোনো কারণে সম্পর্ক শেষ হলে বা বিচ্ছেদ হলে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ‘প্রাক্তন’ আপনার বা আপনাদের গোপন ছবি বা ভিডিওর নাগাল পেতে পারেন। সম্পর্ক ভেঙে গেলে আবেগের বশে সঙ্গীর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠার উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। এ ক্ষেত্রে, পাসওয়ার্ড জানা থাকলে তা আপনার জন্য হতে পারে হুমকির কারণ।
মনোবিজ্ঞানীরা যা বলছেন
সম্পর্কে একে অন্যের প্রতি আস্থা, বিশ্বস্ততা বুঝাতে নিজের পাসওয়ার্ড সঙ্গীকে দিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সম্পর্কে স্বাধীনতা এবং সীমারেখা থাকতে দেয়া ভালো। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেলি ক্যাম্পবেল বলেন, ‘সঙ্গীর কাছে যত বেশি আত্মপ্রকাশ করবেন, আপনি তত ভালো থাকবেন, সুখে থাকবেন। তবে, সবচেয়ে সুখী দম্পতির ভেতরেও কিছু গোপনীয়তা থাকে, রাখতে হয়।’
পাসওয়ার্ড শেয়ার করার পরেও যেভাবে নিজের গোপনীয়তা বজায় রাখবেন
সঙ্গীর সঙ্গে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা কিংবা একাধিক অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার—দুটোই ব্যক্তিগত নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল করে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সমাধানে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারেন। এতে যা হবে—
• প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড দেবে।
• প্রতিটি পাসওয়ার্ড ক্রিপ্টোগ্রাফিক্যালি নিরাপদে থাকবে।
• আপনার সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। সম্পর্কের ইতি ঘটলে আপনি পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করে অ্যাকাউন্টগুলো থেকে সঙ্গীর প্রবেশাধিকার রোধ করতে পারবেন।
সূত্র: বেস্ট রিভিউজ