এই ৫ ভুল কারণে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন না তো
পৃথিবীর বুকে নতুন একটি প্রাণের আগমন অগুনতি পরিবারের জন্য চরম আকাঙ্ক্ষিত একটি মুহূর্ত। সন্তানকে সঠিকভাবে লালনপালন করা কিন্তু খুব সহজ কাজ নয়। সন্তানের অভিভাবক হওয়ার অর্থ বিশাল এক দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া। একজন নারী গর্ভধারণের আগে থেকেই তাঁর এবং তাঁর জীবনসঙ্গীর বেশ কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। সন্তান প্রসঙ্গে দুজনের খোলামেলা আলাপও করা চাই। সন্তান বিষয়ক ভুল ভাবনা থেকে, প্রস্তুতি ছাড়াই অনেকে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলেন। শারীরিক, মানসিক, আর্থিক এবং আবেগীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন না করে সন্তান নেওয়া হলে পরে সন্তান পালনের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পরবর্তীতে সন্তানের বিকাশে বাধার সৃষ্টি হতে পারে, সন্তান মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। এমন পাঁচটি ভুল ভাবনার ব্যাপারে জেনে নিন আজ।
১. মা-বাবা চাচ্ছেন, তাই
এ দেশের বহু অভিভাবক নিজেদের সন্তানদের বিয়ের পর নাতি-নাতনির মুখ দেখার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। আবেগীয় প্রতারণার আশ্রয়ও নেন অনেকে। কেউ কেউ এমনটাও বলেন যে তাঁদের মৃত্যু হলে নাতি-নাতনির মুখ দেখার সাধ অপূর্ণ রয়ে যাবে। তাই দম্পতির প্রস্তুতি না থাকা সত্ত্বেও মা-বাবা কিংবা শ্বশুর-শাশুড়ির চাপে সন্তান নিয়ে ফেললে স্বাভাবিকভাবেই পরে মুশকিলে পড়তে পারেন। মনে রাখতে হবে, সন্তান লালনপালনের সময় দাদা-দাদি বা নানা-নানি দারুণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারলেও সন্তানের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য তার মা-বাবার সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি।
২. দাম্পত্য সমস্যার সমাধানে
অনেকেই মনে করেন, সন্তানের জন্ম হলে দাম্পত্যের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এতে বুঝি স্বামী-স্ত্রীর একের প্রতি অন্যের ভালোবাসা বাড়বে; দূরত্ব ঘুচবে। বাস্তবতা হলো সন্তানের জন্ম হলেও কোনো কোনো দম্পতির দূরত্ব কমে না। বরং অসুস্থ দাম্পত্য সম্পর্কের ফসল যে সন্তান, তার বিকাশের পথে থাকে নানান বাধা।
৩. নিজের নারীত্ব বা পুরুষত্বের পরিচয় দিতে
বিয়ের কয়েক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কোনো দম্পতি সন্তান না নিলে, চারদিকে শুরু হয়ে যায় ফিসফাস। তাহলে কি বউয়ের কোনো ‘সমস্যা’ আছে? না কি জামাইয়ের ‘দোষ’? এ জাতীয় প্রশ্ন ভেসে বেড়াতে থাকে বাতাসে। কেবল নিজের নারীত্ব বা পুরুষত্বের পরিচয় দিতে গিয়ে তাড়াহুড়া করে সন্তান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়াও ঠিক নয়।
৪. ‘আমরা অন্যদের চাইতে আলাদা হতে চাইনি’
এ দেশের অধিকাংশ দম্পতি বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করেন। অলিখিত নিয়মকানুনের বাইরে গেলেই তো এদেশে নানাবিধ সামাজিক চাপ সামলাতে হয়। ‘সুসংবাদ কবে পাচ্ছি’–জাতীয় প্রশ্ন যেন রীতিমতো তাড়া করে বেড়ায় দম্পতিকে! এই চাপ সামলাতে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ একেবারেই অনুচিত।
৫. ‘আমার অপূর্ণ স্বপ্নে পূর্ণতা দেবে আমার সন্তান’
নিজের জীবনের অপূর্ণ স্বপ্নের বোঝা সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার মতো মারাত্মক ভুলও করে বসেন অনেকে। সন্তানের জন্ম হলে সে তার নিজের জীবনের স্বপ্ন এবং লক্ষ্য পূরণের দিকেই এগিয়ে যাবে—এই সহজ, স্বাভাবিক সত্যটাকে অস্বীকার করে বসেন বহু অভিভাবক। নিজের অপূর্ণ স্বপ্নের বোঝার কারণেই কিন্তু সন্তানের জীবন চরম হতাশায় ডুবে যেতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া