কীভাবে বুঝবেন কেউ মিথ্যা বলছে
সত্য কখনো চাপা থাকে না। মিথ্যা একসময় বের হয়েই আসে। তবে মিথ্যা বলে কিন্তু প্রাথমিকভাবে অনেক পরিস্থিতিই অনেকে সামলে নেন। কারও মিথ্যা ধরতে হলে আপনাকে আগে তাঁকে ভালোমতো জানতে হবে।
সত্য কখনো চাপা থাকে না। মিথ্যা একসময় বের হয়েই আসে। তবে মিথ্যা বলে কিন্তু প্রাথমিকভাবে অনেক পরিস্থিতিই অনেকে সামলে নেন। মিথ্যার ভিড়ে সত্যকে খুঁজতে গিয়ে মুশকিলেও পড়তে হয় আমাদের প্রায়ই। তবে কেউ কথা বলার সময় সতর্কতার সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে তাঁকে খেয়াল করলে অনেক ক্ষেত্রেই বোঝা যায়, তিনি সত্য বলছেন, না মিথ্যা।
মুখ আর দেহভঙ্গি এ ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। চোখ, কণ্ঠস্বর আর কথার গতি খেয়াল করুন। অবশ্য কেবল একটি জিনিস দিয়ে কাউকে ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দেওয়া যাবে না। সার্বিকভাবে তাঁকে খেয়াল করুন। মিথ্যার কিন্তু এমন কিছু বৈশিষ্ট্যও রয়েছে, যা কোনো কোনো মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। তাই কারও মিথ্যা ধরতে হলে আপনাকে আগে তাঁকে ভালোমতো জানতে হবে। এসব বৈশিষ্ট্যের কোনোটি যদি তাঁর জন্য স্বাভাবিক হয়ে থাকে, তাহলে আপনার সন্দেহটা একেবারেই অমূলক হয়ে দাঁড়াবে।
অসামঞ্জস্য
একটা মিথ্যা বললে সাধারণত পরপর অনেকগুলো মিথ্যা বলতে হয়। মিথ্যার ফুল দিয়ে মালা বানানো সহজ নয়। কেননা, এর ভেতর ফাঁকফোকর থেকেই যায়। মিথ্যার পর মিথ্যা সাজানো কঠিন। তাই মিথ্যায় থাকে নানা অসংগতি। কথার সংগতির পাশাপাশি আরও খেয়াল করুন, কথার সঙ্গে ওই ব্যক্তির মুখ, দেহভঙ্গি এবং কণ্ঠের সামঞ্জস্য থাকছে কি না। আঙুলের অস্থিরতা লুকাতে কেউ কেউ নিজের হাত দুটোকে নিজের পেছনেও লুকিয়ে ফেলতে পারেন। কেউ আবার গোটা শরীরের নড়াচড়াই কমিয়ে দিতে পারেন। সতর্কতা অবলম্বনে হাত-পা গুটিয়ে নিতে পারেন মিথ্যা বলার সময়।
মুখভঙ্গি
কেউ হয়তো আপনার সঙ্গে হাসিমুখে মিথ্যা বলছেন। নিজের মিথ্যাসংক্রান্ত দুশ্চিন্তা ঢেকে রাখার চেষ্টা তো তিনি করবেনই। তবে বাস্তবতা হলো, মানসিক চাপের প্রভাব পড়তে পারে মুখে। অস্বাভাবিকভাবে লালচে হয়ে যেতে পারে কারও গাল। তা ছাড়া হাসিমুখের মাঝেও এমন কিছু ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মুখভঙ্গি রয়ে যায়, যা তীক্ষ্ণভাবে খেয়াল করলে চোখে পড়ে, ধরা পড়ে যায় অসংগতি। মিথ্যা বলতে গিয়ে একজন মানুষের মনে একই মুহূর্তে নানান ভাবনা চলে। অর্থাৎ তাঁর মস্তিষ্ক স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করে। এতে কারও কারও নাক ফুলে ওঠে, কেউ আবার ঠোঁট খুঁটাতে থাকেন।
চোখ
মিথ্যাবাদী আপনার চোখের দিকে স্বাভাবিকভাবে তাকাতে পারবেন না। মিথ্যা বলার সময় কেউ কেউ অস্বাভাবিক দ্রুতভাবে চোখের পলকও ফেলেন।
হাসি
হাসি কিন্তু কেবল মুখের সম্পদ নয়। হাসে চোখজোড়াও। কেউ হেসে কথা বললে খেয়াল করুন, তাঁর চোখ হাসছে কি না। ভয়, রাগ বা বিরক্তি চাপা দিয়ে হাসলে তা ধরে ফেলা সহজ।
কথার ভঙ্গি এবং শ্বাসপ্রশ্বাস
কেউ কথা বলার সময় তাঁর কণ্ঠ এবং কথার গতি খেয়াল করুন। খেয়াল করুন তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসও। মিথ্যা বলার সময় এসবে বেশ খানিকটা পরিবর্তন চলে আসে। কেউ ঘন ঘন শ্বাস নেন, কেউ দ্রুত কথা বলেন। কারও ক্ষেত্রে ঘটে উল্টোটাও।
প্রশ্নে প্রতিক্রিয়া
সহজ ও স্বাভাবিক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কেউ অস্বাভাবিক আচরণ করছেন কি না, লক্ষ করুন। মিথ্যা বলার সময় অনেকেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে থতমত খেয়ে যান।
সূত্র: রিডারস ডাইজেস্ট