দুধ খেলে ওজন বাড়ে কেন

ওজন কমাতে হলে আপনাকে ক্যালরি গ্রহণ সীমিত রাখতেই হবে। সেই হিসেবে স্নেহ পদার্থ অর্থাৎ, তেল ও চর্বিজাতীয় খাবারের পরিমাণ কম রাখার পরামর্শই দেওয়া হয়। দুধেও থাকে এমন উপাদান। তাহলে কি ওজন কমাতে চাইলে দুধ এবং দুধের তৈরি খাবারও এড়িয়ে চলতে হবে? কিংবা বেছে নিতে হবে ননিবিহীন বা কম চর্বি আছে এমন দুধ?

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলেও এক গ্লাস দুধ থাকা ভালো রোজকার খাদ্যতালিকায়
ছবি: প্রথম আলো

দুধ প্রাণিজ আমিষের দারুণ উৎস। এ হলো এমন আমিষ, যা থেকে আমরা অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের সব কটিই পেয়ে থাকি। আর দুধে থাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম। সুস্থতার জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য। শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের জোগান কোথা থেকে আসে, জানেন? দেহের অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে তখন হাড়ের ভেতরকার ক্যালসিয়াম বেরিয়ে আসে। এভাবে হয় হাড়ক্ষয়। হাড় মজবুত ও সুস্থ রাখতে তাই ক্যালসিয়ামের অভাব হতে দেওয়া যাবে না। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি যত ধরনের খাবারের পরিমাণই কমান না কেন, অন্তত এক গ্লাস দুধ রাখুন রোজকার খাদ্যতালিকায়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে রোজ কীভাবে কতটা দুধ খাওয়া উচিত, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লায়েড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।

দুধ কিংবা দুধের তৈরি খাবার

দুধ প্রাণিজ আমিষের দারুণ উৎস
প্রথম আলো

দুধে থাকা স্নেহ পদার্থের কারণে যে আপনার ওজন বেশ বেড়ে যাবে, তা কিন্তু নয়। আপনাকে বরং খেয়াল রাখতে হবে দুধ বা দুধের তৈরি খাবারের সঙ্গে যাতে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ না করেন। দুধে চিনি মিশিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। দুধের তৈরি মিষ্টান্নও এড়িয়ে চলুন। দুধের তৈরি কিছু খাবারে শর্করাজাতীয় উপাদান যোগ করা হয়, যেমনটা হয় পায়েস বা সেমাইয়ে। এগুলো এড়িয়ে চলুন। বরং দুধের তৈরি অন্যান্য খাবার খেতে পারেন, যাতে ডিম বা ফল যোগ করা হয়। কম মিষ্টি দিয়ে তৈরি পুডিং বা ডিমের জর্দা খেতে পারেন, যাতে দুধ দেওয়া হয়। চিনি ও কাস্টার্ড পাউডারের ব্যবহার ছাড়া ডিম, দুধ আর নানান রকম ফল দিয়ে কাস্টার্ড তৈরি করতে পারেন; কাস্টার্ড ঘন করতে ডিমের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারেন।

কাজে আসবে টক দইও

ওজন কমাতে চাইলে আপনি টক দইও খেতে পারেন। সালাদ ড্রেসিং হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন টক দই। কেবল টক দই মেশানো সবুজ আপেল দিয়েই হতে পারে আপনার বিকেলের নাশতা। তাতে ক্ষুধাও মিটবে, পুষ্টিও পাবেন, আবার বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকিও থাকবে না। টক দই দিয়ে লাচ্ছি বানাতে পারেন, তবে চিনি মেশাবেন না যেন।

ওজন কমাতে ননিবিহীন দুধ সবার জন্য জরুরি নয়

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে আপনি এই এত সব খাবার খেতে পারেন দুধের ভেতর থাকা ননির ভাবনা না ভেবেও। দুধের সর বা ননি বাদ না দিয়েও আপনি সারা দিনের ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে পারবেন। তবে যাঁদের ওজন হয়ে গেছে খুব বেশি, অর্থাৎ, যাঁরা অতিরিক্ত স্থূল হয়ে পড়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ননিবিহীন বা লো ফ্যাট আছে, এমন দুধ বেছে নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।