তারুণ্য ধরে রাখবে চেনা পরিচিত এই ১০ খাবার
সুস্থ, সুন্দরভাবে কে না বাঁচতে চায়! তারুণ্য ধরে রাখতে চাওয়া মানুষের আদিম আকাঙ্ক্ষা। তাই কোন খাবারে বার্ধক্যরোধী উপাদান আছে, এগুলো খুঁজে খুঁজে বের করে ‘প্রোফাইলিং’ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নালে। হেলথলাইন অনুসারে জেনে নেওয়া যাক এমন দশ খাবারের কথা, যেগুলো তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে আর বাংলাদেশে সহজেই পাওয়া যায়।
১. বেদানা, ডালিম
মার্কিন পুষ্টিবিদ ও লেখক মার্ক হাইম্যানের মতে, বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ফল। কেননা, বেদানা ইউরোলিথিন এ–তে ভরপুর। আর উপাদানটি বার্ধক্যের গতি কমিয়ে দেওয়ার জন্য খুবই উপযোগী।
২. ডার্ক চকলেট
বিদেশ থেকে কেউ এলে তাঁর লাগেজ খুললে এ জিনিসটা পাওয়া যাবেই। ৭০-৮৫ ভাগ কোকোয়াসমৃদ্ধ চকলেটকেই বলে ডার্ক চকলেট। সুপারশপগুলোতে ঢুঁ মারলেও মিলবে এই ডার্ক চকলেট। এতে আছে আঁশ, লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম। দিনে অল্প পরিমাণ ডার্ক চকলেট খেলেও ৫০ ভাগ পর্যন্ত হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে। ডায়াবেটিস আর ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে। আর কমে বিষণ্নতা। মন ভালো রাখতেও তাই খেতে পারেন এক টুকরা ডার্ক চকলেট। স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে।
৩. পালংশাক
রাস্তার ধারে মাত্র ১০ টাকায় এক আঁটি পালংশাক কিনতে পাওয়া যায়। আর এই শাকের গুণের শেষ নেই। অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ পালংশাকের মানসিক চাপ কমাতে, চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ও ক্যানসার প্রতিরোধে নামডাক আছে।
৪. টমেটো
টমেটো এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। টমেটোতে রয়েছে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের গুণ। সূর্যের প্রতি সংবেদনশীলতা কমাতেও সহায়তা করে টমেটো। ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ব্রণ কমায়। ত্বক ভালো রাখতে নিয়মিত কাঁচা টমেটো (সালাদ), টমেটোর স্যুপ বা তরকারি খেতে পারেন।
৫. মিষ্টি আলু
বিটা ক্যারোটিন, যেটা ভিটামিন এ–তে রূপান্তরিত হয়, সেটার সবচেয়ে ভালো উৎসগুলোর একটি মিষ্টি আলু। বয়স বাড়তে থাকলে চোখ, ত্বক ও মস্তিষ্কের অনেক সমস্যা বাড়ে, যা কমাতে সাহায্য করে মিষ্টি আলু।
৬. পেঁপে
পেঁপে একটা সুপারফুড। বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন আর খনিজ উপাদানে পরিপূর্ণ এই ফল। মানুষের শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে পেঁপে দারুণ কার্যকর। কাঁচা পেঁপেতে গাজর বা টমেটোর চেয়েও অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস থাকে।
৭. বাদাম
প্রায় সব ধরনের বাদামেই কম-বেশি একই উপাদান থাকে। বিশেষ করে ভিটামিন ই-এর বিশ্বস্ত উৎস বাদাম। সব ধরনের বাদামের অ্যান্টি-এজিং ক্ষমতা আছে। ত্বকের টিস্যু সারিয়ে তোলা, নতুন টিস্যু উৎপাদন ও ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য বাদামের জুড়ি নেই। অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয় বাদাম।
৮. ব্রকলি
দেশে এখন ব্রকলি বেশ সহজলভ্য। ব্রকলি ভিটামিন সি, কে, বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফাইবার, ফোলেট, ক্যালসিয়ামে পরিপূর্ণ। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ব্রকলির বিকল্প মেলা ভার। আসলে কপিজাতীয় খাবারগুলো বয়স বাড়লেও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ধরে রাখে। এ ছাড়া ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও দারুণ কপিজাতীয় খাবার। তবে এগুলোর ভেতর সবচেয়ে ভালো ব্রকলি।
৯. লেবু জাতীয় ফল
লেবু, কমলা, মাল্টা—এসবই এর অন্তর্ভুক্ত। তবে এই শ্রেণির ফলগুলোর ভেতর জাম্বুরা সবচেয়ে ভালো। জাম্বুরার ম্যাগনেশিয়াম উত্তেজনা কমিয়ে শান্ত থাকতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আঁশ খাবার হজমে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ক্ষতিকর ফ্যাট আর কোলেস্টেরল পোড়ায়।
১০. গ্রিন টি
আপনাদের সবার বাসায়, অফিসে হাতের কাছেই আছে। কিন্তু কেউ পারতপক্ষে খাই না। সকালটা এক কাপ গ্রিন টিকে সঙ্গী করে শুরু করতে পারলে আপনার অনেক ত্বকের ও শারীরিক সমস্যায় পড়তেই হবে না। গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। শরীর চাঙা রাখে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, ক্যানসার প্রতিরোধ করে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ছাড়া গ্রিন টিতে ক্যাটেচিন নামের একটি উপাদান থাকে, যা ভিটামিন ই এবং সি–এর থেকেও বেশি শক্তিশালী। গ্রিন টি স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটায় এবং তথ্য সংরক্ষণে সাহায্য করে।
সূত্র: হেলথলাইন ও ক্লিয়ার স্কিন ক্লিনিক
photo credit: pexels