বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে অ্যাপ বানিয়েছেন ইব্রাহিম

ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিমের বানানো অ্যাপটির নাম বাজারদর

‘চালের দাম..., ডালের দাম..., ডিম...টাকা হালি, কেউ বেশি চাইলে শিক্ষার্থী অথবা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন’—৫ আগস্টের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ রকম একটি পোস্ট মো. ইব্রাহিম মোল্লার চোখে পড়ে। ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের এই শিক্ষার্থী তখন থেকেই ভাবতে শুরু করেন, যদি এক প্ল্যাটফর্মেই দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম পাওয়া যেত, কেমন হতো?

এভাবেই শুরু।

দুই সপ্তাহের প্রচেষ্টায় ‘বাজারদর’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেন ইব্রাহিম। এর মাধ্যমে বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য এবং এই মূল্য কখন হালনাগাদ করা হয়েছে, তা সহজেই জানা সম্ভব। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে যোগাযোগের একটি নম্বরও দেওয়া আছে। অ্যাপটি থেকে কেবল ক্রেতাই নন, বিক্রেতাও সুবিধা পাবেন, জানালেন ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘পরিবেশকেরা অতিরিক্ত দামে পণ্য সরবরাহ করতে চাইলে দোকানদাররাও প্রতিবাদ করতে পারবেন। বলতে পারবেন, অ্যাপের চেয়ে বেশি দামে কেউ কিনছে না। এর বেশি আমি দিতে পারব না।’

আরও পড়ুন

এভাবে বাজার সিন্ডিকেটও ভাঙা সম্ভব, মনে করেন ইব্রাহিম মোল্লা। তাঁর মতে, ‘সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য নানাভাবেই তো চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণেই হোক বা ক্ষমতাশালীদের কারণে হোক, সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এবার উল্টোভাবে কাজটা করা উচিত। তৃণমূল পর্যায় থেকে সিন্ডিকেটের বিপক্ষে দাঁড়াতে চাই। কারণ, জনগণ বেশি দামে না কিনলে দোকানদার বেশি দাম রাখতে পারবেন না। অথবা সেই পণ্য দোকানে রাখবেন না। তখন পরিবেশকেরা চাপে পড়বেন, ঊর্ধ্বতনকে জানাতে বাধ্য হবেন। ফলে দাম কমে আসবে।’

বিনা মূল্যেই সরকারকে অ্যাপটি উপহার দিতে চান এই তরুণ। কারণ হিসেবে বলেন, ‘আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অ্যাপটি চালু হলে নিজেও কম মূল্যে কিনতে পারব। তাই বলা যায়, কিছুটা ব্যক্তিগত; কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটা দিতে চাইছি।’

অ্যাপটি ব্যবহারকারীর কোনো তথ্য নেয় না। এতে বিজ্ঞাপনের ঝুটঝামেলা নেই। ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়া অফলাইনেও ব্যবহারের সুযোগ আছে। ইব্রাহিম মোল্লা উল্লেখ করেন, ‘আমরা তরুণেরা প্রযুক্তিগত বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখি। কিন্তু যাঁরা বয়স্ক বা প্রান্তিক এলাকার মানুষ, তাঁরা এসব বোঝেন না। অ্যাপের ব্যবহারবিধি তাই সহজ রাখার চেষ্টা করেছি, যেন তাঁদেরও সমস্যা না হয়।’

বর্তমানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন এই শিক্ষার্থী। বিভিন্ন জায়গায় মেইল-চিঠি চালাচালি করছেন। সবার সহায়তা পেলে অ্যাপটি আরও উন্নত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।