নিজের চেনা সুর-সংগীতের বাইরের গান শোনার দিন আজ
সংগীতপ্রেমী অনেক মানুষ রক, মেটাল বা পপ ধারার কোনো গান শুনলে কানে আঙুল দিতে চান। গান-বাজনার বারোটা বেজেছে, সর্বনাশ হয়েছে শুদ্ধসংগীতের, অপসংস্কৃতিতে ভরে গেছে সংগীতাঙ্গন—কণ্ঠে ঝরে পড়ে এমন সব আফসোসবাক্য। এটি হয় মূলত নতুনকে গ্রহণ করতে না পারার কারণেই। নিজের চেনা বলয়ের বাইরেও যে জগৎ আছে, শব্দ আছে, সুর আছে তা তাঁরা মানতে চান না।
লালন, হাসন, রবীন্দ্র, নজরুল, হেমন্ত, মান্না, ঠুমরি, খেয়াল, গজল, কাওয়ালি, টপ্পা, শ্যামা, ব্লুজ, জ্যাজ—তবলা, হারমোনিয়াম কিংবা গিটারের ঝংকারে কতজন কতভাবে যে তুলে এনেছেন চেনা চারপাশ, অচেনা অনুভূতি, ব্যক্তিগত দহন, আনন্দ, প্রশংসা, প্রতিবাদ; তার ইয়ত্তা নেই। ফলে কোনো গান বা সুর নিজের কানে বেমানান মনে হলেই শ্রবণযোগ্য নয়, এমন রায় দেওয়ার সুযোগ নেই। গ্রহণ করার মতো উদার হৃদয় থাকলে অদ্ভুত গানেও খুঁজে পেতে পাওয়া যেতে পারে আনন্দ। বদলে যাতে পারে চিন্তার গতিপথ।
নিজের চেনা সুর-সংগীতের বাইরের গানকে ইংরেজিতে বলা হচ্ছে ‘স্ট্রেঞ্জ মিউজিক’। একটু তাচ্ছিল্যের ঢঙে অনুবাদ করলে বলা যায় ‘উদ্ভট সংগীত’ বা ‘অদ্ভুত সংগীত’। উদ্ভট গানের সুর বা কথা কখন কোন শ্রোতাকে অদ্ভুত মুগ্ধতায় ভাসিয়ে দেয়, কে জানে!
আজ ২৪ আগস্ট, আন্তর্জাতিক উদ্ভট বা অদ্ভুত সংগীত দিবস (ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রেঞ্জ মিউজিক ডে)। আমেরিকার সংগীতশিল্পী ও সুরকার প্যাট্রিক গ্র্যান্ট এই দিবসের প্রচলন করেন। ১৯৯৭ সালের আজকের দিনে তাঁর প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ২০০০ সালে স্ট্রেঞ্জ মিউজিকের ধারণাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে গানের বিখ্যাত রেকর্ড কোম্পানি ‘স্ট্রেঞ্জ মিউজিক ইনকরপোরেট’। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন শিল্পী ও সুরকারদের মধ্যে স্ট্রেঞ্জ মিউজিকের ধারণা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০১২ সালে প্যাট্রিক গ্র্যান্ট নিউইয়র্কের সংগীতশিল্পীদের নিয়ে আয়োজন করেন ইন্টারন্যশনাল স্ট্রেঞ্জ মিউজিক ডে পারফরম্যান্স সন্ধ্যা। সংগীতের ক্ষেত্রে প্যাট্রিকের মূলমন্ত্রই হলো ‘পূর্বসংস্কার না রেখে উদার হৃদয়ে গান শুনুন।’
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে