আপনি কি অতিরিক্ত পরোপকারী? কখন প্রয়োজন স্বার্থপর হওয়া?
অন্যের প্রতি সদয় আচরণ নিঃসন্দেহে দারুণ গুণ। তবে কোনো কিছুরই বাড়াবাড়ি ভালো নয়। অন্যের জন্য যদি আপনি মাত্রাতিরিক্ত ভাবেন কিংবা অন্যদের প্রতি বাড়াবাড়ি রকমের দয়ালু হতে যান, তাহলে একসময় এই গুণই আপনার মাথায় বিশাল এক বোঝার মতো চেপে বসবে। তাতে নিজের শরীর ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই জীবনে সবকিছুরই একটা ভারসাম্য রাখতে হবে।
অন্যের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি যত্ন নিতে হবে নিজেরও। পরোপকার ও বিনয়ের একটা সীমারেখা টানতে হবে নিজেই। তবে এই সীমারেখা টানার বিষয়টা কিন্তু সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। আদতে সবাই তো আর অতটা পরোপকারী বা বিনয়ীও হয় না। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে কি আপনার জীবনে এ রকম কোনো সীমারেখা প্রয়োজন? এটি জানার জন্য আগে বুঝতে হবে, আপনি অতিরিক্ত পরোপকারি বা বিনয়ী কি না। এর পাঁচটি ‘লক্ষণ’ জেনে নিন আজ।
ক্ষতিকর আচরণকে বারবার মেনে নেওয়া
কেউ আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে আপনাকেও যে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে হবে, তেমনটা নিশ্চয়ই নয়। তবে বারবার ক্ষমা করে দেওয়াও বাস্তবসম্মত নয়, যখন অন্যের জন্য আপনার ক্ষতি হচ্ছে, তখন বরং ভদ্রভাবেই প্রতিবাদ করুন।
বিনয়ই যখন আপনার প্রধান পরিচয়
সবাই যদি ধরেই নেয় যে আপনি বিনয়ী বা পরোপকারী, তাহলে কিন্তু মহা মুশকিল! কারণ, এ রকম পরিস্থিতিতে সুবিধাভোগী মানুষেরা আপনার কাছ থেকে সব ধরনের সুবিধা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। আর সেসব দাবিদাওয়া মেটাতে গিয়ে আপনার নিজের কাজই বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সব মিলিয়ে একসময় উপকার করা কিংবা বিনয়ী আচরণ করাটাই আপনার জন্য চাপের হয়ে দাঁড়াতে পারে।
নিজের প্রয়োজনের ওপরে অন্যদের স্থান দেওয়া
নিজের খাওয়া, বিশ্রাম, বিনোদন—সব কিছুকেই যদি আপনি অন্য কারও না কারও প্রয়োজনে বিসর্জন দিতে থাকেন, তা কিন্তু আপনার জন্যই ক্ষতিকর হবে। সুস্থ, সুন্দর জীবনের জন্য নিজের ভালোটাও বিবেচনায় রাখুন।
অন্যের অনুভূতির জন্য নিজেকে সব সময়ই দায়ী মনে করা
প্রতিটি মানুষই নিজের জগতে বহু কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন। প্রত্যেককে খুশি রাখা আপনার দায়িত্ব নয়। আপনি কোনো ব্যক্তিকে কোনো একটা কিছু করে না দেওয়ায় তিনি যদি কষ্ট পান, সেটির জন্য নিজেকে দায়ী মনে করা ঠিক নয়। সবাইকে খুশি রাখতে হলে যে নিজের খুশিটাই হারিয়ে যাবে একসময়!
অন্যকে ভালো রাখতে আত্মসম্মান হারানো
সব সময় ‘ইগো’ বজায় রাখা নিঃসন্দেহেই ভালো আচরণ নয়। কিন্তু আবার নিজের ব্যক্তিত্ব একেবারে হারিয়ে ফেলাও ঠিক নয়। ধরা যাক, কেউ আপনার ওপর রেগে আছেন। এখন আপনি যদি তাঁর সঙ্গে কথা শুরুর আগে অনুমতি চাইতে যান, ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়, বলুন তো? তিনি যদি আপনার অফিসের ঊর্ধ্বতন কেউ হন কিংবা আপনার অভিভাবক বা গুরুজন হন, তাহলে অবশ্য ভিন্ন কথা। কিন্তু এর বাইরে অন্য কারও কাছে কিন্তু এভাবে অনুমতি চাওয়ার প্রয়োজন নেই; বরং ভুল–বোঝাবুঝি মেটানোর জন্য সরাসরি বলে দিন, আপনি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া