‘হাজারটা অর্থপূর্ণ শব্দের চেয়ে একটি শক্ত আলিঙ্গন অনেক বেশি শক্তিশালী।’ মার্কিন লেখক অ্যান হুডের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত করার সুযোগ নেই। আলিঙ্গন অব্যর্থ ওষুধ। রোগজর্জর মৃতপ্রায় সম্পর্ককে একলহমায় সারিয়ে তুলতে পারে। কেবল মনের অসুখের কথাই বা বলি কেন। শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রেও আলিঙ্গন দারুণ উপকারী। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত প্রিয় মানুষকে জড়িয়ে ধরলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শরীর থেকে অক্সিটোসিন হরমোন নির্গত হয়, যা বিষণ্নতা ও নিঃসঙ্গতা দূর করে। ভালো থাকে হৃদ্যন্ত্র।
একটা নিবিড় আলিঙ্গন অনেকগুলো অব্যক্ত অনুভূতির সমন্বিত প্রকাশ। বিপুল আনন্দে কিংবা অসহায়ত্বে, ঘৃণায় বা মুগ্ধতায়, হাসিতে বা কান্নায়—জীবনের যেকোনো অবস্থায় প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরলে অনেক হিসাবই সহজ হয়ে যায়। জীবনের জটিল সমীকরণও মুহূর্তে মিলিয়ে দেয় একটি আলিঙ্গন। আলিঙ্গন ব্যাপারটি আমাদের দৈনন্দিন অনুভূতির সঙ্গে সমান্তরালে বাস করে। বাড়ি থেকে যাচ্ছেন দূরে কোথাও কিংবা ফিরে এলেন বহুদিন পর—সে সময় মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরার যে অনুভূতি, তার কি তুলনা হয়! চলে যাচ্ছে একান্ত প্রিয় মানুষ, কিছুদিনের জন্য কিংবা জীবন থেকে যাচ্ছে চলে একেবারে। শেষবারের মতো প্রবল আবেগে জড়িয়ে ধরছেন তাকে। এই অনুভূতির তরজমা করতে পারে, পৃথিবীতে এমন কোনো ভাষা কি আছে! চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে আপনার কাছে এসেছে কোনো কাছের মানুষ। তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে ঘুরে দাঁড়ানোর যে সাহস, যে ভরসা সে পাবে, তার কি কোনো ব্যাখ্যা হয়! আলিঙ্গন মনের ভয় দূর করে। আলিঙ্গনে রাখা উষ্ণ বুক নির্ভরতার অফুরন্ত উৎস।
আজ ৩ ডিসেম্বর ‘লেটস হাগ ডে’ বা ‘চলো আলিঙ্গন করি’ দিবস। দিবসটির উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। একটি সূত্রমতে, কেভিন জ্যাভরনি নামক একজনের মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হয়। দারুণ এই দিবস নানাভাবে পালন করা যেতে পারে। যার সঙ্গে আছে মান-অভিমান, ঝগড়া-বিবাদ, সব ভুলে আজ তাকে জড়িয়ে ধরুন।
ন্যাশনাল টুডে অবলম্বনে