বেত–বাঁশ মানেই এখন কম দামি আসবাব নয়
চিরাচরিত গ্রামবাংলার মানুষের নিত্যদিনের ব্যবহারে বরাবরই ছিল বাঁশ ও বেতের সরঞ্জাম। পড়ন্ত বিকেলে বাড়ির উঠানে নারীদের যেমন ছিল বেতের শীতল পাটি তৈরির হুল্লোড়, অন্যদিকে পুরুষেরা বাঁধতেন মাছ ধরার জন্য বেতের তৈরি পলো। শহুরে জীবনে এখন সেই শীতল পাটি বা মাছ ধরার পলোর প্রয়োজন না থাকলেও এর ব্যবহারে এসেছে ভিন্নতা। আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতশিল্প দিয়েই অন্দর সাজাতে পারেন ভিন্নতর উপায়ে। বাঁশ ও বেতের সোফা, ডিভানের আর মোড়ার কদর এখনো রয়েছে আগেরই মতো।
খাটের হেড সাইডে উঠে আসছে শীতল পাটির বুনন। তবে বেতের তৈরি শীতল পাটি এখন শুধু বিছিয়ে বসার কাজেই লাগছে, তা নয়। নানা মোটিফে বোনা শীতল পাটি দেয়ালজুড়ে ঝুলিয়েও রাখছেন অনেকে।
মাছ ধরার পলো বলুন বা মাছ রাখার ঝুড়ি, শহরে কেউ মাছ না ধরলেও, আলো ধরার সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বেতের তৈরি ল্যাম্পশেড। শুধু বাড়ির অন্দরেই নয়, যেকোনো বিয়ের অনুষ্ঠান, রাস্তা সাজানো, রেস্তোরাঁ সাজানো কিংবা ভেন্যু ডেকোরেশনে বেতের ঝুড়ি, পলো, চালনি উঠে আসছে আলোকসজ্জার অংশ হিসেব। এ ছাড়া বিভিন্ন আকারে, বিভিন্ন ডিজাইনে নিত্যনতুন পেন্ডেন্ট ল্যাম্প বা ওয়াল লাইটেও বাড়ছে বেতের ব্যবহার।
এ তো গেল সাজসজ্জার ধরন। নিত্য ব্যবহার ঘরের নানা সরঞ্জামেও ফিরছে বেতের টিস্যু বাক্স, গয়নার বাক্স, খাবার রাখার ট্রে, কাপড় রাখার স্টোরেজ থেকে শুরু করে নানা কিছু। বাঁশের চিকের পর্দা অন্দরে ভিন্ন মাত্রাই আনে না। এর ফাঁক গলে সূর্যের তির্যক আলো মৃদু আলো হয়ে যেমন ঘরে আসে, তেমনি বাতাসও চলাচল করতে পারে। আবার ধরুন বারান্দা বা ছাদের জায়গাটাতেও অনেকে রাখেন পারেন বেতের চেয়ার আর টেবিল। এমনকি বারান্দার গাছগুলোর জন্য বাঁশ বেতের প্লান্টারও রয়েছে নানা ধরনের।