আনন্দ উদ্যাপনের সময় যে কাজগুলো করতে নেই
বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়া মানুষ কখনো কখনো হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে। আবেগ বা উত্তেজনার বশে এমন কাজ করে বসে, একজন মানুষের যা কখনোই করা উচিত না। তা সে পরীক্ষার দুর্দান্ত ফলাফলেই হোক, খেলার মাঠের জয়েই হোক কিংবা হোক জাতীয় জীবনের কোনো অর্জনে। বিগত দুই দিনে এমন কিছু দৃশ্য চাক্ষুষ করার অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে, যেগুলোর অবতারণা কোনো মানুষেরই করা উচিত না। জেনে নেওয়া যাক, যেকোনো উদ্যাপনে কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা সবার দায়িত্ব।
আচরণে প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ
রেষারেষি থাকতেই পারে। যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক বিষয়েও আপনি সব সময় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাইবেন। এগুলো সবই স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই অন্য কোনো মানুষের সামনে নিজের প্রতিহিংসার প্রকাশ ঘটাবেন না। হিংস্র আচরণ করবেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। সত্যিকারের মানুষ হতে হলে আপনার অবশ্যই উত্তেজনার মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। কাউকে শারীরিক বা মানসিক আঘাত করবেন না। কারো কোনো ধরনের ক্ষতি করবেন না। এমনকি কেউ আপনার প্রতি অন্যায় করে থাকলেও আপনার কর্তব্য হলো সেই ব্যক্তির বিচারের ব্যাপারে দেশের আইনের সহায়তা নেওয়া। অন্য পক্ষ যে অন্যায় করেছে, আপনিও যদি সেই অন্যায় করেন, তাহলে কিন্তু তার সঙ্গে আপনার কোনো পার্থক্যই রইল না।
উসকানিমূলক বাক্যপ্রয়োগ
এমন কিছু বলবেন না, যা থেকে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। কখনোই কাউকে ছোট করে কথা বলবেন না। কোনো ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের সদস্যদের অসম্মান করে কোনো কথা বলবেন না। কারো পারিবারিক পেশাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবেন না। কাউকে হুমকি দেবেন না।
সাম্প্রদায়িক আচরণ
অবশ্যই সাম্প্রদায়িক আচরণ থেকে বিরত থাকবেন। বাংলাদেশের সংবিধানেই ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। অন্য কোনো সম্প্রদায়কে খাটো করে কোনো কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। এমন কাজ করবেন না, যাতে কোনো উপাসনালয় ও মানুষের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, অবমাননা হয়।
সম্পদ অধিগ্রহণ বা বিনাশ
অন্যের সম্পদ ‘নিজের’ বলে দাবি করবেন না বা নিয়ে নেবেন না। কাউকে তাঁর আবাসস্থল থেকে সরে যেতে বাধ্য করবেন না। রাষ্ট্রীয় সম্পদকেও কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন করে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারো সম্পদ নষ্ট করবেন না। অন্যের মালিকানাধীন প্রাণীর প্রতিও আপনাকে মমত্বপূর্ণ ও মানবিক আচরণ করতে হবে। প্রতিপক্ষের পোষা প্রানীর প্রতি নির্মম হবেন না। গাছ, ফসল নষ্ট করবেন না।
অন্যের অসুবিধার সৃষ্টি করবেন না
আপনার আনন্দ-উল্লাসে যাতে অন্যের অসুবিধা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আবাসিক এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত শব্দ করবেন না। উৎকট আওয়াজে অসুস্থ ব্যক্তির অসুবিধা হতে পারে। উদ্যাপনের ভঙ্গিটি যেন এমন না হয়, যাতে অন্যের মধ্যে ত্রাসের সৃষ্টি হয়।
লেখক: চিকিৎসক ও গণমাধ্যমকর্মী