শিশুদের অণ্ডকোষের সমস্যা

শিশুপ্রতীকী ছবি

যেকোনো নবজাতকের জন্মের আগেই তার অণ্ডকোষ থলিতে থাকার কথা। কিন্তু অনেক শিশু জন্মের পর দেখা যায় অণ্ডকোষ থলিতে নেই। মাঝেমধ্যে ওপরে উঠে আসে বা অণ্ডকোষ প্যাঁচ খেয়ে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়াও শিশুদের অণ্ডকোষে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শিশুদের অণ্ডকোষের যে সমস্যাগুলো দেখা যায় সেগুলো হলো:

পেটের ভেতর থেকে নিচে না নামা

অভিভাবকেরা প্রথমে বিষয়টি না–ও বুঝতে পারেন। শিশু একটু বড় হলে সমস্যাটি ধরা পড়ে। যদি আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়, তবে দেখা যায় কুঁচকিতে অণ্ডকোষ রয়ে গেছে, নিচে যথাস্থানে নামতে পারেনি। এক বছর বয়সের মধ্যে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নামিয়ে আনলে পরে আর সমস্যা হয় না।

অভিভাবকেরা প্রথমে বিষয়টি না–ও বুঝতে পারেন। শিশু একটু বড় হলে সমস্যাটি ধরা পড়ে।

প্যাঁচ খাওয়া

সাধারণত দুই বছরের পর প্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের হঠাৎ এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। অণ্ডকোষ লাল হয়ে ও ফুলে যেতে পারে, তীব্র ব্যথা হতে পারে। সেসব ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে যদি রক্ত চলাচল কম হয় বা না হয়, তবে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করাতে হবে।

ইনফেকশন

হঠাৎ অণ্ডকোষ ফুলে লাল হয়ে গেলে, ব্যথা হলে বুঝতে হবে ইনফেকশন হয়েছে। যদি অণ্ডকোষ উঁচু করে ধরলে ব্যথা কমে, তবে বুঝতে হবে এটি ইনফেকশন। সাধারণত প্রস্রাবে যাদের বারবার ইনফেকশন হয়, তাদের এমনটি হয়। যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগে রোগী সুস্থ হয়ে থাকে।

থলিতে আসে–যায়

এ ক্ষেত্রে শিশু ঘুমিয়ে থাকলে অণ্ডকোষ দেখা যায়। কিন্তু খেলাধুলা বা লাফালাফি করলে অনেক সময় খুঁজে পাওয়া যায় না। এতে অস্ত্রোপচার লাগে না। বড় হলে ঠিক হয়ে যায়।

টিউমার

জন্মের কিছুদিন পর হঠাৎ দুটি অণ্ডকোষের পাশে আরেকটি শক্ত চাকার মতো টিউমার দেখা দিতে পারে। সাধারণত ব্যথা থাকে না, তবে ইনফেকশন হলে ব্যথা হতে পারে। আলট্রাসনোগ্রাম ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ শনাক্ত করে শিশু সার্জারি বা শিশু অনকোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

 

অন্য জায়গায় থাকা

এ ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ অন্য কোথাও, যেমন লিঙ্গের গোড়া, তলপেট, মলদ্বারের পাশে, রানের মাংসে বা বিপরীত অণ্ডকোষে থাকতে পারে। এ সমস্যায় অস্ত্রোপচার করে স্বাভাবিক অবস্থানে আনতে হবে।

 

ওপরে থাকা

হরমোনজনিত সমস্যায় এমনটি হতে পারে। প্রয়োজনে অবশ্যই শিশু সার্জারি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

খুঁজে না পাওয়া

জন্মের পর কিছুদিন থাকা সত্ত্বেও পরে অণ্ডকোষ গায়েব হয়ে যায়। অটো অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে বিপরীত অণ্ডকোষ এটি গায়েব করে ফেলতে পারে।

পানি জমা

অনেক সময় অণ্ডকোষের সঙ্গে পানি জমে থাকতে দেখা যায়, ফুলে থাকে। হার্নিয়া বা হাইড্রোসিল থাকলে এমন হয়। হার্নিয়া হলে অবশ্যই অস্ত্রোপচার লাগবে।

  • ডা. মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, নবজাতক, শিশুকিশোর সার্জারি বিশেষজ্ঞ, রেজিস্ট্রার, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা