শীত প্রায় আসন্ন। হিমেল হাওয়া বইছে। কুয়াশাও পড়ছে। এ সময়ে বেড়ে যায় হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগীর শ্বাসকষ্টের আকস্মিক টান। বিশেষ করে হঠাৎ ঠান্ডা আবহাওয়ায়, ধুলাবালু লাগলে, ঘর ঝাড়-মোছ করলে বা ফুলের রেণুর সংস্পর্শে রোগীর হাঁপানির টান ওঠে। ভাইরাস সংক্রমণ, সর্দিকাশিও এ সমস্যার জন্য দায়ী। এ ছাড়া ধূমপানও একটি কারণ সমস্যা বাড়ার।
শীতের শুরুতে বায়ুদূষণ অনেক বেড়ে যায়, যা শ্বাসকষ্ট বাড়ার অন্যতম কারণ। এমনিতেই যখন তাপমাত্রা কমতে শুরু করে, তখন বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। তাই কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
যাঁরা ভোরে বা সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হন, তাঁরা এ সময়টা পরিহার করুন। কারণ, এ সময় পরিবেশের তাপমাত্রায় তারতম্য হয় বেশি, শিশির পড়ে, কুয়াশা হয়। তাই ঠান্ডা লাগার আশঙ্কাও বেশি। একটু বেলা করে হাঁটুন বা ঘরে ব্যায়াম করুন।
পরিবেশে ধুলাবালু ও উড়ন্ত ফুলের রেণু, কণা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। বাইরে গেলে মাস্ক পরুন, যা আপনাকে উড়ন্ত ধুলাবালু থেকে রেহাই দেবে।
যথোপযুক্ত গরম কাপড় ব্যবহার করুন। গরম কাপড় এখনই বাক্স থেকে বের করে লন্ড্রিতে দিয়ে দেওয়া ভালো। কারণ, এক বছর বাক্সে বা আলমারিতে রাখা উলের কাপড় পরিষ্কার না করে পরলে অ্যালার্জি বাড়বে, বাড়বে শ্বাসকষ্ট। গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়েও নিতে পারেন বা ভালো করে আয়রন করে নিতে হবে, যাতে মাইট না থাকে।
ঘরে কার্পেট রাখবেন না। কাপের্টের মধ্যে মাইট বাড়ে। আর ঘর ঝাড়ু না দিয়ে মুছে ফেলবেন।
যাঁদের হাঁপানি আছে, তাঁরা ঝুল ঝাড়বেন না। এগুলো থেকে সাবধান হতে হবে।
ঠান্ডায় বা সকালে বাইরে বের হওয়ার সময় একটা মাফলার বা কানঢাকা টুপি পরে নিতে পারেন, যা ঠান্ডা হাওয়া থেকে বাঁচাবে। পায়ে মোজা পরুন।
অনেকের আবার উলের কাপড়েও হাঁপানি বাড়ে, তাঁরা মোটা সুতি কাপড়, সুতি মোজা পরুন। বাড়িতে খালি পায়ে হাঁটবেন না।
শীতের শুরুতে হাঁপানি রোগীদের ফ্লু আর নিউমোনিয়ার টিকা নিয়ে নেওয়া উচিত।
বাড়িতে ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধের মজুত আছে কি না, মেয়াদ আছে কি না, দেখে নিন।
কেউ কেউ বাড়িতে নেবুলাইজার ব্যবহার করেন, তাঁরাও পরখ করে নিন যন্ত্র কাজ করছে কি না বা প্রয়োজনীয় তরল আছে কি না।
শীতের শুরুতেই একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও ইনহেলারের ডোজ ঠিক করে নিন।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ