২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মাথাঘোরা যখন রোগ

কারও কারও হঠাৎ মাথা ঘুরে ওঠে। আবার ঠিক হয়ে যায়। অনেকেই গুরুত্ব দেন না। অথবা বুঝতেই পারেন না, এটা একটা রোগ বা রোগের লক্ষণ। কেউ ভাবেন, হয়তো রক্তচাপ বেড়েছে। ডায়াবেটিস থাকলে সঙ্গে সঙ্গে চিনি খেয়ে নেন কেউ কেউ। এ রকম হঠাৎ মাথাঘোরার কারণে কেউ পড়ে যেতে পারেন, দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই কোনোভাবে একে অবহেলা করা যাবে না।

কেন মাথা ঘোরে

  • অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অন্তঃকর্ণের রক্তনালির অস্বাভাবিকতা, অন্তঃকর্ণের প্রদাহ, মেনিয়ারস রোগ, অস্বাভাবিক দৃষ্টিগত সমস্যায় মাথা ঘুরতে পারে।

  • অনেক উঁচুতে উঠে নিচের দিকে তাকালে এবং চলন্ত ট্রেন বা গাড়ি থেকে প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালেও কারও কারও মাথা ঘোরে।

  • অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, মাথার পেছন দিকে ও ঘাড়ের রক্তনালিতে বাধা বা রক্ত সরবরাহে ত্রুটি, মস্তিষ্কের নিচের দিকে টিউমার, মাল্টিপল সোরসিস রোগ, আঘাতের কারণে পেট্রাস হাড়ের ক্ষতি ইত্যাদি কারণেও মাথা ঘুরতে পারে।

  • ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলেও মাথা ঘুরতে পারে। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে বা রক্তচাপ ওঠানামা করলেও মাথাঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। মাথাঘোরার পাশাপাশি কানের ভেতর শোঁ শোঁ বা দপ দপ শব্দ হতে পারে। কখনো কখনো মাথা বা ঘাড়ের অবস্থান পরিবর্তন করলে সমস্যা বাড়ে ও কমে।

যা করবেন

  • হঠাৎ মাথা ঘুরে উঠলে কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে বা বসে পড়া ভালো।

  • চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। চোখ বন্ধ করে স্বাভাবিক গতিতে শ্বাসপ্রশ্বাস নিন।

  • মাথাঘোরা অব্যাহত থাকলে সাহায্যের জন্য কাউকে ডাকুন।

  • গাড়ি চালাতে থাকলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে থামিয়ে দিন।

যেভাবে প্রতিরোধ

  • যাঁদের বিনাইন পজিশনাল ভার্টিগো সমস্যা আছে, হঠাৎ ঘাড় বা মাথার অবস্থান পরিবর্তন করলে তাঁদের মাথাঘোরা শুরু হয়। এ জন্য রাতে চিত হয়ে একটু উঁচু বালিশে মাথা দিয়ে শোবেন। হঠাৎ মাথা বা ঘাড় উঁচুতে টান টান করবেন না, মাথা ঝাঁকাবেন না।

  • যেসব কাজ করার সময় মাথা ঘুরে ওঠে, তা থেকে বিরত থাকুন। অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করবেন না। দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।

  • দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকা যাবে না। বেশি বেশি তরল পান করাও দরকার।

  • কোনো ওষুধে এমন সমস্যা হলে চিকিৎসককে জানাতে হবে।

চিকিৎসা

  • একজন নিউরোলজি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

  • স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। বেশি লবণ, মসলা, তেলযুক্ত খাবার, জাংক ফুড খাওয়া যাবে না। মৌসুমি শাকসবজি ও ফল খান। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। সিগারেট ও মদ্যপান বাদ দিতে হবে।

  • lডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হার্টের অসুখ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

  • অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, ঢাকা