আপেল সিডার ভিনেগার খাচ্ছেন? আগে জেনে রাখুন ভালো–মন্দ

খাবারের উপকরণ হিসেবে আপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার অনেক কাল আগে থেকেই। তবে ইদানীং অনেকে ওজন কমানো কিংবা এমনিতেও আপেল সিডার ভিনেগার খাচ্ছেন। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে এর ভালো–মন্দ উভয় দিক। জেনে রাখুন বিস্তারিত।

ইদানীং অনেকে ওজন কমানো কিংবা এমনিতেও আপেল সিডার ভিনেগার খাচ্ছেনছবি: পেক্সেলস

আপেল সিডার ভিনেগার কী

আপেল সিডার ভিনেগার তৈরি করা হয় আপেল, ইস্ট ও চিনি দিয়ে। এতে অ্যাসিটিক অ্যাসিড থাকে ৫ শতাংশ। একে দুর্বল অ্যাসিড হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও ঘনত্ব বাড়লে তা শক্তিশালী অ্যাসিড বা অম্ল হিসেবে কাজ করতে পারে। যদিও আপেল সিডার ভিনেগারের খুব বেশি উপকারের তেমন কোনো প্রমাণ মেলে না, তারপরও একে অক্ষতিকারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আপেল সিডার ভিনেগারের রকমফের

আপেল সিডার ভিনেগারের দুই রকমের—

১. পরিশোধিত, পাস্তুরিত ও ফিল্টার করা (মুদিদোকান বা সুপার শপে খাবারের উপকরণ হিসেবে যেসব পাওয়া যায়)

২. অপরিশোধিত, একটু ঘন, কাঁচামাল (র ম্যাটেরিয়াল) ধরনের (যা খাওয়া বাদে অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা হয়)

উপকারিতা

১. ওজন কমায়: বলা হয়, আপেল সিডার ভিনেগার মানবদেহের মেটাবলিজম প্রক্রিয়া গতিময় করে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

২. কোলেস্টেরল কমায়: ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ানো এবং খারাপ কোলেস্টেরল, বিশেষত ট্রাইগ্লিসারাইড কমানোয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

৩. রক্তের চিনি কমায়: কয়েকটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, আপেল সিডার ভিনেগার রক্তের সুগার বা চিনি কমাতে ব্যবহার করা চলে, তবে তা ডায়াবেটিসের ওষুধের বিকল্প নয়।

৪. খাবারের জীবাণু ধ্বংস করে: বাজারের কাঁচা সবজি আপেল সিডার ভিনেগার–মিশ্রিত পানিতে কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট রেখে দিলে জীবাণু মারা যায়।

এ ছাড়া পেটের চর্বি, উচ্চ রক্তচাপ ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে; চুলের যত্নে, রক্তের খনিজ উপাদানের ভারসাম্য রক্ষায় এই ভিনেগার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হলেও গবেষণায় খুব বেশি প্রমাণ মেলেনি।

আরও পড়ুন

অপকারিতা

  • অ্যাসিডিক বা অম্লীয় হওয়াতে দাঁতের অ্যানামেল ক্ষয় করে।

  • বুক জ্বালাপোড়া, পেটফাঁপা, ক্ষুধামান্দ্য বাড়ায়, সারাক্ষণ বমি বমি ভাবও হতে পারে।

  • হজমশক্তি কমিয়ে দেয়।

  • হাড়ক্ষয় রোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

  • গলা জ্বলাপোড়া হতে পারে, যা শিশু ও নারীদের ক্ষেত্রে বেশি হয়।

  • ত্বকের সংক্রমণ পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহৃত হলে চামড়া পুড়ে যেতে পারে।

কারা একেবারেই খাবেন না

যাঁরা বিভিন্ন ওষুধ, যেমন ডাইউরেটিক্স, লাক্সেটিভস, ডিগোক্সিন বা ইনসুলিন নেন, তাঁদের আপেল সিডার ভিনেগার থেকে দূরে থাকা উচিত। কারণ, এই ভিনেগার এসব ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হতে পারে বিপজ্জনক।

আপেল সিডার ভিনেগার নিয়ে যেসব গবেষণা হয়েছে, তার বেশির ভাগই ‘অ্যানিমাল ট্রায়াল’। মানবদেহের ওপর বিশদ গবেষণা সেভাবে হয়নি। আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ, এই ভিনেগার অতিরিক্ত গ্রহণের পলে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনাও ঘটে।

সূত্র: ওয়েবএমডি, হেলথলাইন

ডা. হিমেল বিশ্বাস, ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরোলজি বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা

আরও পড়ুন