২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এই সময় শিশুদের মাম্পস

এ সময় শিশুদের, বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়াদের হাসপাতালের বহির্বিভাগ বা চিকিৎসকের চেম্বারে আনা হচ্ছে তাদের চোয়াল ও গলার সংযোগস্থানে ব্যথার সঙ্গে ফুলে যাওয়ার সমস্যা নিয়ে। কখনো এক পাশে, কখনো দুই পাশে। বাচ্চা খেতে পারছে না, বমি করছে, সঙ্গে হালকা জ্বরও।

মাথাসহ সারা শরীরে ব্যথা, দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গও থাকে। এ সমস্যা মূলত মাম্পস ভাইরাস দ্বারা শিশুদের প্যারোটিড গ্রন্থি আক্রান্ত হওয়ার কারণে হয়ে থাকে, যাকে মাম্পস প্যারটাইটিস বলা হয়।

রোগটি বেশ ছোঁয়াচে। যেখানে জনসমাগম বেশি, সেখানে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। বেশির ভাগ শিশু বিদ্যালয় থেকেই মাম্পস নিয়ে আসে। আক্রান্ত ব্যক্তির লালা বা হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়ায়। সাধারণত পাঁচ থেকে নয় বছরের বাচ্চারা বেশি সংক্রমিত হয়। ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সবার আগে শ্বাসনালি সংক্রমণ করে। সেখান থেকে লালাগ্রন্থি এবং অবশেষে রক্তের ভেতর ও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

কোনো সুস্থ শিশু এ ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে আসার দুই সপ্তাহের ভেতর চোয়াল ফোলা, জ্বর, ক্ষুধামান্দ্যসহ এ রোগের অন্যান্য উপসর্গ দেখা যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে ভালোও হয়ে যায়। অনেকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও রোগের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না।

সংক্রমণের মেয়াদ

আক্রান্ত শিশুর রোগের উপসর্গ শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগ থেকে শুরু করে উপসর্গ–পরবর্তী সাত থেকে আট দিন এ ভাইরাস অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে।

চিকিৎসা

  • তেমন কোনো চিকিৎসার দরকার পড়ে না। নিত্যদিনের পরিচর্যা, খাওয়াদাওয়া, গোসল, মুখগহ্বর পরিষ্কার রাখা, বিশ্রাম, তরল খাবার একটু বেশি দেওয়া এবং ব্যথা বা জ্বর কমাতে প্যারাসিটামলই যথেষ্ট।

  • চোয়ালের ফোলা জায়গায় কাপড় গরম করে সেঁক দিলে একটু আরাম লাগতে পারে।

  • মনে রাখতে হবে জ্বর বা ব্যথা কমানোর জন্য অ্যাসপিরিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অযথা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার দরকার নেই।

জটিলতা

কিছু কিছু জটিলতা হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে শ্রবণশক্তি হারানো থেকে শুরু করে অণ্ডকোষে সংক্রমণ এবং পরবর্তী সময় তাদের সন্তান উৎপাদনসংক্রান্ত জটিলতা, প্যানক্রিয়াসে সংক্রমণ ও তীব্র পেটে ব্যথা, মেনিনজাইটিস বা মস্তিষ্কে সংক্রমণ অন্যতম। এ ছাড়া ব্রেস্ট, ওভারি, স্নায়ুতন্ত্রের অন্য অংশ, এমনকি কিডনিতেও সংক্রমণ হতে পারে।

প্রতিরোধ

শিশুদের এমএমআর টিকা দেওয়াই এ রোগ প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। আক্রান্ত শিশুকে অন্য সুস্থ শিশুদের থেকে আলাদা রাখতে হবে। স্কুলপড়ুয়াদের স্কুলে বা কোচিংয়ে যাওয়াও বন্ধ রাখতে হবে।

  • অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ