ছত্রাকও ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে, প্রতিরোধে যা করবেন
আমরা অনেকেই জানি, ব্যাকটেরিয়া ওষুধপ্রতিরোধী বা ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হয়ে দিন দিন আরও শক্তিশালী বা প্রাণসংহারী হয়ে উঠছে। কিন্তু ইদানীং ছত্রাক বা ফাঙ্গাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও এমনটা হতে দেখা যাচ্ছে। ফাঙ্গাসগুলো ফাঙ্গাল ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হলো, রোগীরা না জেনেবুঝেই দোকান বা হকারদের কাছ থেকে বিভিন্ন মলম কিনে ব্যবহার করছে। এসব মলমে ক্ষতিকর স্টেরয়েড বা স্টেরয়েডের সঙ্গে অ্যান্টিফাঙ্গাল মিলিয়ে একধরনের ওষুধ তৈরি হয়। এসব মলম অবাধে ব্যবহার এবং সঠিক মাত্রায় নিয়মিত ওষুধ না খাওয়ার জন্য ফাঙ্গাসগুলো আস্তে আস্তে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ওষুধ ব্যবহার করেও আর নিরাময় হচ্ছে না।
তা ছাড়া অ্যান্টিফাঙ্গাল মুখে খাওয়ার ওষুধগুলো সঠিক সময় পর্যন্ত না খেলে আবার সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কারণ, কয়েক দিন ওষুধ খেয়ে একটু ভালো হয়ে গেলেও আসলে ফাঙ্গাস কিন্তু শরীরের ভেতরে রয়ে যায়। তাই কয়েক দিন ওষুধ খেয়ে বা মলম লাগিয়ে ভালো হয়ে গেলেই বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। তাহলে আবারও রোগের লক্ষণ দেখা যাবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পুরো কোর্স সঠিক নিয়মে শেষ করতে হবে। কমপক্ষে এক মাস কখনো কখনো ৬ মাস থেকে ১ বছরও লেগে যেতে পারে। সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি সঠিক চিকিৎসায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন পুরোপুরি ভালো হওয়া সম্ভব। তাই অবশ্যই সব সময় একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স সিস্টেমিক ফাঙ্গাল ইনফেকশনের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। পাশাপাশি মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ এবং ইনজেকশন বেশ ব্যয়বহুল। সব ওষুধ আমাদের দেশে পাওয়াও যায় না। আবার উন্নত বিশ্বের তুলনায় ফাঙ্গাল ডায়াগনসিসেও আমরা অনেক পিছিয়ে। তাই রোগীদের ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে বিশেষ করে সিস্টেমিক ইনফেকশনের ক্ষেত্রে সঠিক রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা দুটোই অনিশ্চিত, কষ্টসাধ্য এবং ব্যয়বহুল।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ