পেয়ারাপাতা চিবানোর উপকারিতা জানেন?

পেয়ারা সহজলভ্য ও সুস্বাদু ফল। এর দামও থাকে নাগালের মধ্যে। এতে পাবেন প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’, সঙ্গে প্রচুর আয়রন। এসব তথ্য কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু এটা কি জানেন, এই গাছের পাতা কতটা উপকারী?

উপমহাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, পেয়ারাপাতা বিভিন্ন রোগে খুব কার্যকর ওষুধছবি: পেক্সেলস

উপমহাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, পেয়ারাপাতা বিভিন্ন রোগে খুব কার্যকর ওষুধ। এর আছে বহুবিধ ব্যবহার। বলা হয়, পেয়ারাপাতা খারাপ কোলেস্টেরল কমানো থেকে শুরু করে ওজন কমানো, এমনকি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও দারুণ কার্যকর। এসব সুবিধা পেতে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন পেয়ারাপাতা চিবোতে হবে। অথবা খেতে হবে পেয়ারাপাতার চা। তবেই মিলবে সুফল।

হজমে সাহায্যকারী

হজম ও গ্যাসের সমস্যায় পেয়ারাপাতা উপকারী। পেয়ারাপাতা আমাদের পাচনতন্ত্রের ক্ষতিকর অণুজীবের সঙ্গে লড়াই করে। ফলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়াসহ খাবারের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগবালাইয়ের ঝুঁকি কমায়। শুধু তা-ই নয়, পেয়ারাপাতার চা ডিটক্সিফায়ার বা শুদ্ধিকারক হিসেবে কাজ করে পেটে জমে থাকা গ্যাস বের করে দেয়।

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ

আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, পেয়ারাপাতার কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও খুব উপকারী। এই পাতা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। ফলে যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত পেয়ারাপাতা চিবালে উপকার পেতে পারেন।

আরও পড়ুন

ওজন কমানো

পেয়ারাপাতা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষুধার অনুভূতি কমায়। ফলে তা প্রায়ই হালকা নাশতা ও অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। এ কারণে পেয়ারাপাতার চা ওজন কমানোয় হতে পারে আপনার মিত্র।

শরীর শুদ্ধিকারক

পেয়ারাপাতা শরীর শুদ্ধিকারক বা ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকারক পদার্থগুলো বের করে দিতে যকৃতকে আরাম দেয়। পেয়ারাপাতা কুয়ারসেটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েডের মতো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। এসব উপাদান যকৃতের জন্য ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যাল নিষ্ক্রিয় করে। শুধু তা-ই নয়, এই পাতা শরীরের চর্বিও ভাঙতে কার্যকর।

আরও পড়ুন

হৃৎস্বাস্থ্য ভালো রাখে

পেয়ারাপাতা নানা পুষ্টি ও বায়ো–অ্যাকটিভ (উদ্ভিদ ও কিছু খাবারে বিদ্যমান অতিসামান্য পরিমাণ রাসায়নিক) উপাদানসমৃদ্ধ বলে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শরীরে রক্তসঞ্চালন ও কার্ডিওভাসকুলার কার্যক্রমে রাখে ইতিবাচক ভূমিকা। পেয়ারাপাতায় ফ্লাভোনয়েড থাকায় তা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল কমায়।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়

পেয়ারাপাতাকে প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বর্ধনকারী বলা হয়। এটি ব্রঙ্কাইটিস, দাঁতব্যথা, গলা বসে যাওয়া, অ্যালার্জি, ক্ষত, এমনকি ক্ষীণদৃষ্টিসহ নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই পাতা শরীরের ভেতরের ক্ষতিকর কোষ দূর করতে এবং এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। মোটকথা, পেয়ারাপাতা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে সুরক্ষা দেয়।

সূত্র: ওয়েবএমডি

আরও পড়ুন