গোড়ালির ব্যথা কেন হয়
সাধারণ আঘাতে যেমন গোড়ালিতে ব্যথা হয়, তেমনি অন্য কোনো রোগের কারণেও ব্যথা হতে পারে। অতিরিক্ত ওজনও গোড়ালি ব্যথার একটি কারণ। দীর্ঘ সময় ধরে শক্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকার কারণেও গোড়ালিতে ব্যথা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জীবাণুর সংক্রমণও ব্যথার জন্য দায়ী। গোড়ালিতে ব্যথা হলে হাঁটাচলাই মুশকিল হয়ে পড়তে পারে। তাই সমস্যাটি একেবারেই ‘সাধারণ’ নয়।
আঘাত পেলে কী করবেন
পা পিছলে অনেকের গোড়ালি মচকে যায়। আরও নানাভাবেই আঘাত লাগতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে গোড়ালিতে যে কেবল ব্যথা হয়, তা নয়; গোড়ালি ফুলে যায়, কালশিটেও পড়তে পারে। এমন হলে আক্রান্ত স্থানে ২০ মিনিট বরফ চেপে ধরে রাখুন। স্থিতিস্থাপক ব্যান্ডেজ (ক্রেপ ব্যান্ডেজ) বেঁধে রেখে গোড়ালিকে একটু উঁচুতে তুলে বিশ্রাম দিন। এ জন্য গোড়ালির নিচে দুটি বালিশ রাখতে পারেন। আঘাত লেগে গোড়ালি মচকে যাওয়া ছাড়াও পায়ের পাতার হাড়ে চিড় ধরতে পারে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া যা বোঝার উপায় নেই। হাড় ভেঙেও থাকতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পায়ের পাতার সমস্যা হলে
আমাদের পায়ের পাতা স্বাভাবিকভাবেই বাঁকা। অর্থাৎ পাতার নিচের পুরো অংশ মাটি স্পর্শ করে না, মাঝের অংশ একটু উঁচু থাকে। অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস কিংবা বয়সের কারণে এই স্বাভাবিকতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনটা হলেও গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে ‘আর্চ সাপোর্ট’ ব্যবহার করে পায়ের পাতার আকৃতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হয়। নির্দিষ্ট ধরনের ব্যায়াম এবং ফিজিওথেরাপিও কাজে দেয়।
নানা ধরনের রোগে
বাত, গেঁটেবাত, লুপাস, গোড়ালির প্রদাহ—এমন নানা সমস্যায় গোড়ালিতে ব্যথা হয়ে থাকে। গোড়ালির ব্যথা ছাড়া অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিছু ক্ষেত্রে সারা জীবন চিকিৎসা চালিয়ে যেতেও হতে পারে।
প্রতিরোধে কী করবেন
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জীবনযাপনের কিছু দিক খেয়াল রাখলে গোড়ালির ব্যথা এড়ানো সম্ভব।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। দীর্ঘ সময় একইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হলেও নিয়মিত বিরতিতে গোড়ালিকে বিশ্রাম দিতে চেষ্টা করুন।
অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম এড়িয়ে চলাই ভালো। আর এগুলো করতে চাইলেও ধীরে ধীরে শরীরকে অভ্যস্ত করে নিতে হবে।
সাবধানে চলাফেরা করুন। চলন্ত যানবাহন থেকে নামবেন না। যাত্রী ওঠানামার নির্দিষ্ট স্থানে চালককে থামতে অনুরোধ করুন।
ঘরে বা বাইরে কোথাও এমন কিছু ফেলে রাখা উচিত নয়, যাতে কারও পা পিছলে যেতে পারে। কোথাও তরল জিনিস পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই মুছে ফেলুন। আর আবর্জনা ফেলুন নির্দিষ্ট স্থানে। পড়ে থাকা তরল, কোনো কিছুর গুঁড়া বা পাউডার, কলার খোসা, পলিথিন—যেকোনো কিছুই হতে পারে যে কারও জন্য একটি দুর্বিষহ দুর্ঘটনার কারণ।