কোন বয়সে প্রতিদিন কত মিনিট হাঁটবেন

স্বাস্থ্য ভালো রাখার অন্যতম সহজ পদ্ধতি হাঁটা। নিয়মিত রুটিন মেনে হাঁটলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবেই। নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমে, মানসিকভাবে সুস্থও থাকা যায়। তবে কোন বয়সে প্রতিদিন কত মিনিট হাঁটলে সবচেয়ে উপকার? চলুন, জানার চেষ্টা করি।

নিয়মমতো প্রতিদিন হাঁটার চেষ্টা করুন, এতে সামগ্রিকভাবে উন্নত হবে আপনার জীবনযাত্রার মানছবি: প্রথম আলো

১৮-৩০ বছর: ৩০-৬০ মিনিট

অল্প বয়সে সাধারণত মানুষের পেশিতে শক্তি থাকে বেশি। ১৮–৩০ বছর বয়সী কোনো সুস্থ মানুষের ৩০ বা ৬০ মিনিট হাঁটা তেমন কঠিন কাজও নয়। এ সময় হাঁটার গতিও থাকে ভালো। জীবনের এই বয়সে নিয়ম মেনে ৩০–৬০ মিনিট হাঁটলে ওজন যেমন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তেমনি কমে স্ট্রেস বা মানসিক ধকল। তাই আপনার বয়স ১৮-৩০–এর মধ্যে হলে নিয়ম করে প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা হাঁটার চেষ্টা করুন।

৩১-৫০ বছর: ৩০-৪৫ মিনিট

আপনার বয়স ৩০ বছরের বেশি হলে হাঁটার সময় একটু কমাতে পারেন। কারণ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পেশির শক্তি কমে যায়। তাই ১ ঘণ্টার পরিবর্তে ৪৫ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। মনে রাখবেন, দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করতে এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে প্রতিদিন কমপক্ষে আধঘণ্টা হাঁটতেই হবে। আয়োজন করে হাঁটার সময় না পেলে এবং সুযোগ থাকলে কর্মস্থলে নিয়মিত হেঁটেই যেতে পারেন। এটাও সম্ভব না হলে প্রতিদিন অন্তত লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে ওঠানামা করুন।

আরও পড়ুন

৫১-৬০ বছর: ৩০-৪০ মিনিট

মধ্যবয়সীদের জন্য সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট হাঁটাই যথেষ্ট। জীবনের মাঝামাঝি সময়ে শরীরে নানা ধরনের প্রাকৃতিক পরিবর্তন দেখা যায়। পেশির শক্তি কমে যায় এবং বিপাক প্রক্রিয়া হয়ে পড়ে দুর্বল। নিয়মিত অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের হাড় থাকবে সুস্থ। তাই চেষ্টা করুন জীবনের এই বয়সেও প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট হাঁটতে।

৬৬-৭৫ বছর: ২০-৩০ মিনিট

বেশির ভাগ মানুষ জীবনের এই বয়সে এসে নাতি-নাতনিদের নিয়ে সময় কাটান। তবে এই বয়সেও কেউ ধীরে ধীরে ২০-৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকবে। বাঁচা যাবে নানা রোগের সংক্রমণ থেকেও। অনেকে বৃদ্ধ বয়সে হাঁটাচলা করতে পারেন না। কারণ, তাঁরা অনেক আগে থেকেই হাঁটার অভ্যাস বাদ দিয়েছেন। অনেকে আবার হাঁটার অভ্যাস না থাকার কারণে মাথা ঘুরে পড়ে যান। নিয়মিত একটু একটু হাঁটলে এই সমস্যাও দূর হবে। এই বয়সে ভুলে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দেয়। একটু হাঁটাচলা করলে এমন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। টানা ৩০ মিনিট হাঁটতে না পারলে ১৫ মিনিট করে দুই বারে হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। অথবা বন্ধুদের সঙ্গে মিলেও গল্প করতে করতে প্রতিদিন একটু হাঁটতে পারেন। এতে বার্ধক্যজনিত সমস্যা অনেকটাই কমবে।

আরও পড়ুন

৭৫ থেকে বেশি ও অশীতিপর: ১৫-২০ মিনিট

ব্যতিক্রম বাদে যাঁদের বয়স ৭৫ বছরের বেশি কিংবা অশীতিপর, তাঁদের পক্ষে হাঁটাচলা করা একটু মুশকিলই বটে। তবে ধীরে ধীরে ২০ মিনিট হাঁটলে অনেক উপকার পাবেন। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য হাঁটা বেশ উপকারী। তবে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হাঁটতে হবে সমতল রাস্তায়। এমন জুতা বাছাই করতে হবে, যেন হাঁটতে সুবিধা হয়। যাঁদের মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সমস্যা আছে, তাঁরা ওয়াকার কিংবা এ–জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন। হাঁটাচলা করলে মেজাজ খিটখিটে থাকে না। সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।

শেষ কথা

এই নিয়মই শেষ কথা নয়। বয়স ও শরীরের ফিটনেসের ওপর ভিত্তি করে আপনার হাঁটার সময় পরিবর্তন করতে হতে পারে। তা ছাড়া প্রত্যেকের নিজস্ব কোনো লক্ষ্যও থাকতে পারে। সে হিসাবে প্রতিদিন অনুসারে হাঁটার চেষ্টা করুন। তবে এক দিন হেঁটে চার দিন না হাঁটলে চলবে না। নিয়মমতো প্রতিদিন হাঁটার চেষ্টা করুন। এতে সামগ্রিকভাবে উন্নত হবে আপনার জীবনযাত্রার মান।

সূত্র: ওয়েব এমডি

আরও পড়ুন