এ সময় সর্দি–কাশি থেকে বাঁচতে কী করবেন
শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম—সব ঋতুতেই এখন সর্দির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় সর্দি লাগলে কানে ব্যথা করে এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। ফলে অনেক সমস্যা, যেমন সাইনোসাইটিস হতে পারে। শীত ও বসন্তে কাশির প্রকোপও বেড়ে যায়। ফলে বুকে ও গলায় ব্যথা দেখা দেয়। অতিরিক্ত কাশিতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটে। অনেক সময় কাশির সঙ্গে কফ ও রক্তও বের হতে পারে।
সংক্রমণ ছড়ায় কীভাবে
সাধারণ সর্দি–কাশি মূলত ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে হয়। সাধারণত রাইনোভাইরাস ও অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসগুলোর সংক্রমণ থেকে হয় এটি। সংক্রমণ মূলত যেসব উপায়ে ছড়ায় তা হলো, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়ানো ভাইরাসে, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে, দূষিত বায়ুতে, দূষিত জায়গায় হাত দিয়ে পরে সেই হাত নাক বা মুখে লাগালে। ভাইরাসের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও হতে পারে।
লক্ষণ
নাক দিয়ে পানি পড়া।
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
হাঁচি, বিশেষ করে সকালে।
গলাব্যথা বা গলা শুকিয়ে যাওয়া।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া বা পানি ঝরা।
ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা।
চিকিৎসা ও প্রতিকার
সাধারণ ঠান্ডা ও কাশি সাধারণত ৭-১০ দিনে ভালো হয়ে যায়। তবে আরাম পেতে কিছু ঘরোয়া ওষুধের চিকিৎসা করা যেতে পারে, যেমন:
ঘরোয়া প্রতিকার: গরম পানি ও লবণ দিয়ে গার্গল গলায় ব্যথা ও জীবাণুর সংক্রমণ কমায়। মধু ও আদার রস কাশির আরামদায়ক প্রতিকার। তুলসী ও আদা–চা সর্দি–কাশিতে কার্যকর।
ওষুধের ব্যবহার: জ্বর ও ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল, নাক বন্ধ ও সর্দি কমাতে অ্যান্টিহিস্টামিন, শুকনা ও কফযুক্ত কাশির ধরন অনুযায়ী কাশির সিরাপ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সি ও জিঙ্ক এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
সতর্কতা ও কখন চিকিৎসক দেখাবেন
জ্বর ১০২ ডিগ্রি বা এর বেশি হলে ও তিন দিনের বেশি থাকলে।
শ্বাসকষ্ট বা বুকব্যথা অনুভব করলে।
ঘন হলুদ বা সবুজ কফ বের হলে।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী কাশিতে।
যদি উপসর্গ ৭-১০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, শ্বাসকষ্ট বা উচ্চমাত্রায় জ্বর দেখা দেয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রতিরোধ
হাত পরিষ্কার রাখুন, সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন।
আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে দূরে থাকুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাবার খান।
হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন।
অ্যালার্জিজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকুন।
ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা