দেশে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং এ ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। আগামী চার বছরে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ কেন গুরুত্বপূর্ণ
ডায়াবেটিস যেন মহামারি আকার ধারণ করছে। এর জটিলতায় হার্টের রক্তনালি আক্রান্ত হয়। কিডনি বিকল হতে পারে। ডায়াবেটিসের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি ছয় গুণ বাড়ে। এ ছাড়া হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে তিন গুণ, অন্ধত্বের ঝুঁকি ২৫ গুণ, কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি পাঁচ গুণ ও পা কেটে ফেলে দেওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ২০ গুণ।
● এটা সারা জীবনের রোগ।
● এ রোগের জটিলতা পা থেকে মাথা পর্যন্ত যেকোনো স্থানকে আক্রান্ত করতে পারে।
● বেশির ভাগ রোগী অর্থাৎ প্রায় ৬১ শতাংশের বেশি থাকেন উপসর্গ ছাড়াই।
● এ রোগ নীরব ঘাতক। নিয়ন্ত্রণে না রাখলে হার্ট, কিডনি, স্নায়ু, চোখ—সবকিছুর ক্ষতি হতে থাকে।
● ডায়াবেটিস এখন শিশু ও তরুণদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে।
● প্রসূতির ডায়াবেটিস হলে বাচ্চা ও মায়ের নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়।
● দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে এটি একটি ক্রমবর্ধমান রোগে রূপ নিচ্ছে।
কীভাবে সুরক্ষা
শুরু থেকেই ডায়াবেটিস শনাক্ত করে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখলে রোগী স্বাভাবিক মানুষের মতোই চলাফেরা ও জীবনযাপন করতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীর সুগার নিয়ন্ত্রণ খুব কঠিন কিছু নয়। শুধু চাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞা। ডায়াবেটিস ও এর জটিলতা থেকে সুরক্ষার মূলমন্ত্র:
● ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সুশৃঙ্খল জীবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
● ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যের ভূমিকা অনেক। সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মমাফিক খাওয়া জরুরি।
● যদি শৃঙ্খলা, খাবার, ব্যায়াম এবং ওজন কমানোর পরও যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে রোগীর ওষুধের প্রয়োজন হয়। কার জন্য কোন ওষুধ প্রযোজ্য, তা চিকিৎসকের ওপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
● উপযুক্ত শিক্ষা পেলে দ্রুত ডায়াবেটিস শনাক্ত ও সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব।
● রোগীকে ভালোভাবে বুঝতে হবে, এটি সারা জীবনের রোগ, কখনো একবারে নির্মূল হওয়ার নয়। তাই এর নিয়ন্ত্রণও সারা জীবন ধরে করে যেতে হবে। সারা জীবন ফলোআপে থাকতে হবে।
● শুধু চিকিৎসকের পরামর্শে প্রেসক্রিপশনের ওষুধ খেলে চলবে না। সঙ্গে মনিটরিং অর্থাৎ পরীক্ষা–নিরীক্ষা করাতে হবে।
●ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের অন্যতম চাবিকাঠি। কারণ, ব্যায়াম করলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে।
অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল মান্নান, বিভাগীয় প্রধান, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল