শিশুর জন্য দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার খুবই উপকারী ও দরকারি। তাদের বেড়ে ওঠার জন্য দুধে থাকা প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের বিকল্প নেই। তবে কোনো কোনো শিশুর দুধে অ্যালার্জি থাকে কিংবা দুধে থাকা ল্যাকটোজে অসহিষ্ণুতা থাকে। সাধারণত ল্যাকটোজ নামের বিশেষ শর্করা উপাদানটি আমাদের শরীরের ল্যাকটেজ এনজাইমের সাহায্যে ভেঙে গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজে পরিণত হয়।
ফলে আমাদের পাকস্থলী সহজে একে শোষণ করতে পারে। শরীরে যদি ল্যাকটেজ এনজাইমের ঘাটতি হয়, কেবল তখনই ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা দেখা দেয়। ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকলে শিশুকে যদি দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার খাওয়ানো হয় তাহলে বমি, তলপেটে ব্যথা, পানির মতো পাতলা পায়খানা, বদহজম, গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দুধে অ্যালার্জি বা ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকলে দুধ, দই, পনির, দুধ দিয়ে তৈরি খাবার বর্জন করতে হবে। তবে অবশ্যই এর পরিবর্তে শিশুকে এমন খাবার দিতে হবে, যা শিশুর দৈনন্দিন প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের চাহিদা পূরণ করে তাকে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।
ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ
শিশুকে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ, দই, পনির দিতে পারেন। এতে শিশুর প্রোটিন, ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হবে।
কাঠবাদামের দুধ
দুধের বিকল্প হিসেবে কাঠবাদামের দুধ (অ্যামন্ড মিল্ক) দিতে পারেন। এতে শিশু পর্যাপ্ত প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের পাশাপাশি ওমেগা–৩ পাবে, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করবে।
কাঠবাদামের দুধ ছাড়াও হ্যাজেল নাটের দুধও খাওয়ানো যাবে।
সয়া দুধ
সয়া দুধে থাকা প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামও শিশুর জন্য উপকারী। রাইস মিল্ক বা ওটস মিল্কও দিতে পারেন।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছ প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। এতে ওমেগা–৩ পাওয়া যায়। শিশুকে সপ্তাহে দুই দিন সামুদ্রিক মাছ দিতে পারেন।
গাঢ় সবুজ শাকসবজি
গাঢ় সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালংশাক, ব্রুকলি, শালগমে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে। শিশুর খাবারে প্রতিদিন দুই বেলা তাজা শাকসবজি রাখুন।
সিডস বা বীজ
শিমের বীজ, তরমুজের বীজ, মিষ্টিকুমড়ার বীজ ভেজে বিকেলের নাশতায় দিতে পারেন। এসব বীজে প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ওমেগা–৩–সহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
বাদাম
শিশুকে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বাদাম খেতে দিন। বাদামও শিশুর চাহিদা পূরণে সহায়ক।
এ ছাড়া শিশুকে নিয়মিত মাছ, মাংস, ডিম ও ঘন ডাল খেতে দিতে হবে।
উম্মে সালমা, পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ডিকেএমসি হাসপাতাল