চিনি-আসক্তি কমাবেন কীভাবে
হ্যাঁ, শিরোনামে ঠিকই পড়েছেন। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া একধরনের আসক্তিই বটে। হেলথলাইনের ‘ইজ সুগার অ্যান অ্যাডিকটিভ ড্রাগ’ শিরোনামের আর্টিকেল জানাচ্ছে, চিনি, বিশেষ করে বাড়তি চিনি আমাদের শরীরে ওপিওয়িড ও ডোপামিন নিঃসরণ করে। আর এই দুইয়ের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ রয়েছে আসক্তির। আর এ কারণেই আপনি অনেক দিন ধরে পরিকল্পনা করছেন যে চা বা কফিতে আর চিনি খাবেন না, চকলেট খাবেন না, কিন্তু পারছেন না।
চিনি কী?
গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ, ডেক্সট্রোজ, ম্যালটোজ—এগুলোই সাধারণত চিনি। প্রাকৃতিকভাবেই চাল, সবজি, ফল, দুধ—এ রকম নানা খাবারে থাকে। আবার প্রসেস করে হোয়াইট সুগার, ব্রাউন সুগার, মোলাসেস, মধু, ম্যাপল সিরাপ, কর্ন সুইটনার—এভাবেও পাওয়া যায়। চিনি মিষ্টি স্বাদের জন্য দায়ী।
কেন কমাবেন চিনির আসক্তি?
চিনি কেবল শরীরে শক্তি যোগায়। যেটা অন্য যেকোনো শর্করাজাতীয় খাবারই করে। এ ছাড়া চিনির কোনো পুষ্টিগুণ নেই। আমাদের শরীরে বাড়তি চিনির (অ্যাডেড সুগার) প্রয়োজনও নেই। সাধারণভাবে, আমাদের যে পরিমাণ ক্যালরির প্রয়োজন, এর মাত্র ১০ ভাগ চিনি থেকে এলেই যথেষ্ট। আর সেটা স্বাভাবিক খাবার থেকেই চলে আসে। তারপরও চাইলে প্রতিদিন পাঁচ চা–চামচ চিনি চায়ে মিশিয়ে খেতেই পারেন। যদি আপনি চিনির তৈরি অন্য কোনো খাবার যেমন শরবত, জুস, কোমলপানীয়, মিষ্টি, দই, আচার, পায়েস, বিস্কুট, চকলেট বা চিনির তৈরি অন্য কোনো খাবার না খান।
কীভাবে কমাবেন চিনি খাওয়া
পেট ভরে সকালে স্বাস্থ্যকর নাশতা করুন। যখন সকালের খাবার থেকে আমাদের শরীর পর্যাপ্ত ক্যালরি আর পুষ্টি পেয়ে যাবে, তখন চিনির প্রতি অতটা আগ্রহ থাকবে না।
‘ক্যালরি’ পান করবেন না। এর অর্থ হলো বাড়তি চিনিযুক্ত কোনো পানীয়, সফট ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, জুস পান করবেন না।
পানি, দুধ, লেবু পানি, জিরা পানি বা সর্বোচ্চ ডাবের পানি পান করুন।
টাটকা শাকসবজি, ফল, মাছ, মুরগি, লাল আটা, শস্যদানা, বীজ, ডাল, টক দই, চিজ ইত্যাদি খাবেন।
সাধারণত আমরা বিকেলের নাশতায় বাড়তি চিনি খেয়ে ফেলি। বিকেলের নাস্তায় ভাজা বাদাম, ফল, ডালের বড়া, সবজির পকোড়া, স্যুপ, চিনি ছাড়া চা বা কফি—এগুলো খান।
সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাশতা, রাতের খাবার—এই সমস্ত খাবার হোক বাসায় তৈরি। তাহলে আপনি চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। বাইরের খাবার পারতপক্ষে খাবেন না।
প্রতি ৩০ গ্রাম (১ কাপ) সিরিয়ালে যেন সর্বোচ্চ ৬ গ্রাম চিনি থাকে ও অন্তত ৪ গ্রাম ফাইবার থাকে, বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
নতুন কোনো রেসিপি বাসায় ট্রাই করতে চাইলে এমন কিছু করুন, যেটাতে চিনি কম থাকে।
বাসায় কেক, বিস্কুট, পুডিং, পায়েস—এগুলো বানালে সেখানে কম করে চিনি ব্যবহার করুন। যেটুকু না করলেই না, কেবল সেটুকুই।
প্যাকেটজাত খাবার কেনার সময় সেটি কী কী উপাদানে তৈরি, পড়ার অভ্যাস করুন।
চিনি ছাড়া চা–কফি খাওয়ার অভ্যাস করুন।