ঈদে কীভাবে স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন

পবিত্র ঈদে খাবারের বৈচিত্র্য ও পরিমাণ দুটিই বেশি থাকে। কিন্তু এক মাস রোজা রেখে ঈদের দিন খাওয়ার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে।

৭০ কেজি ওজনের পূর্ণবয়স্ক সুস্থ একজন ব্যক্তি সারা দিনে ২৫০-৩০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে অন্য প্রোটিনের উৎস থাকলে মাংসের পরিমাণ কমাতে হবে। সারা দিনে একটি ডিম ও দুই-তিন কাপ মাঝারি ঘন ডাল খেলে প্রায় ২০০ গ্রাম মাংস খাওয়া যাবে। তা–ও একবারে না খেয়ে দিনে দু–তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতি বেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।

চাহিদার চেয়ে বেশি মাছ, মাংস বা প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, পাইলস, ফিসার, ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদির মতো শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিডনি রোগীদের প্রথম শ্রেণির প্রোটিন ৩০-৫০ শতাংশ কমাতে হবে। রেডমিটে সোডিয়ামের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকে। তাই গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া ভালো। বীজজাতীয় খাবার যেমন ডাল, ডালের তৈরি খাবার, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটি ইত্যাদি কম খেতে হবে। লবণ কম খাবেন এবং লবণাক্ত খাবার বন্ধ করতে হবে।

হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বেশি, এমন ব্যক্তির গরু ও খাসির মাংস কম খাওয়া উচিত। চামড়া ছাড়া মুরগি বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। গরু বা খাসির মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিয়ে ঝোল ছাড়া পরিমিত মাংস খাওয়া যাবে। ঘি, ডালডা, বাটার দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

● ডায়াবেটিক রোগীরা মিষ্টি বা ডেজার্ট এড়িয়ে চলুন। ঝাল বা নোনতা খাবার বেছে নিন। বেশির ভাগ ডায়াবেটিক ব্যক্তিরই উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল বেশি থাকে। ফলে ভাজাপোড়া তৈলাক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। 

● ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে হাঁস, গরু, খাসির মাংস বেশি খাবেন না। কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, ভুঁড়ি খাওয়া যাবে না। 

● ফ্যাটি লিভার থাকলে তেল–চর্বিজাতীয় খাবার কম খাবেন। মাছ–মাংস ঝোল বাদ দিয়ে খেতে হবে। ভাত, রুটি বা অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট মেপে খেতে হবে।

● আইবিএসের রোগীরা দুধ ও দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। ল্যাকটোজ ফ্রি দুধে রান্না হলে খাওয়া যাবে।

কীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো যায়

● গরু-খাসির মাংসের সাদা চর্বি ফেলে দিতে হবে।

● মাছ–মাংসের ঝোল কম খেতে হবে।

● রান্নায় শর্ষের তেল বা সূর্যমুখী তেলের ব্যবহার। 

● মাংস রাতে নয়, সকালে ও দুপুরে খেতে পারেন।

● মাংস ছোট ছোট টুকরা করে কেটে রান্না করা ভালো। 

● রান্নার চেয়ে গ্রিল বা কাবাব খাওয়া যেতে পারে।

● মাংস রান্নার সময় টমেটোর মতো পটাশিয়ামসমৃদ্ধ সবজি যোগ করুন। খাওয়ার সময় এক টুকরা লেবু নিন। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

মো. ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল