ডিমের বদলে কী খাবেন?

ডিমের বিকল্প হিসেবে এই খাবারগুলো খেতে পারেন
ছবি : গ্রাফিকস

ডিমের বাজার এখন বেশ চড়া। অনেক পরিবারেই রোজ তাই সবার খাওয়ার জন্য ডিমের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ডিমের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই আমিষ। শরীরের গঠন আর রোজকার ক্ষয়পূরণের জন্য এই আমিষ খুব জরুরি। ডিমে আরও থাকে কোলিন, যা শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্যও ভীষণ দরকার। শরীরের জন্য উপকারী কোলেস্টেরল, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও ডিম থেকে পাওয়া যায়। ডিমের বাজারদর যখন সাধ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, তখন অনেক পরিবারেই হয়তো ডিমের পুষ্টির ঘাটতি হচ্ছে। তাই দামের কারণে ডিম খাওয়া যাঁদের সম্ভব হচ্ছে না, তাঁরা এখন কিছু বিকল্প খাবার খেতে পারেন। ডিমের দাম না কমা পর্যন্ত যা আপনার পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির জোগান দেবে।

আরও পড়ুন
নানা রকম ডাল আমিষের ভালো উৎস
ছবি : প্রথম আলো

ঢাকার গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা বেগম বলছিলেন, এই সময় নানা রকম ডাল ও বীজ প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখুন। এগুলো আমিষের ভালো উৎস। বিশেষত মসুর ডাল। এটি থেকে আমিষ পাবেন অনেক। কাঁঠালের বীজ, শিমের বীজ কিংবা ঘন ডাল খেতে পারেন। ব্রকলি, মটরশুঁটি ও মিষ্টিকুমড়াতেও আমিষ পাবেন। ডাবলি ও ছোলায়ও বেশ কিছুটা আমিষ আছে, যদিও এগুলোতে শর্করার পরিমাণই বেশি। অঙ্কুরিত ছোলাতে ভিটামিন মিলবে। মাছের মধ্যে যেগুলোর দাম কম, সেগুলোতেও কিন্তু আমিষ রয়েছে পর্যাপ্ত (যেমন তেলাপিয়া, পাঙাশ প্রভৃতি)। মনে রাখবেন, উদ্ভিজ্জ উৎসের চেয়ে প্রাণিজ উৎস (যেমন দুধ, ডিম, মাছ, মাংস) থেকে পাওয়া আমিষ গুণগত মানে অনেক এগিয়ে। মাশরুমও কিন্তু আমিষের দারুণ উৎস। খাবারে মাশরুম যোগ করুন। স্বাদেও ভিন্নতা আসবে।

আরও পড়ুন
ডিমের বিকল্প হিসেবে সয়াবিনের বড়ি খেতে পারেন
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে সয়াবিনে ভালো আমিষ থাকে। সয়া বড়ি, সয়া দুধ, সয়া বিস্কুট—নানা কিছুই খেতে পারেন। টফুও সয়াবিন থেকেই তৈরি হয়, যা বেশ সুস্বাদু। টফু সবজির সঙ্গে খেতে পারেন, শিশুদের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো করে ভেজেও দিতে পারেন। তবে অতিমাত্রায় সয়াপণ্য না খাওয়াই ভালো। সারা দিনে বড়রা সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম ও শিশুরা সর্বোচ্চ ৫০ গ্রাম সয়াপণ্য খেতে পারবে।

উদ্ভিজ্জ উৎসের যেকোনো একটি উপকরণের আমিষে মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে না। তাই প্রতিদিন কয়েক রকম উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আমিষ গ্রহণ করলে অনেক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডই পেয়ে যাবেন। যেমন খিচুড়ি বা হালিমের মতো খাবার এই সময়ে খেতে পারেন। কেবল চাল আর ডালের কিংবা কেবল নানা রকম ডালের মিশেলেও পাবেন নানা রকম অ্যামিনো অ্যাসিড। মিশ্র বাদাম খাওয়াও ভালো। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় চীনাবাদাম যোগ করতে পারেন।

বাড়িতে শিশু, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী মা থাকলে তাঁদের জন্য একটি ডিম দিয়ে এমন তরকারী রেঁধে দিতে পারেন
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

তবে একটা বিষয় বিবেচনায় রাখবেন, তা হলো অন্য উপাদানগুলো বিকল্প উৎস থেকে পেলেও উৎকৃষ্ট আমিষ আর কোলিনের জন্য ডিমের বিকল্প পাওয়া একটু মুশকিল। তাই পরিবারে যদি শিশু, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদায়ী মা থাকেন, তাঁদের জন্য অন্তত ডিমের ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। প্রয়োজনে পরিবারের অন্যান্য খরচ কিছুটা কমিয়ে হলেও এই মানুষগুলোর জন্য রোজ ডিমের জোগান দিতে চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুন