যেভাবে ওজন কমাবে আনারস দিয়ে তৈরি পানীয়
আনারস দারুণ পুষ্টিকর ফল। আনারস খাওয়া যায় নানাভাবেই। পানীয় তৈরির কাজেও আনারস ব্যবহার করেন অনেকে। আনারস দিয়ে তৈরি পানীয় খেয়ে পেটের মেদ কমানো বা ওজন কমানো যায়, এমন কথাও বলা হয়ে থাকে। আদতেই কি এই পানীয় খেলে ওজন কমে? বিজ্ঞান কী বলে?
আনারস দিয়ে তৈরি পানীয় খেলেই যে দেহের মেদ কেটে যাবে, কিংবা সরাসরি এই পানীয়ের প্রভাবেই যে আপনার ওজন কমে যাবে, বিষয়টা কিন্তু একেবারেই তেমন নয়। তবে ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে আনারসের তৈরি পানীয়। সেটির জন্য অবশ্য আপনাকে জানতে হবে, কীভাবে পানীয়টি তৈরি করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বলছিলেন টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান।
আনারসের কোন উপাদান ওজন কমাতে সহায়ক?
আনারসে রয়েছে ভিটামিন সি। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খনিজ উপাদানও থাকে এই ফলে। আনারসে আরও থাকে পর্যাপ্ত আঁশ। আঁশ এমন একটি উপাদান, যা হজম হতে বেশ সময় লাগে। অর্থাৎ, আঁশসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর আপনার সহজে ক্ষুধা পাবে না।
তার মানে, আপনি খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন সহজে। উচ্চ ক্যালরিযুক্ত অন্যান্য পানীয় বা নাশতার বদলে আনারস দিয়ে তৈরি পানীয় খেলে আপনার ক্যালরি গ্রহণ কম হবে। আবার, রসনার তৃপ্তিও হবে। তবে বুঝতেই পারছেন, আনারসের আঁশ ছেঁকে পানীয় তৈরি করলে আপনি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক উপাদানটিই পাবেন না। আর অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যেকোনো স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি করতে হলে তাতে চিনি দেওয়া যাবে না।
চিনি যোগ করলেই ক্যালরির মাত্রা বাড়বে। তাতে ওজন বাড়ার আশঙ্কা যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি। বাড়তি লবণও স্বাস্থ্যকর নয়।
তাহলে কি আনারসের পুরোটাই নেবেন
ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি আনারসের টুকরা ব্লেন্ড করে পানীয় তৈরি করতে পারেন। তবে আনারস কাটার সময় অবশ্যই এর মাঝখানের শক্ত শিরদাঁড়ার মতো অংশটি ফেলে দেবেন।
নইলে এই অংশের জন্য পানীয়টি বিস্বাদ হয়ে যাবে; আর অতিরিক্ত শক্ত আঁশের জন্যও পানীয়টি খেতে মুশকিলে পড়বেন। এ ছাড়া কালো চোখের মতো যে অংশ থাকে, সেটিও ফেলে দিন। এই কালো অংশও অতিরিক্ত শক্ত, তাই এই অংশ রেখে দিলেও পানীয়টি খাওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।
তা ছাড়া পানীয়ের রংটাও ভালো দেখাবে না। তাহলে হয়তো পানীয় গ্রহণের আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলবেন আপনি।
আরও যা
আনারসের পানীয় খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ত্বক এবং চুল সতেজ থাকে। আনারসের পানীয়ে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে সহায়তা করে। আর পর্যাপ্ত আঁশ গ্রহণ করলে রক্তের খারাপ চর্বির পরিমাণও থাকে নিয়ন্ত্রণে। আনারসের পানীয়ে পুদিনাপাতা কিংবা টেলে নেওয়া জিরা যোগ করলে তাতে আসবে ভিন্ন স্বাদ।