দীর্ঘমেয়াদি রোগে কী কী টিকা নেবেন
বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগে প্রতিবছর আক্রান্ত হন লাখ লাখ মানুষ। অবস্থা বুঝে কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়, কেউ কেউ মারাও যান। নিম্ন আর্থসামাজিক অবস্থা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বয়স্ক মানুষের সংখা বৃদ্ধির কারণে দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক রোগের হার বাংলাদেশসহ নিম্ন আয়ের দেশগুলোয় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। বিশ্বে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ একাধিক দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক রোগে ভুগছেন। পৃথিবীতে প্রতি পাঁচটি রোগজনিত মৃত্যুর মধ্যে তিনটিই হৃদ্রোগ, ক্যানসার, ফুসফুসের রোগ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটে থাকে। এসব রোগীর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে সহজেই তাঁরা বিভিন্ন সংক্রামক রোগেও আক্রান্ত হয়ে পড়েন। অথচ বেশির ভাগ সংক্রামক রোগই এখন টিকার (ভ্যাকসিন) মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য।
বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীদের কিছু বিশেষ টিকা নেওয়া উচিত।
কারণ—
ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ এক সপ্তাহের মধ্যে আরেকটি হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় ছয় গুণ।
অ্যাজমা ও সিওপিডি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসনালি এমনিতেই ফুলে যায়। মিউকাস জমার দরুন শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হয়। বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ এই অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে দেয় এবং নিউমোনিয়াসহ ফুসফুসের অন্যান্য জটিল রোগ তৈরি করতে পারে।
ডায়াবেটিক রোগীদের ফ্লু ও হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে সংক্রমণের হার খুব বেশি। ডায়াবেটিসের রোগীদের ফ্লুজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার ৬ গুণ বেশি। ফ্লুজনিত জটিলতায় মৃত্যুর হার তিন গুণ বেশি। ফ্লু ভাইরাস ডায়াবেটিসকে বিপজ্জনক মাত্রায় বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ছাড়া নিউমোনিয়া, রক্তে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ও মেনিনজাইটিস হয়ে মৃত্যুর হারও ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি।
এইচআইভিতে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। ফলে বিভিন্ন প্রকার জীবনবিনাশী ছত্রাক, ভাইরাস ও পরজীবী দ্বারা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০২২ সালে এইচআইভির কারণে বিশ্বে ৬ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির মতে, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য যেসব টিকা নেয়া উচিত—
রোগের নাম
ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, অ্যাজমা, এইডস/এইচআইভি, লিভারের রোগ, কিডনির রোগ।
দীর্ঘমেয়াদি রোগের সাধারণ টিকা
ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, ডিপিটি (ডিপথেরিয়া, পারটুসিস, টিটেনাস), হেপাটাইটিস বি, কোভিড-১৯, এমএমআর জরায়ু টিকা (এইচপিভি) এবং বয়স ৫০–ঊর্ধ্ব হলে ঝোস্টার বা জলবসন্তের টিকা
রোগভেদে অতিরিক্ত টিকা
হেপাটাইটিস এ, মেনিনজাইটিস
ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন: এমডি গবেষক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা