গর্ভধারণের আগে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরি কেন
গর্ভধারণের আগে কারও অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকলে, গর্ভকালে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হতে পারে, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।
গর্ভধারণে দেরি হওয়া
অতিরিক্ত ওজনের কারণে নারীদের ওভুলেশনের প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে। এতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়। এটি মূলত হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ঘটে, যার ফলে ডিম্বাণুর পরিপক্বতা ও পরবর্তী গর্ভধারণের প্রক্রিয়া প্রভাবিত হয়।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
স্থূলতা গর্ভকালে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এতে শিশুর জন্মকালে অতিরিক্ত ওজন, জন্মগত ত্রুটি বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম দিতে হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ ও প্রি-একলাম্পশিয়া
স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপ বা প্রি-একলাম্পশিয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এটি মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, প্রসবকালে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভপাতের ঝুঁকি
অতিরিক্ত ওজনের কারণে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। এটি বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে বেশি দেখা যেতে পারে।
শিশুর বিকাশগত সমস্যা
অতিরিক্ত ওজনের কারণে শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সঠিকভাবে না–ও পাওয়া যেতে পারে। এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা যা হতে পারে
খাদ্যাভ্যাস
গর্ভধারণের পরিকল্পনা থাকলে আগেই সচেতন হোন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। বেশি করে শাকসবজি, ফল, পূর্ণ শস্য, স্বাস্থ্যকর প্রোটিন ও চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমাতে হবে।
শারীরিক ব্যায়াম
শারীরিক ব্যায়াম গর্ভধারণের আগে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হাঁটা, সাঁতার কাটা, যোগব্যায়াম ইত্যাদি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং গর্ভধারণে শরীরকে প্রস্তুত করে।
ডায়েট ও শারীরিক কার্যকলাপ গর্ভধারণের আগে পরিকল্পিত ডায়েট ও শারীরিক কার্যকলাপ শুরু করা উচিত। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মায়ের শরীরকে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে।
মনোসামাজিক সহায়তা
অতিরিক্ত ওজন কমানো মানসিক চাপ ও শারীরিক দিক থেকেও চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। এ জন্য মনোবিদ বা কাউন্সেলরের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ
গর্ভধারণের আগে বা গর্ভধারণের পরিকল্পনার সময় একজন গাইনোকোলজিস্ট বা প্রজনন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তাঁরা মায়ের শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করেন এবং গর্ভধারণের জন্য নিরাপদ পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন।
ডা. শারমিন আব্বাসি, বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ ও গাইনোকোলজিস্ট, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল