রমজানে কি ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে
ইনহেলার অনেক রোগ ও সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার মাধ্যম। বিভিন্ন শ্বাসজনিত রোগ, যেমন অ্যাজমা ও ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) এবং কাশির সমস্যায় ইনহেলারের প্রয়োজন হয়। এটি মুখ দিয়ে গ্রহণ করতে হয় বলে রোজার সময় অনেকে ইনহেলার নিতে চান না। আসলেই কি রোজার সময়ে ইনহেলার ব্যবহার করা নিষেধ?
ইনহেলার কী
ইনহেলার হচ্ছে শ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করার একটি ছোট যন্ত্র। এর মধ্যে সালবিউটামল বা সালমেটেরল বা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত থাকে, যাতে এটি গ্যাস হিসেবে মুখ দিয়ে গ্রহণ করা যায়। সেই ওষুধ মিশ্রিত গ্যাস আমাদের শ্বাসনালিতে প্রবেশের পর শ্বাসনালির সংকোচন প্রতিরোধ করে।
ইনহেলার নিলে কি রোজা ভেঙে যায়
ইনহেলার নিলে রোজা ভেঙে যায় কি না, এ ব্যাপারে মতবিরোধ ছিল। পরে বিশ্বের অনেক ইসলামিক পণ্ডিত একমত হয়েছেন যে কারও যদি শ্বাসজনিত দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা, যেমন অ্যাজমা ও সিওপিডি থাকে বা এমন কোনো সমস্যা থাকে, যেটাতে ইনহেলার নিতে হয়, তাহলে তার রোজা ভঙ্গ হবে না। বিষয়টি ইতিমধ্যে বিভিন্ন মেডিকেল জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে। যদি কেউ তাঁর রোজার অংশ হিসেবে সঠিকভাবে ওষুধ গ্রহণ না করেন, তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে, তখন রোজা রাখা আরও কঠিন হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা ইনহেলার খাদ্যের পরিপূরক নয়।
ব্যবহারের নিয়ম
বেশির ভাগ অ্যাজমা ও সিওপিডির ওষুধগুলো দিনে দুবার নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোগীরা সাহ্রি ও ইফতারের সময় ইনহেলার নেওয়ার সময়টাকে পুনর্বিন্যাস করে নিতে পারেন। আর সালবিউটামল–জাতীয় ইনহেলার যেগুলো উপসর্গ অনুযায়ী নিতে হয়, সেগুলোও রোজা রাখা অবস্থায় নিলে রোজা ভেঙে যাবে না।
যেহেতু ধর্মীয়ভাবে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তাই চিকিৎসার অংশ হিসেবে একজন চিকিৎসক যদি কাউকে ইনহেলার নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন, সেটা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই, গাফিলতিরও সুযোগ নেই।
ডা. সাইফ হোসেন খান: মেডিসিন–বিশেষজ্ঞ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি, ঢাকা।