সংক্রমণ ঠেকাতে কী কী করবেন
বাতাস, পানি বা খাবারের মাধ্যমে তো বটেই, অন্যের লালা, থুতু, কফ, সর্দি বা রক্তের মাধ্যমেও আমাদের দেহে জীবাণু প্রবেশ করে। এই ‘অন্য ব্যক্তি’ হতে পারেন কোনো পথচারী, কোনো বহুতল ভবনের বাসিন্দা, সহকর্মী, এমনকি খাবার প্রস্তুতকারী কিংবা পরিবেশনকারী ব্যক্তি। জীবাণুর সংক্রমণ প্রতিরোধে তাই সামাজিক পরিসরেও সচেতনতা প্রয়োজন।
পরিচ্ছন্নতা এবং খাদ্যাভ্যাস
নিয়মমাফিক হাত ধুতে হবে খাদ্য প্রস্তুত করার আগে (খাবার কাটাকুটির আগেও) এবং থালাবাসন ধোয়ার আগে (খাওয়ার আগে তো অবশ্যই)।
ফিতা কৃমি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে আধা সেদ্ধ মাংস ও কাবাবজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
অপরিষ্কার হাত চোখে দেবেন না।
হাত দিয়ে নাকের ময়লা পরিষ্কার করলে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
নখ বড় রাখবেন না।
চিরুনি, নেইল কাটার, ব্লেড ও রেজারের মতো ব্যক্তিগত ব্যবহারসামগ্রী একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করবেন না।
প্রতিবার খাওয়ার পর কুলকুচি করুন। দুই বেলা ব্রাশ করুন।
খালি পায়ে মাটিতে হাঁটবেন না। পায়ে কাদাপানি ছিটে গেলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন যত দ্রুত সম্ভব। ধুতে দেরি হলে প্রথমে মুছে ফেলুন।
হাত-পা ভেজা রাখবেন না।
মশা-মাছি এবং ইঁদুরও বয়ে আনে জীবাণু
খাবার ঢেকে রাখুন।
মশারি ব্যবহার করুন দিনে ও রাতে।
কালাজ্বরপ্রবণ এলাকায় অবশ্যই স্যান্ডফ্লাইয়ের কামড় থেকে বাঁচতে চেষ্টা করুন।
ঘরে ইঁদুর থাকলে তাড়ানোর ব্যবস্থা করুন। ফাঁদ বা ইঁদুরকলে ইঁদুরধরা কিংবা ইঁদুর মারার বিষ ব্যবহার করা যুক্তিসংগত নয়। ইঁদুর তাড়ানোর দারুণ উপায় হলো কয়েকটি বিড়াল পোষ্য করে নেওয়া।
টিকা নিন
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় টিকা দিন শিশুদের।
৬৫ পেরোনো ব্যক্তিদেরও নির্ধারিত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
করোনাভাইরাস এবং হেপাটাইটিস বি ভাইরাস–প্রতিরোধী টিকা সবার জন্যই জরুরি।
পশুর কামড় বা আঁচড় লাগলে অধিক ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ভালোভাবে জায়গাটুকু ধোয়ার পর জলাতঙ্কের টিকা নিয়ে নিন।
নিজের পোষা প্রাণীকে নিয়মমাফিক টিকা দিন।
সামাজিক পরিসরে
ব্যবহৃত টিস্যু, রুমাল বা মাস্ক যেখানে–সেখানে রাখবেন না।
কফ-থুতু ফেলা যাবে না যত্রতত্র।
টাকা বা বইয়ের পৃষ্ঠা ধরার আগে আঙুলে থুতু দেবেন না।
করোনাভাইরাস এবং অন্যান্য জীবাণু প্রতিরোধে মাস্ক পরুন।
কখনো কখনো বিক্রেতারা ফুঁ দিয়ে পলিব্যাগের মুখ খোলেন কিংবা ফুঁ দিয়ে কোনো কৌটার ওপর থেকে ধুলা সরান। এসব অভ্যাস পরিত্যাজ্য।
শিশুর খেলনা জীবাণুমুক্ত রাখুন, তা ছাড়া খেলনা মুখে দিলে তা জীবাণুমুক্ত না করে অন্যকে দেওয়াও উচিত নয়।
নবজাতক কিংবা অস্ত্রোপচার হয়েছে এমন রোগীর কাছে কম যাওয়াই ভালো। নবজাতককে স্পর্শ করার আগে হাত ধুয়ে নিন। নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ভিড় করবেন না।
কোনো সংক্রামক রোগের লক্ষণ দেখা দিলে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিজেকে একটি ঘরে আলাদা রাখুন।
রক্ত পরিসঞ্চালনের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা মেনে চলে, এমন প্রতিষ্ঠান বেছে নিন।
পথপ্রাণীকে (কুকুর-বিড়াল) জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করা উচিত।
জীবনসঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকুন। অবৈধ সম্পর্ক এইডস এবং যৌনরোগের কারণ।