তেঁতুলপানি খেলে কি ওজন কমে
তেঁতুলের চাটনি বেশ জনপ্রিয়। আবার মেদ কমানোর জন্য অনেকেই তেঁতুলপানি পান করেন। আবার অনেকেরই ধারণা, রক্তচাপ বেড়ে গেলে তা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে তেঁতুলপানি। আদতেই কি তেঁতুলপানির এত গুণ আছে?
তেঁতুলপানি একটি দারুণ মুখরোচক পানীয়। স্বাদবর্ধক হিসেবে তাই এটি গ্রহণ করা যেতে পারে। তেঁতুলপানি হজম সহায়কও বটে।
মেদ কমানো কিংবা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়ে তেঁতুলপানির কার্যকারিতা আছে কি না, তা সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ আব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
তেঁতুলপানি খেলে কি মেদ কেটে যায়
তেঁতুলপানি খেলে শরীরের বাড়তি মেদ কেটে যায়—এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তেঁতুলপানি গ্রহণের জন্য কারও ওজন কমে না। তারপরও অনেকেই বলতে পারেন, তেঁতুলপানি খেয়েই তার মেদ কমেছে।
আদতে তেঁতুলপানি গ্রহণের সঙ্গে জীবনযাত্রার অন্যান্য দিকের ইতিবাচক পরিবর্তন না আনা হলে তা কখনোই সম্ভব নয়। বাস্তবে শরীরের মেদ কমানোর কোনো শর্টকাট বা সহজ উপায় নেই। সূত্র একটাই। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ আর শরীরচর্চার মাধ্যমে সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন। তবে এ কথাও ঠিক, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরচর্চার অভ্যাস আমাদের জীবনের অন্যান্য অনেক কিছুর ওপরেই নির্ভর করে।
ধরা যাক, আপনি কোনো একটা বেলায় উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবারের পরিবর্তে তেঁতুলপানি খেলেন। তাহলে আপনার ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমে আসবে। এভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে একটি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে তেঁতুলপানি।
রক্তচাপ বেড়ে গেলে কি তেঁতুলপানি কাজে আসে
রক্তচাপ বেড়ে গেলে তেঁতুলপানি গ্রহণের পর অনেক রোগীই ভালো অনুভব করেন। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তেঁতুলপানি কারও রক্তচাপ কমাতে পারে না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য রক্তের জলীয় অংশ এবং লবণের যে ভারসাম্যের প্রয়োজন, তেঁতুলপানি দিয়ে তা কখনোই সম্ভব নয়। এমনকি গরম পানিতে তেঁতুল মেশালেও নয়। কেবল তেঁতুলপানির স্বাদের কারণে রোগী খানিকটা সতেজ অনুভব করেন।
তেঁতুলপানির মন্দ দিক
ওজন কমানো কিংবা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে তেঁতুলপানি যে কার্যকর নয়, তা তো জানলেন। এর কিছু উপকারিতা সম্পর্কেও জানলেন। সেই উপকার পেতে তেঁতুলপানি আপনি খেতেই পারেন। তবে আপনার আগে থেকে কোনো রোগ না থাকলেও তেঁতুলের সঙ্গে লবণ বা চিনি গ্রহণের বিষয়ে সচেতন থাকুন। আর উচ্চ রক্তচাপ, দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগ, হৃদ্রোগ এবং অন্যান্য কিছু রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য তো লবণ ও পানি গ্রহণের পরিমাণ সম্পর্কে আলাদাভাবে নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
এ ছাড়া তেঁতুলপানি এমনিতে হজম সহায়ক হলেও কারও যদি আগে থেকে অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে, তাতে কিন্তু তেঁতুল পানি খেলে তার সেই সমস্যা বাড়ার ঝুঁকি থাকে। আর মিষ্টি তেঁতুল দিয়ে পানীয় তৈরি করলে তা আপনার জন্য অতিরিক্ত ক্যালরির উৎস হয়ে দাঁড়াবে। ডায়াবেটিস থাকলে চিনি মেশানো কিংবা মিষ্টি স্বাদের যেকোনো পানীয় এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। চাটনি খেতে চাইলেও এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন।