গরমে ব্যায়াম বন্ধ, কিন্তু করাটাও জরুরি, কী করব?
এই গরমেও হাঁটা বা ব্যায়াম করা সম্ভব। তবে ঝুঁকিটাও মাথায় রাখতে হবে।
অত্যধিক গরমের কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার যে নিয়মগুলো মেনে চলা দরকার, তা মানাটাও কঠিন হয়ে পড়ছে। যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হার্টের অসুখে সব চিকিৎসকই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শারীরিক পরিশ্রম করার উপদেশ দেন। যেমন হাঁটা, জগিং বা নানা রকম ব্যায়াম। কিন্তু প্রচণ্ড গরমে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে গিয়ে অতিরিক্ত ঘামে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে বা অসুস্থ বোধ করতে পারেন। তাই প্রচণ্ড গরমে রোদ এড়িয়ে চলতে বলা হয়, অধিক পরিশ্রম থেকেও বিরত থাকতে বলেন চিকিৎসকেরা। এ যেন শাঁখের করাতের দশা! গরমে হাঁটলে বা ব্যায়াম করলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা, আবার না করলে রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ভয়।
হাঁটার সময় একেবারে খালি মাঠ বা রাস্তায় হাঁটার চাইতে পার্কে বা বাগানে হাঁটা ভালো। সেখানে গাছপালা বা ছায়া আছে। গরমের কারণে বাইরে সম্ভব না হলে ঘরে হাঁটা যায়। ট্রেডমিল মেশিন থাকলে সেখানেও হাঁটাহাঁটি করা সম্ভব। তবে একটা কথা জরুরি, হাঁটা বা ব্যায়ামের সময় শরীরে সমস্যা হলে সেই মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। খুব ঘাম হলে, প্রচণ্ড দুর্বল লাগলে, শরীরের কোনো স্থানে মাংসপেশির খিঁচুনি হলে, মাথাব্যথা বা শরীরে ব্যথা হলে, অথবা ঘাম একেবারে কমে গিয়ে শরীর খুব গরম হয়ে পড়লে, অজ্ঞান ভাব হলে সঙ্গে সঙ্গেই হাঁটা বন্ধ করে দিতে হবে। ছায়াযুক্ত জায়গায় গিয়ে জামাকাপড় ঢিলেঢালা করে পানি বা তরল খেতে হবে। মাথায়–মুখে পানি দেওয়া যেতে পারে। বেশি খারাপবোধ করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বা নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করা দরকার।
আসলে আমাদের দেশে শুধু নয়, পুরো পৃথিবীর আবহাওয়া ধীরে ধীরে উষ্ণ হচ্ছে। তাই বলে আমাদের প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় কাজ, যা কিনা আমাদের শরীর বা রোগনিয়ন্ত্রণের জন্য দরকারি, সেসব বন্ধ করা যাবে না। তবে সাবধানতা অবলম্বন করা হলে হাঁটা বা ব্যায়ামের মতো কাজগুলো এই গরমেও চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক। মেডিসিন বিভাগ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ